দেশের শহর গ্রাম গঞ্জে ব্যাঙের ছাতার মত গজিয়ে উঠেছে নানা প্রতিষ্ঠান। আর এসব প্রতিষ্ঠানের নানা বিজ্ঞাপনে ছেয়ে যাচ্ছে পুরো শহর গ্রাম আর অলি-গলি। অধিকাংশ বিজ্ঞাপনই লাগানো হচ্ছে সড়ক-মহাসড়কের পাশে গাছে গাছে পেরেক ঠুকে। এতেকরে সড়কের গাছগুলো রয়েছে ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। এরই মধ্যে মরে গেছে অনেক গাছ।
অপ্রাপ্ত বয়স্ক গাছগুলোও রেহাই পাচ্ছেনা বিজ্ঞাপনের পেরেকের নিষ্ঠুর আঘাত হতে। বিজ্ঞাপন লাগানো প্রতিষ্ঠান গুলোর মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন কোচিং সেন্টার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ডায়াগনস্টিক সেন্টার, নানান অখ্যাত অনিবন্ধিত প্রতিষ্ঠান, চিকিৎসক ও রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গদের ফেস্টুন।
মানবজীবনের অপরিহার্য অক্সিজেন দাতা পরিবেশের সবচেয়ে বড় বন্ধু এই গাছ। আর এই গাছই মানুষের নির্মম অত্যাচার থেকে রক্ষা পাচ্ছে না। কোন নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করেই যে যেখানে পারছে পেরেক বা তারকাটার মাধ্যমে গাছকে বিজ্ঞাপনের জন্য ব্যবহার করে যাচ্ছে। এভাবে দিনের পর দিন গাছকে অনেকটাই বিজ্ঞাপন বুথের মত ব্যবহার করায় ক্ষুব্ধ সচেতন নাগরিক সমাজ ও পরিবেশবাদীরা।
মানুষসহ প্রাণিকুলের বেঁচে থাকার জন্য পরিবেশের প্রধান উপাদান হচ্ছে গাছ। এই গাছেরও যে প্রাণ আছে, অনুভূতি আছে তা হয়তো আমরা ভুলতে বসেছি। গাছ তার নিজের সবকিছু বিলিয়ে দিয়ে আমাদের জীবন বাঁচিয়ে রাখছে। আর উপকারের প্রতিদান হিসেবে গাছে পেরেক মেরে মানুষ তারই প্রতিদান দিচ্ছে। আমাদের বিবেককে জাগ্রত করা দরকার।
শহরের সৌন্দর্য রক্ষা ও পরিচ্ছন্নতা বিধানে সরকার ২০১২ সালে ‘দেয়াল লিখন ও পোস্টার লাগানো (নিয়ন্ত্রণ) আইন-২০১২’ পাস করে। কিন্তু এই আইনের কোন কার্যকারিতা না থাকায় তা শুধু কাগজবন্দী হয়েই পড়ে আছে।
উক্ত আইনের ‘ধারা ৪ অনুযায়ী নির্ধারিত স্থান ব্যতীত অন্য কোন স্থানে দেয়াল লিখন বা পোস্টার লাগানো যাইবে না।’ কিন্তু এসব দেখার যেন কেউ নেই। তাছাড়া যেভাবে পেরেক দিয়ে এসব বিজ্ঞাপন লাগানো হচ্ছে সামান্য ঝড় বাতাসে এগুলো ছিড়ে গিয়ে পথচারীদের মাথার পড়ে প্রানহানীর মত দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
অবিলম্বে ‘দেয়াল লিখন ও পোস্টার লাগানো (নিয়ন্ত্রণ) আইন-২০১২’ মোতাবেক সমস্ত সাইনবোর্ড, ফেস্টুন, ব্যানার অপসারন করা প্রয়োজন। এই আইনের বাস্তবায়ন আর প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাগনসহ প্রভাবশালী মহলের সহায়তাই পারে পেরেকমুক্ত বৃক্ষ উপহার দিতে।
যেসকল প্রতিষ্ঠান গাছে গাছে টানানো এসব সাইনবোর্ডসহ বিভিন্ন বিজ্ঞাপনের পোস্টার লাগিয়েছেন, তাদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষের সদয় সুদৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন সচেতন মহল।
দেশ যুগান্তর/এইচআর