ছাতকের সদর ইউনিয়নের তিররাই গ্রামবাসীর অর্থায়নে এবং নিজ স্বেচ্ছাশ্রমে তিররাই গ্রামের সড়ক সংস্কার কাজ করেছেন গ্রামবাসী। শনিবার (২৪ জুলাই) সকাল থেকে এ সড়কে স্থানীয় গ্রামের লোকজন স্বেচ্ছাশ্রমে সংস্কার কাজে অংশ নেয়। গ্রামবাসীর চাঁদার মাধ্যমে ইট, বালু, বাঁশ, মাটি ক্রয় করে স্বেচ্ছাশ্রমে তারা সড়ক মেরামতের উদ্যোগ নিয়েছেন। গতবছর পরপর তিনদফা বন্যায় গ্রামবাসীর যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম এ সড়কটি স্থানে স্থানে ভেঙ্গে একেবারে বেহাল দশায় পরিণত হয়েছে। এতে গ্রামবাসীর ভোগান্তি চরম আকার ধারণ করেছে।
জানা গেছে, উপজেলা সদরের সাথে সড়ক পথে যাতায়াতের জন্য ২০০৪ সালে তিররাই গ্রামে সরকারি অর্থায়নে কাঁচা সড়ক নির্মাণ করা হয়। ২০০৬ সালে ওই সড়কের অর্ধেক অংশ পাকাকরণ করা হয়। এরপর থেকে ওই সড়কে সরকারিভাবে আর কোন সংস্কার কাজ হয়নি। বর্তমানে তিররাই গ্রামের মধ্যে প্রায় দুই কিলোমিটার সড়ক চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। ভাঙ্গা বড় বড় গর্ত ও অত্যাধিক কাঁদার কারনে এ সড়ক দিয়ে রিক্সাও চলাচল করতে পারেনা। একযুগ ধরে ওই সড়ক দিয়ে সিএনজি চালিত গাড়ী, অটোরিক্সা চলাচল সম্পূর্ণভাবে রয়েছে বন্ধ। যাতায়াতের একমাত্র সড়কটির বেহাল দশার কারনে গ্রামবাসী এখন পড়েছেন চরম বিপাকে। গ্রামের একমাত্র সড়কে রয়েছে আবার বাঁশের তিনটি সাঁকো। গ্রামে রয়েছে দুইটি মসজিদ, একটি মন্দির ও একটি কমিউনিটি ক্লিনিক। বর্ষা মৌসুমে ধর্মপ্রাণ লোকজনদের কাঁদামাটি পেরিয়ে নামাজ আদায় করতে হয়। আর কোন বিকল্প রাস্তা না থাকায় গ্রামের স্কুল পড়ুয়া ছেলে-মেয়েদের কাঁদাযুক্ত ওই সড়ক দিয়েই শহরের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যাতায়াত করতে হচ্ছে। ওই কারনে তাদের স্কুল ইউনিফর্ম নিয়ে প্রায় সময়ই পড়তে হচ্ছে বিপাকে। বন্যার সময় উপজেলা সদরের সাথে যোগাযোগ রক্ষায় তাদের বাঁশের সাঁকো দিয়ে চলাচল করতে হয়।
সড়ক সংস্কারে স্থানীয় মখলিছ আলী, খোয়াজ আলী, আজাদ মিয়া, জাহেদুল ইসলাম আহবাব, দুলাল সরকার, আব্দুল ইসলাম, কলমদর আলী, আসাদুজ্জামান, সারজান মিয়া, অমল দাস, মানিক মিয়া, রূপন মন্ডল, আলী হোসেন, আবাব মিয়া, হাফিজ ফয়েজ আহমদ, মাসুক মিয়া, ধন মিয়া, অপূর্ব দাস, জুয়েল মিয়া, শিল্টু, নৃপেশ দাস, প্রণব দাস, জাহিদুল মিয়া, সেবক দাস, মানিক মিয়া, প্রদিপ দাস, সমরাজ, আব্দুল কাদির, জাবের হোসেন, প্রান্ত, ইন্দ্রজিৎ, শান্ত দাস, লয়েছ মিয়া, মতি দাস, দেলোয়ার হোসেন, সোহাগ মিয়া, উজ্জল সরকার, মুরাদ হোসেন, জুনেদ হোসেন, ময়না মিয়া, শোয়েব মিয়া, তামিম, কয়েছ মিয়া, জাবেদ আহমদসহ গ্রামের লোকজন এগিয়ে আসেন।
তিররাই গ্রামের বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা ও এডভোকেট নিরঞ্জন সরকার বলেন, একদিকে সড়কের বেহাল দশা আর অন্যদিকে বাঁশের সাঁকো। এ থেকে গ্রামবাসী পরিত্রাণ পেতে চায়। গ্রামবাসী সড়কটি দ্রুত সংস্কারের জন্য স্থানীয় এমপি মুহিবুর রহমান মানিকের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। জাহেদুল ইসলাম আহবাব বলেন, দীর্ঘদিন ধরে এ সড়ক দিয়ে যানচলাচলতো দূরের কথা রিক্সা চলাচল করছে না। কাঁদার মধ্য দিয়ে পায়ে হেটে যেতে হচ্ছে। গ্রামবাসীর দূর্দশা লাঘবে এ সড়কটি সংস্কারের জন্য তিনি ইউপি চেয়ারম্যান, উপজেলা চেয়ারম্যান ও সংসদ সদস্য মুহিবুর রহমান মানিকের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন।
দেশ যুগান্তর/আরজে