হবিগঞ্জ শহরের বাণিজ্যিক এলাকার দি নিউ ওরিয়েন্টেল ফার্মেসীর কাছে ওষুধের মানি রিসিপ্ট চাওয়ায় চোর অপবাদ দিয়ে এক কলেজছাত্রকে পিটুনি দেয়া হয়েছে। তারপর ‘চোর চোর’ বলে গণধোলাই দেয়ার জন্য রাস্তায় থাকা মানুষকে প্রলুব্ধ করেছেন ফার্মেসীটির মালিক স্বপন মোদক।
বুধবার (৮ সেপ্টেম্বর) রাত ১১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। স্থানীয়রা জানান, কয়েকজন এগিয়ে এসে প্রকৃত কারণ জানতে চাওয়ায় অল্পের জন্য গণধোলাই থেকে প্রাণে রক্ষা পায় কলেজছাত্র সমির।
আলিফ সোবহান কলেজের অনার্স ২য় বর্ষের ছাত্র সমিরের বাড়ি সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলায়। বর্তমানে সে হবিগঞ্জ শহরের নোয়াহাটিতে এলাকায় বাস করছে।
সমির অভিযোগ করে জানায়, তার ফুফাত ভাইর জন্য ওষুধ কিনতে দি ওরিয়েন্টেল ফার্মেসীতে যায়। ওষুধের মূল্য ধরা হয় ২ হাজার ২শ টাকা। তখন সমির মানি রিসিপ্ট চাইলে তা দিতে অস্বীকৃতি জানায় শ্যামল নামে ফার্মেসীর কর্মচারী।
কিছুক্ষণ পর ফার্মেসীর মালিক স্বপন মোদককে ঘটনা সম্পর্কে জানাতে যায় সমির। ঘটনা জেনে স্বপন মোদক আরো ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন।
সমির বলেন, ‘ফার্মেসীর মালিককে ঘটনা জানালে তিনি আমাকে বলেন- মানি রিসিপ্ট দিয়ে আমি তর কাছে ওষুধ বিক্রি করব না। তুই আমার ফার্মেসী থেকে বেরিয়ে যা।
সমির আরো বলেন, ‘ফার্মেসীর লোকজনের এমন আচরণে আমিও তাদের সাথে তর্কাতর্কিতে জড়িয়ে যাই। হঠাৎ করে ফার্মেসীর কর্মচারী কলম নিয়ে আমার দিকে তেড়ে আসে। এতে আমি ভয় পেয়ে দৌড় দিয়ে সরে যাবার চেষ্টা করি। এসময় ফার্মেসীর মালিক চোর চোর বলে চিৎকার করে আমার পিছনে ধাওয়া করে। চিৎকার শুনে কিছু লোক আমাকে কিল-ঘুষি মারতে থাকে। একপর্যায়ে আমি সাহস করে কোমরের বেল্ট খুলে দাঁড়িয়ে যাই। কয়েকজন লোক এসময় এগিয়ে এসে আমাকে ও ধাওয়াকারীদের কাছে প্রশ্ন করলে সত্য বেরিয়ে আসে।
সমির বলেন, আমি অল্পের জন্য প্রাণে রক্ষা পেয়েছি। আমি এর বিচার চাই।
ঘটনা সম্পর্কে জানতে চাইলে কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, হঠাৎ করে তারা রাস্তায় চোর চোর বলে একটি ছেলেকে ধাওয়া করে কিলঘুষি মারতে দেখেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কয়েকজন মানুষ সাহস করে এগিয়ে না আসলে ছেলেটিকে চোর সন্দেহে পিটিয়ে মেরে ফেলা হত।
দি ওরিয়েন্টেল ফার্মেসীর মালিক স্বপন মোদক বলেন, আমার সাথে তর্কাতর্কি করায় আমার মাথা ঠিক রাখতে পারিনি। এজন্য এরকম হয়েছে।
মানি রিসিপ্ট দিতে সমস্যা কোথায়?- এই প্রশ্নের উত্তর দিতে অস্বীকৃতি জানান স্বপন। এসময় তার ও তার কর্মচারীর বক্তব্য ভিডিও করতে চাইলে তারা দুজনই ক্যামেরার সামনে কথা বলতে অস্বীকৃতি জানান।
ছবিতে ফার্মেসীর মালিক স্বপন মোদককে দেখা যাচ্ছে।