গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যের নির্দশন বাঁশের সাঁকো। যা আজকে গ্রাম অঞ্চল থেকে বিলুপ্ত হয়েছে যাচ্ছে । সাঁকো শব্দর অর্থ হলো পোল বা সেতু। সাঁকো হারিয়ে যাওয়া বাংলার এক স্মৃতি। সত্তর দশকে এমন কোন গ্রাম ছিলো না যেখানে বাঁশের সাঁকো ছিলো না। প্রতিটি গ্রামে সাত আটটি করে বাঁশের সাঁকো ছিলো বর্ষার মৌসুমে। খালে, বিলে, নদীতে পানি বৃদ্ধি পেলে এক গ্রাম থেকে অন্য গ্রামে যাওয়ার মাধ্যম ছিলো নৌকা এবং বাঁশের সাঁকো। খুব সহজে পারাপারের জন্য বাঁশের সাঁকো ছিলো ভালো মাধ্যম। বর্ষায় নদীর পানি বেড়ে গেলে গ্রামের ছোট বড় সম্মিলিতভাবে বাঁশ সংগ্রহ করে সাঁকো তৈরি করতো। সেই সাঁকো দিয়ে পারাপার হতো বিভিন্ন পেশার মানুষ এমন কি ছোট ছোট বাচ্চারাও। তারা প্রতিনিয়ত সাঁকো ওপর দিয়ে স্কুল যেতে দুষ্টমি করে সাঁকো থেকে লাফ দিতো, পা পিছলে পানিতে পড়ে যেতো। সাহস জোগাতে একজন আরেক জনকে বলতো, দেখ এটা তো বাঁশের সাঁকো পুলসিরাতে তো চুলের সাঁকো পার হতে হবে, তা আরো কঠিন। আজ আর সাঁকো নেই, কালের চাহিদা মতো তা পাকা রাস্তা আর ব্রিজে পরিণত হয়েছে, কিন্তু সেই স্মৃতি গুলো আজও অম্লান হয়ে আছে, যা শৈশবকে মনে করে দেয়।
বাঁশের সাঁকো গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য হলেও প্রতিনিয়ত থেকেই যায় ঝুঁকিপূর্ণ। এমন চিত্র দেখা যায় বগুড়া জেলার ধুনট পৌর এলাকায়। সেই সাঁকো দিয়ে প্রতিনিয়ত অনেক মানুষই যাতায়াত করেন। জানা গেছে যে, নিজ উদ্যোগেই তারা সহজে বাজারে যাতায়াতের জন্য সাঁকোটি তৈরি করে।
কালের বিবর্তনে বাঁশের সাঁকো হারিয়ে গেলেও আধুনিকতার ছোঁয়ায় ডিজিটাল যুগে সাঁকোর পরিবর্তে পাকা ব্রিজের ব্যবস্থা করা হয়েছে অনেক জায়গায়। যোগাযোগ ব্যবস্থাকে করে দিয়েছে সহজ থেকে সহজতর। এভাবে বাস্তবায়ন হতে থাকলে গ্রাম-গঞ্জের কিছু এলাকায় ছোট -খাটো বাঁশের সাঁকো থাকলেও অদূর ভবিষ্যতে বাঁশের সাঁকোর পরিবর্তে মানুষের যোগাযোগ অন্যতম মাধ্যম হবে পাকা ব্রিজ।