প্রাচীনতম ছাতক ডায়মন্ড সুরমা সিমেন্ট কোম্পানি লিমিটেড’র আধুনিকায়নের কাজে ব্যাপক অনিয়ম ও দূর্নীতির অভিযোগ ওঠেছে। একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, চাইনিজ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সি-হপ শুরু থেকেই অনিয়মের আশ্রয় গ্রহণ করে বলে অভিযোগ রয়েছে। ফাইলিং কাজে আধুনিক টেকসই হাইড্রোলিক ফাইলিং না করে বাংলা ফাইলিং দিয়ে কাজ শুরু করা হয়।
বিষয়টি জানাজানি হলে অর্ধেক কাজের পরে হাইড্রোলিক ফাইলিং এর ব্যবস্থা নেয়া হয়। এদিকে দুবাই থেকে আমদানিকৃত উন্নত মানের পাথর দিয়ে ফাইলিং কাজ করার কথা থাকলেও ফাইলিং এ ব্যবহৃত হচ্ছে ভোলাগঞ্জ ও জাফলংয়ের ক্রাশিং চুনাপাথর। এতে কাজের মান নিয়ে শংকা দেখা দিয়েছে কারখানার ভিতরে। কোম্পানির এমডি ও প্রজেক্ট ডাইরেক্টর প্রকৌশলী আব্দুল বারী এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন ফাইলিংয়ে নয়, রাস্তার কাজে ক্রাশিং চুনাপাথর ব্যবহৃত হচ্ছে। প্রকল্পের কাজে অভিযোগ রয়েছে, তদারকিতে নিয়োজিত বিসিআইসির ইঞ্জিনিয়ারদের চোখ ফাঁকি দিয়ে রাতের আদারে চলে ফাইলিং কাজ। অভিজ্ঞ মহলের অভিমত, ফাইলিং কাজ দূর্বল হলে বড় ধরনের ঝুঁকিতে পড়বে আধুনিকায়ন কার্যক্রম।
উল্লেখ্য, বিসিআইসির অধীন একমাত্র পুরাতন রাষ্ট্রায়াত্ব সিমেন্ট উৎপাদনকারী প্রাচীনতম প্রতিষ্ঠান ছাতক ডায়মন্ড সুরমা সিমেন্ট কোম্পানির হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে আধুনিকায়ন কাজের মূল ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চিনা সি-হপ, কোম্পানি। সি-হপ আবার সাবকন্ট্রাক্টর হিসেবে নিয়োগ দেয় আরেক চিনা প্রতিষ্ঠান টিএনজিন ইলেকট্রিক পাওয়ার কোং লিমিটেড (টিইপিসি) কে। টিইপিসি আবার একই গ্রুপের (সিস্টার্স কনসার্ন) চিনা হাইম্যান ও ওহান কোম্পানিকে ২য় সাবকন্ট্রাক্ট দিয়ে পরিচালনা করছে কার্যক্রম। এছাড়া বাঙ্গালী অস্থায়ী নির্মান শ্রমিকের নিয়মিত বেতন – ভাতা না দেয়ায় চিনাদের বিরুদ্ধে শ্রমিকদের মাঝে বিরাজ করছে উত্তেজনা ও ক্ষোভ।
সম্প্রতি এ নিয়ে জনৈক চিনা সুপারভাইজারকে পিটিয়ে আহত করেছে উত্তেজিত শ্রমিকরা। পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রন করে। এদিকে জানাগেছে, টিইপিসির প্রজেক্ট ম্যানেজার মিঃ জিনের মাধ্যমে এখানে সকল অপকর্মের চলছে। বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রকল্পে দূর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। ছাতক ডায়মন্ড সুরমা সিমেন্ট কোম্পানির আধুনিকায়ন কার্যক্রমে অনিয়ম ও দূর্নীতির বিষয়ে সরকার ও বিসিআইসি কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ জরুরি বলে মনে করছেন ছাতকের সচেতন মহল।
এদিকে ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্টের ঢালাই কাজ গত ক’দিনের বৃষ্টির পানিতে ভেসে গেছে। এতেও জোড়াতালি দিয়ে কাজ চালিয়ে যাওয়ার অভিযোগ রয়েছে। নতুন ভরাট করা মাটির উপর ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্টের কাজ চলছে বৃষ্টি ও কাদা পানির মধ্যে। ফলে এ কাজটি টেকসই ও মানসম্মত হচ্ছে না।
দেশ যুগান্তর/আরজে