দাম বাড়ার মূল কারণ হচ্ছে পুঁজিবাদী আড়তদার, মজুরদারদের। যেমন আমাদের চৌধুরী বাজারের ইসমাইল মিয়ার দোকান এক লিটার খোলা সয়াবিন তৈল বিক্রয় করেন ১৮০ টাকা, বাজারে মরণ আলীর দোকানে বিক্রয় করেন ১৭০ টাকা, একই পূন্য দালাল বাজারে বিক্রি হয় ১৬৫ টাকা। অথচ একই সয়াবিন তৈল কারখানায় উৎপাদিত মূল্য ১২০ টাকা থেকে ১৩০ টাকা দামে বিক্রি করেন কারখানার মালিক আড়তদারের কাছে। অথচ একই সয়াবিন তৈল সাধারণ মানুষ ক্রয় করে ১৮০ টাকা দাম দিয়ে। সারা বাংলাদেশের এক তৃতীয়াংশ কাঁচা সয়াবিন উৎপাদন হয় লক্ষ্মীপুর জেলায়।
কারখানার মালিকগণ এ সয়াবিন কেজিপ্রতি ক্রয় করেন ৮ থেকে ১০ টাকা দাম দিয়ে। আমি মনে করি যেহেতু বাংলাদেশের এক তৃতীয়াংশ সয়াবিন উৎপাদন হয় লক্ষ্মীপুর অঞ্চলে। এখান থেকে ক্যারিং খরচ করে ঢাকা, চট্টগ্রাম, নারায়নগঞ্জ, রাজশাহী, বিভিন্ন বিভাগীয় শহরে কারখানায় মালিকপক্ষ সয়াবিন ক্রয় করে উৎপাদন বীজ থেকে সয়াবিন তৈল বের করে সারা দেশে সাপ্লাই দেওয়া হয়, আবার পুনরায় সারাদেশে ক্যারিং খরচ করে আড়তদার, মজুরদারদের ক্রয় করে তারপর খুচরা পাইকাররা ক্রয় করে, তারপর খুচরা পাইকাররা সাধারণ মানুষের কাছে বিক্রি করে।
কিছু অসৎ ব্যবসায়ী আর কিছু কেরিংম্যান আর গাড়ির মালিক ড্রাইভার,হেলপারগন।এই ৫শ্রেণির মানুষ গুলো টাকা লুটে নিচ্ছে।বাংলাদেশের সব ধরনের জিনিস পত্রের যেমন-খাবার পন্যের,পরনের বস্ত্র,প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সহ মানুষের প্রয়োজনীয় যত প্রকারের জিনিসপত্রের রয়েছে সবকিছুর দাম বাড়ার সবছেয়ে বড় কারণ হলো এটাই।
পন্যের দাম নিয়ন্ত্রণ রাখার, দাম কমানোর সরকারের কাছে কিছু পরামর্শ দিচ্ছি। সারা বাংলাদেশের যে সকল কাঁচা মাল উৎপাদন বেশি সেই অঞ্চলে বিভিন্ন মাধ্যমে উৎপাদিত কাঁচামাল না দিয়ে সরাসরি ঐ সকল অঞ্চলে কাঁচামাল সরকার কৃষক থেকে সরাসরি মাঠে ক্রয় করে ঐ এলাকায় মেল কারখানা গড়ে তুলে উৎপাদিত পন্যগুলো সরকারি খরচে সারাদেশে উৎপাদিত পন্যের মূল্য নির্ধারণ করে খুচরা পাইকারদের কাছে পৌঁছে দিবে। তখন সাধারণ মানুষ কম দাম দিয়ে পন্যগুলো ক্রয় করতে পারবে। এদিকে আড়তদার, মজুরদাররা আর পুঁজিবাদীরা বেশি দাম বাড়িয়ে পন্যগুলো বিক্রি করতে পারবে না।
যেহতু সারাদেশে ভোজ্যতেলের দাম অনেক বেশি আমাদের লক্ষ্মীপুরে সারা বাংলাদেশের এক তৃতীয়াংশ সয়াবিন উৎপাদনের স্থান লক্ষ্মীপুর তাই বহুহাত না বাড়িয়ে এ অঞ্চলে একটি সয়াবিন কারখানা গড়ে তোলার জন্য সরকারের কাছে বিনীত অনুরোধ জানাচ্ছি।
সমাধানঃ
মানুষের চাহিদা মেটানোর জন্য নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য উৎপাদিত স্থান থেকে উৎপাদনকারীকে ন্যায্য মূল্য দিয়ে সরকার ক্রয় করে নিতে হবে।তারপর ঐ সকল পন্য সরকারের নিজস্ব খরচে গাড়ি দিয়ে সারাদেশে সকল কাঁচামাল আমদানী রপ্তানি, গুদামজাত, আড়তদার মজুদদারদের কাছে বিক্রয় না করে সরাসরি খুচরা বাজারে পাইকারদের কাছে সকল কাঁচা,পাকা ,শুকনো মাল পন্যগুলো সঠিকভাবে পণ্যের মূল্য নির্ধারণ করে বিক্রি করার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি। তাহলে সাধারণ মানুষ পণ্যগুলো কম দামে কিনতে সক্ষম হবে।
