সিলেটের বিশ্বনাথে অন্তঃসত্ত্বা নারীকে ধর্ষণ করে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ওই নারী সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার (২১ আগস্ট) মারা গেলে তার লাশ অ্যাম্বুলেন্সে নিয়ে রাতভর ঘুরাঘুরি করা হয়।
পরে লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্সকে বিশ্বনাথের লামাকাজি এলাকার স্থানীয় জনতা আটক করে পুলিশে খবর দিলে আজ রবিবার (২২ আগস্ট) সকালে গিয়ে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে।
এর আগে শুক্রবার (২০ আগস্ট) রাতে অন্তঃসত্ত্বা নারীকে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনায় সে রাতেই দুজনকে আটক করে বিশ্বনাথ থানা পুলিশ।
লামাকাজি ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ড সদস্য (ইউপি মেম্বার) আবুল কালাম সাংবাদিকদের জানান, তাঁর ওয়ার্ডের মির্জারগাঁওয়ে বাবার বাড়িতে একা থাকতেন মখলিছুন বেগম (৩২) নামের ওই নারী। আগে তার এক বিয়ে হয়েছিলো। সেই স্বামীর ঘরে দুই সন্তানও রয়েছে। তিনি মানুষের বাড়িতে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। তাঁর বাবা আবদুস সালাম চাকরিসূত্রে সিলেট শাহপরাণ এলাকায় থাকেন।
আবুল কালাম আরোও জানান, গত শুক্রবার (২০ আগস্ট) সন্ধ্যারাতে স্থানীয়দের সূত্রে মখলিছুনের বাবা আব্দুস সালাম খবর পান তার মেয়ে গুরুতর অসুস্থ। খবর পেয়ে তিনি বাড়িতে গিয়ে দেখেন মখলিছুন বেগম বিবস্ত্র ও রক্তাক্ত অবস্থায় ঘরে পড়ে আছেন। আব্দুস সালাম তাকে (স্থানীয় ইউপি মেম্বার আবুল কালাম) খবর দিলে রাত ১০টার দিকে পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থলে যান তিনি।
পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে স্থানীয় রইছ আলী নামে এক বয়স্ক ব্যক্তি মখলিছুন বেগমকে দেড় মাস আগে বিয়ে করেছেন বলে জানান। তবে মখিলছুন বেগম ৫ মাসের অন্তঃসত্ত্বা কীভাবে হলেন সেটি তিনি জানেন না বলে পুলিশকে বলেন।
এসময় বিশ্বনাথ থানা পুলিশ রইছ আলী ও স্থানীয় কমলা মিয়া- এ দুজনকে আটক করে থানায় নিয়ে যায় এবং মখিলছুন বেগমকে ওসমানী হাসপাতালে প্রেরণ করে।
এদিকে, শনিবার (২১ আগস্ট) রাত ১২টার দিকে মখলিছুনের বাবা আব্দুস সালাম ও স্থানীয় ইউপি মেম্বার আবুল কালাম মামলা দায়েরের জন্য বিশ্বনাথ থানায় অবস্থানকালে হঠাৎ খবর পান- লামাকাজিতে একজন নারীর লাশ নিয়ে একটি অ্যাম্বুলেন্স অনেকক্ষণ ধরে ঘুরাঘুরি করছে। পরে সেটি স্থানীয় জনতা আটক করে রাখেন।
খবর পেয়ে মখলিছুনের বাবা আব্দুস সালাম ও স্থানীয় ইউপি মেম্বার আবুল কালাম লামাকাজিতে গিয়ে মখলিছুনের লাশ শনাক্ত করেন।
ঘটনাস্থলে থাকা বিশ্বনাথ থানার এস.আই অলক দাস সাংবাদিকদের বলেন, বর্তমানে আমরা লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করছি। ওসমানী হাসপাতাল থেকে ওই নারীর লাশ এখানে কীভাবে এলো, সে বিষয়ে এখনও বিস্তারিত বলতে পারছি না।
তিনি বলেন, ওই নারীকে শুক্রবার রাতে তার বাবার ঘরে রক্তাক্ত ও বিবস্ত্র অবস্থায় পাওয়া যায়। এ ঘটনায় স্থানীয় রইছ আলী ও কমলা মিয়া নামের দুজনকে শুক্রবার রাতেই আটক করি আমরা। এর মধ্যে রইছ আলী নিজেকে ওই নারীর স্বামী দাবি করছে বলে তিনি জানান।
এব্যাপারে বিশ্বনাথ থানার অফিসার ইন- চার্জ (ওসি) গাজী আতাউর রহমান বলেন, এঘটনায় দুই জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং মামলা দায়ের করা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে তিনি জানান।