লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি
লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইনসুরেন্স কোম্পানি লিঃ মৃত্যুর ১৩ মাস পর গ্রাহক আবুল খায়ের তার পলিসি নং ১৫০০০১০৩৫১, নমিনি তার বিধবা স্ত্রী লিপি আক্তারকে মৃত্যুদাবীর টাকা না দিয়ে আবুল খায়েরের স্বাক্ষর জাল করে প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে দায়িত্বরত রায়পুর জোনাল অফিস ইনচার্জ শাহীনুর বেগম ও জেলার সাবেক জিএম আব্দুল কুদ্দুস এবং মাঠকর্মী সালেহ আহমেদ এর বিরুদ্ধে।
অভিযোগের বিষয়ে বীমা গ্রহীতা আবুল খায়ের এর স্ত্রী ভুক্তভোগী লিপি আক্তার কেঁদে কেঁদে গণমাধ্যমে বলেন, আমার স্বামী সৌদি প্রবাসে থাকত, সে জীবিত থাকতে ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইনসুরেন্সে একটা বীমা করে। বীমার মেয়াদ শেষ হওয়ার পরে আমার স্বামী জীবিত থাকতেই বীমার মেয়াদোত্তর টাকা উঠানোর জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা করে। দীর্ঘ ১৩ মাস পার হয়ে যাওয়ার পর উক্ত মেয়াদোত্তর বীমার টাকা পাওয়া যায় নি ।কিন্তু মাঠকর্মী সালেহ আহমেদ, রায়পুর জোনাল অফিসের ইনচার্জ শাহীনুর বেগম, লক্ষ্মীপুর জেলার সাবেক জিএম আঃ কুদ্দুস তারা বছরের পর বছর বীমার টাকা না দিয়ে নয়ছয় বলে ঘুরাচ্ছে। হঠাৎই আমার স্বামী মারা যায়, তখন আমি মৃত্যুদাবীর টাকা চেয়ে অফিসে বারবার যাই। কিন্তু মাঠকর্মী সালেহ আহমেদ, রায়পুর জোনাল অফিসের ইনচার্জ শাহীনুর বেগম, লক্ষ্মীপুর জেলার সাবেক জিএম আব্দুল কুদ্দুস আমাকে ভুলবাল বুঝিয়ে আমার স্বামীর মৃত্যুর ১৩ মাস পর তার স্বাক্ষর জাল করে আমার নামে একটা এফডিআর করে যার নং ৫০০০০০৫৩৮০। বলেন দুই বছর পর টাকা পাবেন। আমি কোন এফডিআর চাই না৷ আমি আমার মৃত স্বামীর মৃত্যুদাবীর টাকা চাচ্ছি। আমি আমার স্বামীর জমাকৃত পুরো টাকা লাভ সহ ফেরত চাই। আমার স্বামী নেই আমি এখন খুব অসহায়। আমি টাকা পেতে তাদের কাছে অনেক অনুনয় বিনয় করেছি কিন্তু তারা টাকা না দিয়ে আমাকে অফিসে অফিসে অনেক ঘুরিয়েছে। আমি আমার মৃত স্বামীর বীমার পুরো টাকা ফেরত চাই বলে হাউমাউ করে কেঁদে দেন ভুক্তভোগী লিপি আক্তার।
অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করে মাঠকর্মী সালেহ আহমেদ বলেন, "আমাদের উর্ধতন কয়েকজন কর্মকর্তা কয়েকশত কোটি টাকা আত্মসাৎ করে বিদেশে পালিয়ে গেছেন, তাদের বিরুদ্ধে এখনো মামলা চলমান রয়েছে। সেজন্য বীমার মেয়াদ শেষ হওয়ার ৪ থেকে ৫ বছর ঘুরেও অনেকেই টাকা পাচ্ছে না। তাই লিপিকে আব্দুল কুদ্দুস জিএম স্যার ও শাহীনুর বেগম (রায়পুর জোনাল অফিসের ইনচার্জ ),দ্বয়ের পরামর্শ অনুযায়ী মৃত্যু গ্রাহক আবুল খায়েরের জাল স্বাক্ষর করা হয় এবং লিপিকে দিয়ে তার নামে একটা এফডিআর করিয়েছি। আপনারা এটার পিছনে আর হাঁটবেননা। আমরা লিপিকে দ্রুত টাকা দেওয়ার ব্যাবস্থা করবো। মৃত গ্রাহককে জীবিত দেখিয়ে তার স্বাক্ষর নকল করলেন কেন? প্রশ্ন করলে তার উত্তর দিতে পারেন নি "
অভিযোগের বিষয়ে রায়পুর জোনাল অফিসের ইনচার্জ শাহীনুর বেগম কোন প্রশ্নের সদুত্তর না দিয়ে সকল প্রশ্নের উত্তর এড়িয়ে মুঠোফোনে বলেন, আমি কিছু জানিনা সালেহ আহমেদ ও জেলার ব্জিএম আঃ কুদ্দুস সাহেব জানে আপনারা তার কাছে লিপিকে নিয়ে যান। মামলা করেন, দেশের সকল পত্রিকায় নিউজ করে যা করতে পারেন, করেন। " এটা বলে কল কেটে দেন।
অভিযুক্ত আব্দুল কুদ্দুস তার উপর আনীত অভিযোগ জাল স্বাক্ষরের সত্যতা স্বীকার করে বলেন, আমি জানি জাল স্বাক্ষর আইনত অপরাধ তবু আমিই সালেহ আহমেদ কে জাল স্বাক্ষরের বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছি, যাতে গ্রাহক টাকাটা পায়। সবকিছুর জন্য দায়ী সালেহ আহমেদ। আমি তো গ্রাহককে ভালো করে চিনিও না। "
অভিযোগের বিষয়ে বর্তমান জেলা ইনচার্জ সায়েফ উল্ল্যাহ বলেন, জাল স্বাক্ষর করে প্রতারণা করাটা আইনগত গুরুতর অপরাধ। এটার জন্য আমি দুঃখিত তবে কেন এমনটা করেছে আমি একটু জেনে নেই। এ বিষয়ে আমরা অন্যান্য বীমা কোম্পানি প্রতিনিধির সাথে আলাপ করেছি, তারা বলেছে যদি কোন গ্রাহকের পলিসি মেয়াদোত্তর হলে ও গ্রাহক যদি মারা যায় তাহলে মৃত্যুদাবীর জন্য আবেদন করবে। যদি অন্য কোন উপায় অবলম্বন করে তা দন্ডনীয় অপরাধ।
অভিযোগের বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইমরান খান মুঠোফোনে বলেন, মৃত ব্যক্তির স্বাক্ষর জাল করে প্রতারণা করা এটা অত্যন্ত দুঃখজনক। ভুক্তভোগীকে একটা অভিযোগ দিতে বলেন, আমি অভিযোগ দেখে আইনগত ব্যবস্থা নিব। "
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোঃ হারুনুর রশিদ
বার্তা সম্পাদক : জাকির হোসেন শাকিল
আইন উপদেষ্টা : এ্যাডভোকেট মুহাম্মদ আলমগীর হোসাইন
"এইচ বাংলা মিডিয়া কর্তৃক প্রকাশিত -দেশ যুগান্তর"
অফিস : পুরানা পল্টন, ঢাকা- ১০০০।
ই-মেইল : news.deshjugantor@gmail.com
যোগাযোগ : 01763592492
Copyright © 2024 দেশ যুগান্তর. All rights reserved.