সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজারে সড়ক ও জনপথ বিভাগের অধীনে একটি পাকা রাস্তা বর্ধিতকরণ ও নির্মাণকাজে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। ব্যবহার করা হচ্ছে নিম্নমানের ইট, ইটের খোয়া (কংক্রিট) ও কালো মাটিযুক্ত ভরাট বালু । মানা হচ্ছে না খোয়া ও বালুর অনুপাত। রাস্তার কার্পেটিং তুলে সেখানেই রুলার করা হচ্ছে।
এসব অনিয়ম আর কারচুপি দেখার কেউ নেই। স্থানীয়দের অভিযোগ, রাস্তার কাজ তদারকির দায়িত্বে সড়ক ও জনপথ বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত এসওসহ কারো দেখা মিলছে না। এযাবত টানানো হয়নি সেখানে কাজের বরাদ্দকৃত সাইনবোর্ড। এই সুবাদে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান দায়সারা কাজ সম্পাদনের পাঁয়তারা করছেন এবং চালিয়ে যাচ্ছেন।
সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা গেছে, ৪০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে দোয়ারাবাজার হাসপালের রাস্তায় ১৭৫ মিটার কার্পেটিং কাজের জন্য দরপত্র আহবান করে সিলেট সড়ক ও জনপথ বিভাগ। আর কাজটির দায়িত্ব পায় সিলেট ইউনেস অ্যান্ড ব্রাদার্স নামে একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। স্থানীয় সূত্রমতে উপজেলা সদরের পাশেই দোয়ারাবাজার-লাফার্জ (ছাতক) সড়কের একাংশ সুরমা নদীতে বিলীন হওয়ায় দোয়ারাবাজার-ছাতক-সিলেটগামী যানবাহন চলাচলে দোয়ারাবাজার হাসপাতাল সড়কটি বিকল্প হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছিল দীর্ঘদিন ধরে। অতিরিক্ত যান চলাচল ও মালামাল পরিবহনের চাপে খানাখন্দে ভরপুর ঝুঁকিপূর্ণ বেহাল ওই সড়কটি কর্তৃপক্ষের নজরে পড়েনি। অবশেষে ভূক্তভোগী এলাকাবাসীর দাবির প্রেক্ষিতে রাস্তাটি বর্ধিতকরণসহ নতুন কার্পেটিংয়ের কাজ শুরু হলেও সেটিতে চলছে ব্যপক কারচুপি।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, রাস্তার কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে কালো রঙের মাটিযুক্ত ভরাট বালু। আর ওই ভরাট বালুর সঙ্গে নিম্নমানের ইটের খোয়া মিশিয়ে কাজ করছে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। একখানা ইটকে ৩-৪ টুকরো করে খোয়া হিসাবে নিম্নমানের বালুর সঙ্গে মিশিয়ে রাস্তায় বিছিয়ে দেয়া হচ্ছে। সেহেতু, দরপত্রে ৭৫ ভাগ খোয়া ও ২৫ ভাগ বালুর মিশ্রণের অনুপাত থাকলেও তা আদৌ মানা হচ্ছে না। এছাড়া ভেকু মেশিন দিয়ে রাস্তার পুরনো কার্পেটিং তুলে সেখানেই মিশিয়ে দেয়া হচ্ছে সেগুলো। এসব অনিয়মের বিষয় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের লোকজনকে জানালেও কোনো কাজ হয়নি।
এবিষয়ে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান সিলেটের ইউনেস অ্যান্ড ব্রাদার্স এর কর্তাব্যক্তির মুঠোফোনে একাধিকবার চেষ্টা করেও তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। রাস্তাটির নির্মাণ কাজের বিষয়ে সড়ক ও জনপথ বিভাগ সুনামগঞ্জের এসডি নজরুল ইসলাম বলেন, স্থানীয় সংসদ সদস্য মহিবুর রহমান মানিক বিষয়টি আমাকে জানিয়েছেন। তাই কাজটি দেখার জন্য আমি ইঞ্জিনিয়ারও পাঠিয়েছি। কাজে অনিয়ম করার কোনো সুযোগ নেই।
দেশ যুগান্তর/আরজে