স্কুলে হেঁটে ও সাইকেলে যাতায়াতের মাধ্যমে করোনা ভাইরাসসহ স্বাস্থ্য, পরিবেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি গাড়ি নির্ভরতা কমিয়ে যানজট সমস্যা সমাধান করা সম্ভব। বিশেষ করে কোভিড-১৯ মোকবেলায় শারীরিক দূরত্ব ঠিক বজায় রাখা ও জনসমাগমস্থল যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলার ক্ষেত্রে হাঁটা ও বাইসাইকেলের গুরুত্বপূর্ণ অপরিসীম। বিশ্বের উন্নত দেশগুলো করোনাকালের অনেক আগেই নগরকেন্দ্রিক স্বাচ্ছন্দ্য জীবনযাপনে হাঁটা ও বাইসাইকেলে চলাকে অধিক গুরুত্ব দিয়েছে। আজ ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২১ দুপুর ৩টায় ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ, আইডাব্লিউবি, সিসিএ, সিসিএবি এবং ডাব্লিউবিবি ট্রাস্ট এর উদ্যোগে হাঁটা ও সাইকেলবান্ধব নগর: আগামী প্রজন্মের ভাবনা শীর্ষক শিশু সংলাপ অনুষ্ঠানে বক্তারা এ অভিমত ব্যক্ত করেন।
শিশু সংলাপ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট এর পরিচালক গাউস পিয়ারী। অনুষ্ঠানে সূচনা বক্তব্য প্রদান করেন হেলথব্রীজ ফাউন্ডেশন অব কানাডা এর আঞ্চলিক পরিচালক দেবরা ইফরইমসন। অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা রায়ের বাজার স্কুলের শিক্ষক তাহাজ্জোত হোসেন, খুলনা ও কুমিল্লা থেকে শিক্ষার্থী আয়েশা সুলতানা ও কাজী তাসমিয়া তামিমা। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ডাব্লিউবিবি ট্রাস্ট এর সহকারি প্রকল্প কর্মকর্তা মোঃ মিঠুন। খবর বাপসনিউজ।
সূচনা বক্তব্যে দেবরা ইফরইমসন বলেন, ঢাকা শহরে গণপরিবহন, হাঁটা ও রিকশার মাধ্যমে ৯৩ শতাংশ চলাচল হলেও পরিকল্পনায় এ মাধ্যমগুলোকে প্রাধান্য দেয়া হয় না। যাতায়াতের চাহিদা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে গণপরিবহন, সাইকেল ও হাঁটার পরিবেশ উন্নয়নের যে জোগান তা নিশ্চিত না হওয়ায় ব্যক্তিগত গাড়ির সংখ্যা ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ব্যক্তিগত গাড়ির ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করার জন্য হাঁটা ও সাইকেলবান্ধব পরিবেশ গড়ে তুলতে হবে। এক্ষেত্রে প্রয়োজন কার্যকর উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ।
সভাপতির বক্তব্যে গাউস পিয়ারী বলেন, নগর জীবনে অবকাঠামোগত কারনে অতিরিক্ত মোটা হওয়া, যান্ত্রিক নির্ভরতা বৃদ্ধি, দূষণ যাতায়াত সমস্যাসহ নানা সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে। গতবছর বিশে^ কোভিড-১৯ প্যানডেমিক ভয়াবহ আকার ধারণ করলে পূর্বের প্রেক্ষাপটের সঙ্গে মানুষের জীবন বাঁচাতে পায়ে হেঁটে ও বাইসাইকেলের পথ চলার বিষয়টি ফের সামনে আসে। বিশেষ করে এখন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো খুলে দেয়া হয়েছে। শিক্ষার্থীদের করোনা ভাইরাসসহ সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করনে হাঁটা ও বাইসাইকেলে চলাচলের ওপর জোর দেয়া প্রয়োজন।
আয়েশা সুলতানা বলেন, বিদ্যালয় আমাদের শারিরীক ও মানসিক প্রশান্তির একটি স্থান। একজন শিক্ষার্থী হিসেবে আমাদের প্রয়োজন নিরাপদে বিদ্যালয়ে যাতায়াতের পরিবেশ। বাহিরে গেলেই এখন আমরা দেখতে পাই যানজট, শব্দদূষণ, বায়ুদূষণ যা আমাদেরকে মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ করছে। হেটেঁ যাতায়াতের ফলে একসাথে দলোবদ্ধভাবে যাতায়াত করতে আমরা খুবই স্বচ্ছন্দবোধ করি। হেঁটে যাতায়াতের মাধ্যমে আমরা করোনা ভাইরাস মোকাবেলা করতে পারবো। কাজী তাসমিয়া তামিমা বলেন, করোনার কারনে অনেকদিন স্কুল বন্ধ থাকায় আমাদের পড়ালেখার যেমন ক্ষতি হয়েছে পাশাপাশি আমরা শারীরিক ও মানসিক ভাবেও সমস্যার সম্মুখীন হয়েছি। বিদ্যালয়ে হেঁটে ও সাইকেলে যাতায়াত করলে শারীরিক ও মানসিক বিকাশে ভূমিকা রাখবে।
তাহাজ্জোত হোসেন বলেন, বর্তমানে ফুটপাটগুলো অনেক সরু করা হয়েছে আবার অনেক স্থানে ফুটপাত নেই। যেখানে ফুটপাত আছে তাও আবার নানাভাবেদখল হয়ে আছে । এইসকল বিষয়গুলো দৃষ্টিতে আনা উচিত।