আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘ (ইসকন) এর উদ্যোগে হাটহাজারীর শ্রীশ্রী পুণ্ডরীক ধামে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা ও ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যে শ্রীমতী রাধারাণীর আবির্ভাব তিথি -রাধাষ্টমী মহোৎসব উদযাপিত হয়েছে ।
এ উপলক্ষে মঙ্গলবার (১৪ সেপ্টেম্বর) দিনব্যাপী নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে ইসকন।শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর সংকীর্তন আন্দোলনের অন্যতম প্রধান ভিত্তি ভূমি এই শ্রীধামে দুইদিন ব্যাপি রাধাষ্টমী মহোৎসবের অনুষ্ঠানমালায় ছিল মহাত্মা বৈষ্ণবগণের আগমন ও অভ্যর্থনা, মহা অধিবাস,প্রাতঃকালে ১০৮ জন ভক্তের দীক্ষা অনুষ্ঠানের পরপরই শুরু হয় শ্রীল জয়পতাকা স্বামী গুরুমহারাজের প্রাণধন শ্রীশ্রী বার্ষভানবীমুরারী বিগ্রহের মহাভিষেক। দুপুরে রাধাষ্টমী মহোৎসবের আলোচনা সভায় মহাআশীর্বাদক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন (জুমের মাধ্যমে) ইসকনের অন্যতম গুরু ও জিবিসি শ্রীল জয়পতাকা স্বামী গুরুমহারাজ।
পূজনীয় অতিথি ছিলেন ইসকন জিবিসি শ্রীমৎ ভক্তিপুরুষোত্তম স্বামী মহারাজ ও শ্রীমৎ ভক্তিবিনয় স্বামী মহারাজ। প্রধান অতিথি ছিলেন শ্রীমৎ ভক্তি অদ্বৈত নবদ্বীপ স্বামী মহারাজ। বিশেষ অতিথি ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (উত্তর) কবির আহমেদ, জুরাইছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জীতেন্দ্র কুমার নাথ, হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ শহিদুল আলম, কুমিল্লা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শুভাশীষ ঘোষ, হাটহাজারী থানার ওসি রফিকুল ইসলাম, মেখল ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ সালাউদ্দিন চৌধুরী।
আলোচক ছিলেন শ্রীপাদ নাড়ু–গোপাল দাস, বাংলাদেশ ইসকনের যুগ্ম সম্পাদক শ্রীপাদ জগদগুরু গৌরাঙ্গ দাস ব্রহ্মচারী। সমগ্র অনুষ্ঠানে পৌরহিত্য করেন বাংলাদেশ ইসকনের সাধারণ সম্পাদক শ্রীপাদ চারুচন্দ্র দাস ব্রহ্মচারী। স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন শ্রীধামের অধ্যক্ষ শ্রীপাদ চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী। আলোচনা সভার পরপরই প্রেমনিধি কালচারাল একাডেমীর পরিবেশনায় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়। শ্রীল জয়পতাকা স্বামী গুরুমহারাজের ভুবন পাবনী সন্ন্যাস গ্রহনের ৫১তম মহোৎসব উদযাপনের অংশ হিসেবে গুরুমহারাজের মহিমা আলোচনা, সন্ধ্যায় শ্রী রাধাকুন্ডের মহা আরতী, বিশ্ব শান্তি ও মঙ্গল কামনায় বৈদিক যজ্ঞানুষ্ঠান এবং সবশেষে রাধাকুন্ড স্নানের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি হয়। চট্টগ্রাম ও বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আগত বিশ সহাস্রধিক ভক্তদের মাঝে অন্নপ্রসাদ বিতরণ করা হয়। অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ বাংলাদেশ। এদেশে সকল ধর্মের মানুষ কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে বসবাস করে তাদের ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালন করে। এ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষা করে সুন্দর বাংলাদেশ বির্নিমাণে সকলকে এগিয়ে যেতে হবে। মানুষ এখন এক মহা সময় অতিক্রম করছে। করোনাকালে মানবজীবন বিপর্যস্ত হয়েছে। অনেকে হারিয়েছেন তাদের প্রিয়জনদের। তাদের আত্মার শান্তি কামনা এবং করোনামুক্ত পৃথিবীর জন্য প্রার্থনা করা হয়।