শিল্প আইন লংঘন করে অবৈধভাবে ক্রাশিং চুনাপাথর উৎপাদন ও খোলাবাজারে বিক্রির প্রতিবাদে ছাতকে অবস্থান ধর্মঘট পালন করেছে ব্যবসায়ী-শ্রমিক ঐক্য পরিষদ ও সর্বস্তরের জনগন। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত শহরের লাফার্জ সংলগ্ন ফেরী ঘাটে অনুষ্ঠিত অবস্থান ধর্মঘটে কয়েক হাজার ব্যবসায়ী, শ্রমিক ও সাধারন মানুষ অংশ নেন। এসময় লাফার্জ ফেরী ঘাট এবং এর আশপাশের সুরমা নদীর উভয় তীরে অবস্থানরত নৌ-যানে লাফার্জের মালামাল লোডিং-আনলোডিং বন্ধ করে দেয়া হয়। সুরমা নদীর উত্তর পার লাফার্জ ঘাট থেকে সরিয়ে দেয়া হয় সকল নৌ-পরিবহন। প্রায় ১০ ঘন্টা অবস্থান ধর্মঘট চলাকালে সুরমা নদীর উভয় পারে কয়েক শ’ যাত্রী ও মালবাহী গাড়ি আটকা পড়ে দীর্ঘ যান জটের সৃষ্টি হয়। অবস্থান ধর্মঘট চলাকালীন সময়ে ছাতক লাইমষ্টোন ইম্পোটার্স এন্ড সাপ্লায়ার্স গ্রুপের প্রেসিডেন্ট, সুনামগঞ্জ চেম্বার অব কমার্সের পরিচালক, এফবিসিসিআই ভূমি সংক্রান্ত উপকমিটির চেয়ারম্যান, ব্যবসায়ী-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের আহবায়ক আহমদ শাখাওয়াত সেলিম চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও ব্যবসায়ী নাজমুল হোসেন জুয়েলের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তারা বলেন, লাফার্জ হোলসিম এখন এ অঞ্চলের মানুষের জন্য একটি অভিশপ্ত প্রতিষ্ঠান। জন্মলগ্ন থেকে এ বহুজাতিক কোম্পানী লাফার্জ প্রতিষ্ঠার সব শর্ত ভঙ্গ করে বৃহত্তর ছাতককে একটি বিরান ভুমিতে পরিনত করে যাচ্ছে। পরিবেশ ধ্বংসের পাশাপাশি গিলে খাচ্ছে ছাতক-দোয়ারার ফসলী জমির মাটি। এতেই থেমে থাকেনি লাফার্জ। সর্ব শেষে শিল্প আইন লংঘন করে এ অঞ্চলের ব্যবসায়ীদের পেটে লাথি মেরে অধিক মুনাফা অর্জনে এখানের প্রাচীনতম ও ঐতিহ্যবাহী চুনাপাথর ব্যবসা এককভাবে কোম্পানীর নিয়ন্ত্রনে নেয়ার অপচেষ্টায লিপ্ত রয়েছে লাফার্জ। এখানের ব্যবসায়ী-শ্রমিকের রুটি রোজি কেড়ে নিতে লাফার্জ হোলসিম অবৈধভাবে চুনাপাথর ক্রাশিং করে খোলাবাজারে বিক্রি করে যাচ্ছে। অবৈধ পন্থায় নিজের স্বার্থ হাসিলে এ কোম্পানী ক্রমেই অপ্রতিরুদ্ধ হয়ে উঠছে। দেশের প্রচলিত আইন ও প্রতিষ্ঠাকালীন চুক্তির তোয়াক্কা না করে লাফার্জ তার অবৈধ কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে। বক্তারা আরো বলেন, লাফার্জ হোলসিমের অবৈধকার্যক্রমে এখানের ব্যবসায়ীদের পিট দেয়ালে আটকে গেছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে ক্রাশিং চুনাপাথর বাজারজাত করা বন্ধ না করলে লাফার্জ হঠাও গণআন্দোলন গড়ে তুলে লাফার্জ হোলসিমকে বাধ্য করা হবে বলে বক্তারা হুশিয়ারী করেন। গনআন্দোলনের অংশ হিসেবে আগামী ২৩ অক্টোবর নৌ-পথ অবরোধ করার ঘোষনা দেন বক্তারা। প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, সাবেক পৌর চেয়ারম্যান আব্দুল ওয়াহিদ মজনু, ব্যবসায়ী আলহাজ্ব সৈয়দ আহমদ, প্রাক্তন অধ্যক্ষ মঈন উদ্দিন আহমদ, প্রাক্তন অধ্যাপক হরিদাস রায়, ইউপি চেয়ারম্যান এড. সুফি আলম সুহেল, দেওয়ান পীর আব্দুল খালিক রাজা, শামীমুল ইসলাম শামীম, সাইফুল ইসলাম, বীর মুক্তিযোদ্ধা আমির আলী বাদশা, পৌর কাউন্সিলর হাজী নাজিমুল হক, ইরাজ মিয়া, ছাতক পাথর ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি ফজলু মিয়া চৌধুরী, ব্যবসায়ী-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের সেক্রেটারী হাজী আবুল হাসান, লাইমষ্টোন ইম্পোটার্স এন্ড সাপ্লায়ার্স গ্রুপের জেনারেল সেক্রেটারী অরুন দাস, ছাতক পাথর ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সেক্রেটারী সামছু মিয়া, ব্যবসায়ী হাজী আশিদ আলী, আব্দুল হাই আজাদ, আলী আমজদ, ইউপি সদস্য সাজ্জাদুর রহমান, ব্যবসায়ী কয়েছ আহমদ, বাবুল মিয়া মেম্বার. লায়েক মিয়া, মর্ত্তুজা তালুকদার, কালা মিয়া, নজরুল ইসলাম, মঈন উদ্দিন, মুক্তার হোসেন, নজরুল চৌধুরী, শ্রমিক নেতা তজম্মুল আলী, খালেদ আহমদ, নজরুল হোসেন, আইনুল হক, মোফাজ্জল হোসেন, বাবলু মিয়া, কালা মিয়া, ফারুক মিয়া প্রমুখ। এসময় পৌর কাউন্সিলর হাজী ছালেক মিয়া, শফিকুল হক, সাবেক পৌর কাউন্সিলর ধন মিয়া, মাসুক মিয়া, নওশাদ মিয়া, শফীক আলী মেম্বার সহ সর্বস্তরের ব্যবসায়ী, শ্রমিক, জনপ্রতিনিধি ও সাধারন মানুষ উপস্থিত ছিলেন।##