যেখানে সেখানে নিজেদের ইচ্ছেমতো বড়বাজার, ক্ষুদ্র বাজার সৃষ্টি করা যাবে না। সকল ব্যবসায়ীরা একই পন্য একাধিক দোকানে বিক্রি করতে পারবে না। সরকার নির্ধারিত বড় বাজার, ক্ষুদ্র বাজার সৃষ্টি করবে, ওই বাজারগুলোতে এককটি পন্য এক একটি খুচরা পাইকার ব্যবসায়ীরা লাইসেন্স নিয়ে ব্যবসা করবে এবং সরকারের নির্ধারিত মূল্যে পন্যগুলো বিক্রয় করবে। নির্ধারিত মূল্যের তালিকার বাহিরে বেশি দামে দ্রব্যমূল্য বিক্রি করার অভিযোগ পাওয়া গেলে লাইসেন্স বাতিল করে ওই দোকান বন্ধ করে দিতে হবে। এ আইন সারাদেশে চালু রাখলে ব্যবসায়ীরা অতিরিক্ত বেশি দামে সকল পন্য বিক্রি করতে পারবে না। এমনটাই প্রত্যাশা রাখি।
এক একজন ব্যবসায়ী মাত্র একটি আইটেমের পন্য নিয়ে ব্যবসা করার সুযোগ পাবে যেমন- যিনি চাউল বিক্রি করবেন তিনি ডাল বিক্রি করতে পারবেন না। যিনি তেল বিক্রি করবেন তিনি কাঁচা তরকারি বিক্রয় করতে পারবেন না, যিনি আটা, ময়দা, লবন বিক্রয় করবেন তিনি সেমাই, চিনি, লবন বিক্রি করতে পারবেন না।
এই বিষয়টির প্রতি বেশি গুরুত্ব দিতে হবে সাধারণ মানুষ একটু কষ্ট করতে হবে, যিনি চা খাবেন তিনি ৩ টি দোকানে যেতে হবে যেমন চা পাতা এক দোকানে, পাউডার দুধ এক দোকানে চিনি এক দোকানে, মসলা আইটিম এক দোকানে।
প্রত্যেক ব্যবসায়ীদের নজরদারি রাখতে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীদের কাজ লাগাতে হবে। কোন ব্যবসায়ী যদি কোন একটি পন্যের দাম ১০ টাকা, ২০ টাকা, ৩০ টাকা বেশি রাখে বা কোন ব্যবসায়ী যদি কোন খাবারের সাথে বেজাল মিশ্রিত করে আর কোন ক্রেতা যদি আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে অভিযোগ দেয়। তাহলে এই ব্যবসায়ীকে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নিতে সুবিধা হবে।আমার এই লেখা গুলোর যদি বাস্তব রুপ দেওয়া যায় তাহলে একদিকে যেমন দ্রব্য মূল্যের দাম নিয়ন্ত্রণ হবে অন্য দিকে বেজাল যুক্ত খাবার মুক্ত করা সম্ভব হবে। সবচেয়ে বড় বিষয় হলো বাংলাদেশের রাজস্ব আয়ের প্রায় ৩০ শতাংশ ঘাটতি পূরন করা ও সম্ভব হবে বলে আমি মনে করি। ধন্যবাদ।
প্রশ্নঃব্যবসায়ীগন ক্রেতাগনের কাছে কিভাবে কোন নিয়মে পন্য বিক্রি করতে হবে?
উত্তরঃক্রেতাদের চাহিদা একদিনের চাহিদা পরিমাণ মালামাল দোকানে রাখতে পারবে এর বেশি পারবে না ব্যবসায়ীগন এক একটা পরিবারে ১দিনে যেই পরিমাণ খাবার প্রয়োজন সেই পরিমান বিক্রি করতে হবে। এর বেশি রাখতে পারবে না।
প্রশ্নঃ কিন্তু বিক্রেতাগন কিভাবে জানবে কোন পরিবারে কতজন সদস্য রয়েছে?
উত্তরঃ বিক্রেতাগন বাজার এলাকার প্রত্যেক পরিবারে সদস্য তালিকা করে আইডিকার্ড বানিয়ে আনবে। সেই জন্য ইউনিয়ন পরিষদ,পৌরসভা,সিটি কপোরেশন মেয়রের সহযোগিতা নিতে হবে।
প্রশ্নঃ এই বিষয়ে ক্রেতাদের কি করণীয়?
উত্তরাঃ ক্রেতাগন নিজের পরিবারের সদস্যদের তালিকা ব্যবসায়ীদের কাছে পৌঁছে দিতে হবে। আর এক দিনের বেশি পন্য ক্রয় করতে পারবেনা। করিলে আইনানুগ ব্যবস্থ নেওয়া হবে।
নামঃ মোঃসবুজ (প্রতিবন্ধি সর্বশান্ত)
পিতাঃ সৈয়দ আহম্মদ
বাড়ীঃ লাঠিয়া বাড়ি
গ্রামঃ হামছাদী
পোঃ জয়নালগঞ্জ, থানাঃ সদর, জেলাঃ লক্ষ্মীপুর
মোবাঃ০১৭৬১৩০০৮৪৮
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোঃ হারুনুর রশিদ
বার্তা সম্পাদক : জাকির হোসেন শাকিল
আইন উপদেষ্টা : এ্যাডভোকেট মুহাম্মদ আলমগীর হোসাইন
"এইচ বাংলা মিডিয়া কর্তৃক প্রকাশিত -দেশ যুগান্তর"
অফিস : পুরানা পল্টন, ঢাকা- ১০০০।
ই-মেইল : news.deshjugantor@gmail.com
যোগাযোগ : 01763592492
Copyright © 2024 দেশ যুগান্তর. All rights reserved.