ছাতকের নোয়ারাই ইউনিয়নের রাজারগাও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রের ভোটগ্রহণ শেষে ভোট গণনা কালে ব্যাপক অনিয়ম, দূর্নীতি হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছেন এলাকার ভোটাররা ও ৪ জন মেম্বার প্রার্থী। কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার মমিনুল ইসলাম কর্তৃক মেম্বার পদে ফলাফল পাল্টিয়ে দেওয়ার অভিযোগ করেন ৪ মেম্বার প্রার্থী।
নোয়ারাই ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের এ কেন্দ্রে বেসরকারি ফলাফল অনুযায়ী নির্বাচিত সাজ্জাদুর রহমানের ঘুড়ি প্রতীকে প্রদত্ত ভোট প্রথমে ৬৫২ দেখানো হলে ও পরে ফলাফল শীটে দেখানো হয় ৭৫২। কিন্তু এক প্রতিদ্বন্দ্বী সহিদুল ইসলাম সরুর ভ্যানগাড়ি প্রতীকে ০ ভোট দেখানো হয়। পরবর্তীতে কেন্দ্রে গন্ডগোলের সৃষ্টি হলে ভ্যানগাড়ি প্রতীকের আনব্যালট ১২ ভোট দেখানো হয়েছে। স্থানীয় লোকজন ও একাধিক প্রার্থীর দাবি এই ওয়ার্ডে ফুটবল প্রতীকের প্রার্থী ইকবাল হোসেন বিজয়ী হয়েছেন। প্রথমে তার প্রাপ্ত ভোট ৭৮৬ দেখানো হলে পরে ফলাফল কারচুপির মাধ্যমে পাল্টে দিয়ে ফুটবল প্রতীকে ৬৮৬ ভোট দেখানো হয়েছে।
এদিকে মোরগ প্রতীকের প্রার্থী বর্তমান মেম্বার আব্দুল বাছিতের ভোট ৪৮২ দেখানো হয়েছে। তিনি জানান, বান্ডিল বাধার সময় প্রকাশ্যে তার ভোট চুরি করা হয়েছে। তালা প্রতীকের প্রার্থী রোয়াব আলী কেন্দ্রেপেয়েছেন ৪৩২ ভোট।
এ কেন্দ্রে আরেক প্রার্থী আসাদ আলী টিউবওয়েল প্রতীকে পেয়েছেন ৮৭ ভোট। এই কেন্দ্রের মেম্বার পদের ফলাফল কারচুপি নিয়ে কেন্দ্রে তুমুল বাকবিতন্ডা হয়েছে দু'ঘন্টা ধরে। শেষপর্যন্ত পুলিশ প্রহরায় ব্যালট বাক্স নিয়ে দ্রুত কেন্দ্র ত্যাগ করেন কর্মকর্তারা। বিজয়ী প্রার্থী ছাড়া অন্যান্য প্রার্থী বা প্রার্থীর এজেন্টরা রেজাল্ট শীটে স্বাক্ষর করেন নি।
এ নিয়ে গভীর রাত পর্যন্ত কন্ট্রোল রুমেও বাকবিতন্ডা হয়েছে। এর কোনো সুরাহা হয়নি। মঙ্গলবার বিকেলে রাজারগাও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে উক্ত কেন্দ্রের ফলাফল স্থগিত রাখা ও পুনরায় ভোট গণনার দাবিতে এক বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে এলাকার ভোটাররা। মনির মিয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, মেম্বার পদপ্রার্থী ইকবাল হোসেন, আব্দুল বাছিত, সহিদুল ইসলাম সরু, আসাদ আলী, কেন্দ্রে থাকা এজেন্ট আফিক আলী, স্থানীয় মাস্টার আব্দুস সালাম, রহমত আলী, রাসেল আহমদ, এজানুল হক, ফারুক আহমদ, মহব্বত আলী, রফিক মিয়া, নজরুল ইসলাম, সাকির আহমদ, নূরুজ আলী, রজব আলী, নূরুল ইসলাম, লিটন মিয়া, তোরাব আলী, আব্দুল