১৫ আগস্ট বাংলাদেশ দেশের স্বাধীনতা স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শাহাদত বার্ষিকী- জাতীয় শোক দিবস। ১৯৭৫ ইং পনেরোই আগস্ট কলন্কময় কালো রাতে ষড়যন্ত্রের কাছে বঙ্গবন্ধু কে সপরিবারে আমরা হারিয়েছিলাম-সৌভাগ্যক্রমে দেশের বাইরে থাকায় আমাদের প্রাণপ্রিয় নেত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা আপাকে আমাদের মাঝে ফিরে পেয়েছি ।
বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করতে জননেত্রী শেখ হাসিনা আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। বাঙালি জাতির শেষ ঠিকানা বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা – আমরা তাঁর সফল নেতৃত্বেই সকল ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে ঐক্যবদ্ধ রয়েছি। জাতির পিতার সাথে অন্যান্যের মধ্যে জৈষ্ঠ পুত্র, বীর মুক্তিযোদ্ধা ক্রীড়া সংগঠক শেখ কামাল শহীদ হন আর ১৯৪৯ ইং সালের ৫ আগস্ট শেখ কামাল জন্ম গ্রহণ করেন। বঙ্গবন্ধুর সুখে-দুখে যার সবচেয়ে বেশী অবদান ছিল- তিনি হলেন বঙমাতা শেখ ফজিলাতুননেসা মুজিব-বঙ্গবন্ধুর সাথে এ মহান মনষীকে হারিয়েছি।
১৯৩০ সালের ৮ আগস্ট টঙ্গীপাড়া ঐতিহ্য বাহী শেখ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছিলেন বঙমাতা শেখ ফজিলাতুননেসা। ১৫ আগস্ট শোককে- শক্তিতে পরিণত করার শপথ নিয়ে বঙ্গবন্ধুর প্রকৃত আদর্শের সৈনিকদের ত্যাগ- তিতিক্ষার বিনিময়ে জাতির জনকের কন্যা শেখ হাসিনা দেশ ও জাতিকে উন্নয়নে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। আর বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের ষড়যন্ত্রে জরিত মেজর জিয়ার স্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া একাধিক জন্মের দাবিদার শোকের দিনকে আনন্দের ভুয়া জন্ম দিন হিসেবে বেছে নিয়েছেন-আমরা ধিক্কার জানাই। বিএনপি-জামায়াতের নেতৃত্বাধীন শাসনামলে ২০০৪ সালে বঙ্গবন্ধু এভিনিউ আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যালয় প্রাঙ্গণে জননেত্রী শেখ হাসিনার জনসভায় আমাদের প্রিয় নেত্রী সহ জাতীয় নেতৃবৃন্দকে হত্যার উদ্দেশ্যে গ্রেনেড হামলা পরিচালনা করেছিলেন তৎকালীন সরকারের পরিকল্পনায়। মহান সৃষ্টিকর্তার কৃপায় গুরুত্বর আহত অবস্থায় আমাদের প্রিয় নেত্রী শেখ হাসিনা বেঁচে গেলেও নারী জাগরণের অগ্রদূত- আওয়ামী লীগ নেত্রী বেগম আইভি রহমান সহ আরো অনেক নেতা কর্মীকে হারিয়েছি। গ্রেনেড হামলায় জাতীয় পর্যায়ের অনেক নেতা সহ কয়েক শতাধিক নেতাকর্মী গুরুত্বর ভাবে আহত হয়ে আজও কষ্টে দিনাতিপাত করছে।
গ্রেনেডের আঘাত নিয়ে জননেতা আব্দুর রাজ্জাক, সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, এডভোকেট সাহারা খাতুন, ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের প্রথম নির্বাচিত মেয়র মোহাম্মদ হানিফ সহ আমরা অনেক কে হারিয়েছি। এই হামলায় আহত হয়ে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে ২৪ আগস্ট সিএমএইচে শেষ বিদায় নিয়েছিলেন বেগম আইভি রহমান। বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে অনুষ্ঠিত জনসভার ট্রাক মঞ্চে জননেত্রী হাসিনার পাশে অবস্থানকারী অন্যান্য জাতীয় নেতৃবৃন্দের মধ্যে জাতীয় নেতা পরবর্তীতে মহামান্য রাষ্ট্রপতি শ্রদ্ধেয় নেতা আলহাজ্ব জিল্লুর রহমান সাহেব ও গ্রেনেড হামলা থেকে রক্ষা পেয়েছিলেন। ট্রাক মঞ্চে ধরে অবস্থান করে আল্লাহর রহমতে আমি গ্রেনেডের স্পীন্টার থেকে রক্ষা পেয়েছি। কিন্তু পরক্ষণে জননেত্রী হাসিনাকে গাড়িতে ওঠানো প্রাক্কালে পুলিশের বেপরোয়া গুলি-বিষাক্ত টিয়ার শেলে আক্রান্ত হয়ে রক্তাক্ত নিহত-আহতদের মধ্যে পড়ে গিয়েছিলাম। শোক কে শক্তিতে পরিণত করা এবং বিএনপি জামায়াত জোট সরকারের দুঃশাসন বিরুদ্ধে জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আন্দোলন চলাকালীন ২০০৬ সালের ৩০ আগস্ট মহান আল্লাহর পর আমাদের সবচেয়ে বড় ঠিকানা বাবাকে হারিয়েছি। আগস্ট আমাদের জন্য শোকের মাস। এর মাঝেই ২০০২ ইং সালের ৩১ আগস্ট দুনিয়াতে আমার দ্বিতীয় পুত্র উৎস’ আগমনে আনন্দ পেয়েছিলাম। জন্ম সুত্রে আওয়ামী লীগ পরিবারের একজন সদস্য হিসেবে মহান আল্লাহর রহমতে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শের অনুসারী আর বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রতি আস্হাশীল হয়ে কাজ করে যাবো ইনশাল্লাহ।
লেখক:
এমএ করিম
সাবেক সহ সম্পাদক
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ,কেন্দ্রীয় উপ কমিটি।
দেশ যুগান্তর/আরজে