জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) অপহৃত এক ছাত্রকে হাত, পা ও মুখ বাঁধা অবস্থায় গাজীপুরের একটি বাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) সদস্যরা তাকে উদ্ধারের পাশাপাশি অপহরণে জড়িত ছয় যুবককে গ্রেফতার করে।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন গাজীপুর সিটি কররেশনের কাশিমপুর থানার উত্তর পানিশাইল পাহাড়িটেক এলাকার মনির হোসেনের ছেলে মহিন (১৯), বি.বাড়ীয়ার কসবা থানার কামালপুর এলাকার মৃত কামাল মিয়ার ছেলে আফজাল হোসেন নাঈম (২০), একই থানার চৌমুহনী এলাকার জামাল ভুইয়ার ছেলে শুভ (২৫), জেলার নবীনগর থানার শিবপুর এলাকার হোসেন মিয়ার ছেলে রাসেল (২০), নরসিংদীর মনোহরদী থানার চর তারাকান্দি এলাকার সফুর উদ্দিনের ছেলে করিম মিয়া (২১) ও গাজীপুর সিটি কররেশনের সদর থানার নলজানী এলাকার আয়নাল হোসেনের ছেলে মামুন (২২)।
অপরহণের শিকার জবি শিক্ষার্থীর নাম জীবন মন্ডল (২০)। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে ফার্মেসি বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্র ও ঝিনাইদহের শৈলকূপা থানার ভগবান নগরের সব্দুল মন্ডলের ছেলে।
গাজীপুরের পিবিআই পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাকছুদের রহমান জানান, জীবন ঢাকায় বিমানবাহিনীর চাকরিতে ‘ইন্টারভিউ’ দিতে এসে আশুলিয়ায় এক আত্মীয়ের বাসায় উঠেন। ফেসবুকে পরিচয়ের সূত্রে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সাক্ষাতের জন্য তাকে গাজীপুরের জিরানী এলাকার ফুটওভার ব্রিজের নিচে ডেকে নেয় অপহরণকারীচক্রের সদস্য শুভ। পরে অপহরণকারীরা জীবন মন্ডলকে একটি বাড়িতে নিয়ে আটকে রাখে ও মারধর করে। এ সময় জীবনের কাছ থেকে নগদ টাকা ও মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয় তারা। এরপর তারা মোবাইল ফোনে জীবনের বাবার কাছে মুক্তিপণ বাবদ এক লাখ টাকা দাবি করে। টাকা না দিলে জীবনকে মেরে ফেলার হুমকিও দেয়া হয়। ছেলেকে বাঁচাতে সব্দুল মন্ডল অপহরণকারীদের দেয়া বিকাশ নম্বরে পাঁচ হাজার টাকা দেন।
পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাকছুদের রহমান আরো জানান, বিষয়টি জানতে পেরে বুধবার রাতে পিবিআইয়ের সদস্যরা গাজীপুরের কাশিমপুর থানাধীন দক্ষিণ পানিসাইল এলাকার হাজী নজরুল ইসলাম বাড়িতে অভিযান চালায়। এ সময় ওই বাড়ির ভাড়াটিয়া শুভ ও করিম মিয়ার কক্ষ থেকে রশি দিয়ে হাত,পা ও গামছা দিয়ে মুখ বাঁধা অবস্থায় অপহৃত জীবনকে উদ্ধার করে পুলিশ। পরে আহত জীবন মন্ডলকে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের করেছেন জীবনের বাবা।
অপর দিকে পুলিশ অভিযান চালিয়ে এ ঘটনায় জড়িত ছয় যুবককে গ্রেফতার করে বৃহস্পতিবার আদালতে উপস্থিত করলে মহিন ও আফজাল আদালতে স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি দিয়েছে।