আজিজ, মনোয়ার হোসেন, সোনা মিয়া, রাজু আহমদ প্রমুখ। এসময় লায়েক মিয়া, আজিজুল হক, রফিক আহমদ, মরই মিয়া, সুমন মিয়া, সমুজ আলী, ফিরোজ আলী, আবদাল মিয়া, রুহেল আহমদ, আয়াজ আলী, সুহেল আহমদ, জাভেদ আলী, ফখরুল ইসলাম, সাদ্দাম হোসেন, আনোয়ার মিয়া, নূরুল আমিন, কুদরত আলী সাধু, সমুজ আলী, জাবেদুর রহমান, মিছবাহ উদ্দিন, আব্দুল খালিক, রফিকুল ইসলাম, আলী আহমদ, আব্দুল গণি, সিহাব উদ্দিন, আব্দুল বারী, জাকির হোসেন, মোশাহিদ আলী, আজির উদ্দিন, শামীম আহমদ, আরজু মিয়া, তারেক আহমদ, ছায়াদ মিয়া প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। সভায় বক্তারা বলেন, রাজারগাও, ছনখাইড়, আঙ্গারুকা ও গোদাবাড়ী গ্রামের ভোটারদের ভোটকেন্দ্র রাজারগাও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। ৮ নং ওয়ার্ডের এ কেন্দ্রে ৪ হাজার ৪৯ ভোটার রয়েছে। সোমবার নির্বাচনে এ কেন্দ্রে প্রদত্ত ভোটের সংখ্যা ২ হাজার ৬৪৬। বাতিল ভোটের সংখ্যা ৯৯টি দেখানো হলেও প্রায় শতাধিক বাতিল ভোট ঘুড়ি প্রতীকের বান্ডিলে দেয়া হয়েছে। এক প্রার্থীর বোন পুলিশ কনস্টেবল জেলি বেগমের ইঙ্গিতে কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার মমিনুল ইসলাম কেন্দ্রে মেম্বার পদের ফলাফল পাল্টে দিয়েছেন। ভোটকেন্দ্রে গণনার সময় কোনো প্রার্থীর ৬০/৭০ টি ব্যালট দিয়ে বান্ডিল বাধা হয়েছে। আবার ১১০/১২০ টি ব্যালট দিয়ে কোনো কোনো প্রার্থীর বান্ডিল বাধা হয়েছে। মোটকথা সুষ্ঠুভাবে এ কেন্দ্রে মেম্বার পদের ভোট গণনা হয়নি। বারবার অনুরোধ ও বাকবিতন্ডা হলেও কেন্দ্রে পুনরায় ভোট গণনা করেন নি কর্মকর্তারা। ভোটের হিসেব ছাড়াই তাদের ইচ্ছেমতো ফলাফল ঘোষণা করেন প্রিজাইডিং অফিসার। এসময় প্রার্থীরা ঘোষিত ফলাফল বর্জন করেছেন।
কেন্দ্রের এজেন্ট আফিক আলী বলেন, ভোটগণনা ও বান্ডিল করা এই কেন্দ্রে সুষ্ঠুভাবে হয়নি। পুনরায় ভোটগণনার জন্য দাবি করেছি। এতে কোনো লাভ হয়নি। ভোটের হিসাবে ফুটবল প্রতীকের ইকবাল হোসেন নির্বাচিত হয়েছেন। কিন্তু রেজাল্ট শীটে কর্মকর্তারা ঘুড়ি প্রতীকের প্রার্থীকে বিজয়ী দেখিয়েছেন। এই ওয়ার্ডের মেম্বার পদের ফলাফল স্থগিত রেখে পুনরায় ভোট গণনা করে ফলাফল ঘোষণার দাবি জানান তিনি।
দেশ যুগান্তর/আরজে
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোঃ হারুনুর রশিদ
বার্তা সম্পাদক : জাকির হোসেন শাকিল
আইন উপদেষ্টা : এ্যাডভোকেট মুহাম্মদ আলমগীর হোসাইন
"এইচ বাংলা মিডিয়া কর্তৃক প্রকাশিত -দেশ যুগান্তর"
অফিস : পুরানা পল্টন, ঢাকা- ১০০০।
ই-মেইল : news.deshjugantor@gmail.com
যোগাযোগ : 01763592492
Copyright © 2024 দেশ যুগান্তর. All rights reserved.