অনুমতি ছাড়াই লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার উত্তর চরবংশী ইউনিয়নের ২নং চরবংশী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দুই শিক্ষকের বিদেশ গমন।
প্রধান শিক্ষক মোস্তফা কামাল ও সহকারী শিক্ষক ইকরাম দেশে চিকিৎসার নাম করে কর্তৃপক্ষের কাছে ২ মাসের ছুটি নেয়। কিন্তু NOC না নিয়েই বিদেশে চাকুরির উদ্দেশ্য বিদেশ গমন করেছে বলে তথ্য পাওয়া যায়।
এদিকে অনুপস্থিত শিক্ষকের বিদেশ গমন সম্পর্কে জানতে চাইলে অপারগতা প্রকাশ করেন ওই বিদ্যালয়ের প্রভাবশালী শিক্ষক মাহমুদুর রহমান মুরাদ। স্থানীয় সূত্র জানায়, ঐ দু’জন শিক্ষক বিদেশে যাওয়ার ব্যাপারে মাহমুদুর রহমান মুরাদ প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে সহযোগিতা করেছেন।
এ দিকে নাম না বলা শর্তে বিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষক জানান, ১১ শিক্ষকের ৩ জনই ছুটিতে। সাবিনা নামের একজন মাতৃকালীন, মোস্তফা কামাল ও ইকরাম হোসেন চিকিৎসা ছুটিতে রয়েছেন। ৩ শিক্ষকের অনুপস্থিতিতে বিদ্যালয়ের ৪০৪ জন শিক্ষার্থীর পাঠ দানে উপস্থিত শিক্ষকদের উপর পড়েছে অতিরিক্ত মানসিক চাপ। ব্যাহত হচ্ছে প্রতিষ্ঠানটির প্রশাসনিক ও একাডেমিক কার্যক্রম।
ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মোঃ জহিরুল ইসলামের কাছে দুই শিক্ষকের বিদেশ গমন সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি মুঠোফোনে জানান, তারা ছুটিতে আছেন এতুটুকু জানি, দেশের বাহিরে আছেন কিনা তা জানা নেই।
এদিকে সহকারী শিক্ষক ইকরাম হোসেনের বাবা বলেন, আমার ছোট ছেলে ও মেয়ে নেদারল্যান্ডে থাকেন। ইকরাম তাদের কাছে চিকিৎসার জন্য গেছেন।
প্রধান শিক্ষক মোস্তফা কামালের স্ত্রী বলেন, আমার স্বামী বর্তমানে ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। পরে মোস্তফা কামালের ব্যবহৃত মোবাইল নাম্বারে কল দেওয়া হলেও তার ব্যবহৃত সিমটি বন্ধ পাওয়া যায়। মেডিকেলের কত নাম্বার বেডে চিকিৎসা নিচ্ছেন তাও জানেন না তার স্ত্রী। মোস্তাফা কামালের এক প্রতিবেশী বলেন, সে কয়েকদিন পূর্বে নেদারল্যান্ডে চাকুরির উদ্দেশ্য চলে গেছেন। এর আগেও মোস্তাফা কামাল ৩ মাস নেদারল্যান্ডে গিয়ে চাকুরী করে আবার দেশে এসে স্কুলের চাকুরী করেন।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ মঈনুল ইসলাম এবং চরবংশী ক্লাস্টার মোঃ টিপু সুলতান বলেন, ” সহকারী শিক্ষক ইকরাম এবং প্রধান শিক্ষক মোস্তফা কামাল তারা দুজন দেশের মধ্যে ৬০ কর্মদিবসের চিকিৎসা ছুটিতে রয়েছেন। তারা বিদেশে গেছে তা আপনাদের কাছেই জানতে পারলাম। তাদের বিদেশে যাওয়ার কোন অনুমতি নেই। প্রধান শিক্ষক মোস্তফা কামাল চাকুরির শুরুতেও অনুমতি ছাড়া তিন মাস অনুপস্থিত ছিলেন। অনুপস্থিত থাকায় তার উপর দুই বছরের ইনক্রিমেন্ট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সেই শাস্তি এখনো চলমান। এরই মধ্যে সে বিদেশে গিয়েছে সেটা আমাদের জানা নেই। বিষয়টি তদন্ত করে সত্যতা পাওয়া গেলে তাদের বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
দেশ যুগান্তর/আরজে