“সাইবার পুলিশ বগুড়া” কর্তৃক কর্মজীবী নারীর নামে কুরুচীপূর্ণ মন্তব্য ইমেইলে প্রচারকারী যুবক গ্রেফতার।
বগুড়া শহরের একটি পত্রিকা অফিসে কর্মরত ভুক্তভোগী এক নারীর নামে কে বা কাহারা তাহার নাম ও ছবি ব্যবহার করে তাহার চারিত্রিক বিষয়ের মিথ্যা, বানোয়াট ও কাল্পনিক কথা তুলে ধরে জঘন্য ভাষায় একটি মেইল বগুড়ার সাংবাদিকদের ইমেইলে পাঠায়। বিষয়টি নারী ভুক্তভোগী পুলিশ সুপার বগুড়া মহোদয়কে অবহিত করে বগুড়া সদর থানায় লিখিত অভিযোগ দিলে বগুড়া সদর থানার মামলা নং-৬২, তারিখ- ২৫ জুন, ২০২১; ধারা- ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, ২০১৮ এর ১৮(১)/২৫(১)(ক)/২৯(১); রুজু হয়। মামলার তদন্তভার দেওয়া হয় জেলা পুলিশের সাইবার ইউনিটে। সাইবার পুলিশ বগুড়ার এক্সপার্ট টিম ২৪ ঘন্টার মধ্যে ভুয়া ইমেইল এর পিছনে লুকিয়ে থাকা আসল ব্যক্তিকে খুজে বের করতে সক্ষম হয় । তদন্তে জানা যায় ভুক্তভোগী নারীর নিকট আত্মীয় শামীম এই জঘন্য কাজটি করেছে । শামীম ইমেইল প্রেরনের সাথে সাথে ইমেইল একাউন্টটি ডিলেট করে দেয়।
সূত্রোক্ত মামলার প্রেক্ষিতে বগুড়া জেলা পুলিশ সুপার মোঃ আলী আশরাফ ভূঞা (বিপিএম-বার) এর সার্বিক দিক নির্দেশনায়,অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) আলী হায়দার চৌধুরীর তত্ত্বাবধানে, জেলা পুলিশের সাইবার ইউনিটের ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক মোঃ এমরান মাহমুদ তুহিনের নেতৃত্বে অত্র মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই (নিরস্ত্র) মোঃ শওকত আলম সঙ্গীয় অফিসার ফোর্সসহ ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায়, নিখুত গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে সূত্রোক্ত মামলার অজ্ঞাতনামা আসামীকে সনাক্তপূর্বক গত (১জুলাই) বৃহস্পতিবার ঢাকা মহানগরীর, হাতিরঝিল থানাধীন, ২১১/বি উলন, পশ্চিম রামপুরা এর ভাড়া বাসা হইতে আসামীকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃত আসামী হলোঃ
১। মির্জা শামীম হাসান (৩১), পিতা মির্জা সেলিম রেজা, বর্তমান ঠিকানাঃ ২১১/বি, উলন, পশ্চিম রামপুরা, ঢাকা ১২১৯; অস্থায়ী ঠিকানাঃ সাং ছিলিমপুর, থানা ও জেলা বগুড়া, স্থায়ী ঠিকানাঃ সাং জোরগাছা,থানা সারিয়াকান্দি, জেলা বগুড়া।
গ্রেফতারকৃত আসামীর হেফাজত হতে উদ্ধারকৃত আলামতঃ
১। একটি কালো রংয়ের OPPO মোবাইল ফোন ।
২। একটি সাদা রংয়ের TITANIC বাটন মোবাইল ফোন।
৩। একটি ডেস্কটপ কম্পিউটার মনিটরসহ।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত আসামী জানায় যে, বাদিনী সম্পর্কে তার চাচিমা। তার চাচা ঢাকায় চাকুরি করে এবং চাচি বগুড়া শহরস্থ একটি পত্রিকা অফিসে কাজ করে। গ্রেফতাকৃত আসামী তার চাচিকে মনে মনে পছন্দ করতো বিষয়টি তার চাচি জানতে পারলে আসামীর সহিত যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। ফলে আসামী চাচীর উপর ক্ষিপ্ত হয়ে বগুড়া শহরের সাংবাদিকদের ইমেইল এ্যাড্রেস সংগ্রহ করিয়া তাহার চাচির নাম ও ছবি ব্যবহার করে তাহার চারিত্রিক বিষয়ের মিথ্যা, বানোয়াট ও কাল্পনিক কথা তুলে ধরে জঘন্য ভাষায় একটি মেইল তাদের ইমেইলে পাঠিয়ে দেয়। গ্রেফতারকৃত আসামীর উদ্দেশ্য ছিল উক্ত মেইলের কারনে তার চাচা-চাচির সম্পর্ক নষ্ট হয়ে গেলে সেই সুযোগে সে ভিকটিমকে তার কাছে ঢাকায় নিয়ে যাবে। আসামীর জব্দকৃত ডিভাইস গুলো পর্যালোচনা করে দেখা যায় যে, আসামীর ডিভাইসে এজাহারে উল্লেখিত ইমেইল ও সেই ইমেইল হতে বগুড়া জেলার সাংবাদিকদের ইমেইলে তাহার চাচিমার চারিত্রিক বিষয়ের মিথ্যা, বানোয়াট ও কাল্পনিক কথাবার্তা লিখে মেইল পাঠানোর তথ্য প্রমান পাওয়া যায়। এছাড়াও আসামী শামীম বিভিন্ন সময়ে কু-কর্মে ব্যবহারের উদ্দেশ্যে বিভিন্ন নামে ৯৬টি ইমেইল এ্যাড্রেস খোলে যাহা তার কম্পিউটারের ফাইলে সংরক্ষণ করা আছে। এছাড়াও আটকৃত আসামী নিজেকে কখনো ইঞ্জিনিয়ার, কখনো আইনজীবী, কখনো লেখক, আবার কখনো সাংবাদিক বলে পরিচয় দেয় এবং সমাজের অনেক বড় বড় পদের লোকজনের সাথে তার, অবাধ চলাফেরা ও বন্ধুত্তপূর্ণ সম্পর্ক আছে বলেও দাবি করে।
গ্রেফতারকৃত আসামী মির্জা শামীম হাসান নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটিতে E.MBA এর অষ্টম সেমিষ্টারে অধ্যয়নরত বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়। গ্রেফতারকৃত আসামীকে উল্লেখিত মামলায় গ্রেফতারপূর্বক বিজ্ঞ আদালতে প্রেরন করা হইয়াছে।