শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৬:২২ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
কড়ৈতলি বাজারে নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে চলাচলের সড়কের উপর ভবন নির্মাণের অভিযোগ রায়পুরে পুরান বেড়ী ইসলামী যুব সংঘ’র ফ্রি চিকিৎসা ক্যাম্প অনুষ্ঠিত রায়পুরে কলেজ ছাত্রশিবিরের উদ্যোগে নবীন বরণ অনুষ্ঠিত সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে ধানের চারা ও নগদ টাকা পেয়ে খুশি লক্ষ্মীপুরের বন্যার্ত কৃষকেরা চরপাতা ফোরামের নির্বাচন অনুষ্ঠিত রায়পুরে চরমোহনা ইউনিয়ন জামায়াতের ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্পিং ও ঔষধ বিতরণ রায়পুরে ইসলামী ব্যাংকের গ্রাহক সমাবেশ ও মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত যুবদল নেতার কাছে অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাওয়ায় সাংবাদিককে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ, থানায় অভিযোগ যুবদল নেতা ইকবালের নেতৃত্বে সৌদি প্রবাসীর জমি দখল করে দেওয়ার অভিযোগ রায়পুরে বন্যায় পান চাষীদের ব্যাপক ক্ষতি, দিশেহারা পান চাষী 

মহেশপুরে কুদলা নদীর উপর ব্রীজ না থাকায় চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে ১০ গ্রামের মানুষ!

শেখ শফিউল আলম লুলু, ঝিনাইদহ :
  • প্রকাশের সময় : রবিবার, ১৩ জুন, ২০২১
  • ৫৪৪ বার দেখা হয়েছে

একটি ব্রীজের জন্য ১০ গ্রামের হাজার হাজার মানুষকে ১২ কিঃমিঃ ঘুরে নিত্যদিনের প্রয়োজনীয় কাজ করতে হয়। একই ব্রীজের এক পাড়ের মানুষদের অন্য পাড় থেকে কৃষিপন্য আনতে নিদারুন কষ্ট করত হয়। ব্রীজটির অবস্থান ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার যাদবপুর ইউনিয়নের ভারতীয় সীমানা ঘেষা কুদলা নদীতে। নদীর পূর্ব পাশে মাটিলা, লেবুতলা, যাদবপুর ও কানাইডাঙ্গা। পশ্চিম পাশে রয়েছে মেকরধজপুর, দরবেশপুর, রুলি, বরবা, মামিনতলা, গোপালপুর, কুটিপাড়া, বাঁশবাড়িয়া, সীমান্তসহ প্রায় ১০টি গ্রাম। আর দক্ষিণে সামান্য দূরই ভারতীয় সীমা রেখা। তবে ওই এলাকায় ভারতীয়দের কোন তার কাটার বেড়া নেই। ফলে ওই এলাকাটি বহুকাল ধরে চোরাকারবারী ও মানবপাচারকারীরা নিরাপদে রুট হিসাবে ব্যবহার করে আসছে। ব্রীজটি না থাকায় বছরের বেশির ভাগ সময়ই এলাকাটি বর্ডার গার্ড বাংলাদশ (বিজিবি) সদস্যদের নিয়ন্ত্রণ করত সমস্যার সম্মুখিন হন। তাদেও এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্ত যেতে এক কিলামিটারের পথ প্রায় ১২ কিলামিটার পথ পাড়ি দিয়ে সীমান্ত টহলের কাজ করতে হয়। বিশেষ করে বর্ষা মৌসুমর সমস্যার অন্ত থাকে না বলে জানালেন বিজিবি জায়ানরা।

তবে ব্রিটিশ শাসনামলে এখানে একটি পাকা ব্রীজ ছিল। এই ব্রীজের সূত্র ধরেই নদীর দু’পাড়ের মানুষের মধ্যে কৃষি ও ব্যবসা বানিজ্য গড়ে উঠে। তবে দেশ স্বাধীনের আগেই ব্রীজটি ভেঙ্গে যায়। ফলে নদীর পাড়ের দু’পাশের মানুষ চরম দূর্ভোগে পড়ে। দেশ স্বাধীনের ৫০ বছর এখনও ব্রীজ না হওয়ায় নদীর পাড়ের মাটিলা গ্রামের কয়েকটি পরিবার অপর পাশে থাকা প্রায় দুইশত বিঘা জমি বিক্রি করে দিয়েছে। বর্ষা মৌসুমে দুই পাশের মানুষের যাতায়াতের একমাত্র পথ বাঁশের সাকো। আর সু-মৌসুম হেটে পানি পার হয় তাদের প্রয়োজনীয় কাজ সম্পন্ন করতে হয়।

সম্প্রতি  স্থানীয়দের উদ্দ্যোগে নদীর মাঝামাঝি বাঁশের ছোট্র একটি সাঁকো তৈরি করা হয়েছে। সাঁকোর দুই পাশে মাটি দিয়ে বাধিয়ে দেওয়া হয়েছে। যেন বর্ষার মৌসুমে সহজে পায়ে হেঁটে বাঁশের সাঁকো হয়ে পার হওয়া যায়। ব্রীজটি করার জন্য ভুক্তভোগি দু’পাশের মানুষ বহুবার জনপ্রতিনিধি ও সরকারী বিভিন্ন দপ্তরে ধর্ণা দিয়েছে, কিন্তু কেউ তাদের কথা রাখেনি।

ব্রীজের পূর্ব পাশের গ্রাম মাটিলার বাসিন্দা বয়বৃদ্ধ ওয়াজেদ আলী জানান, আমাদের গ্রামের তরফদার পরিবারের নদীর ওই পাশে একশত বিঘা জমি ছিল কিন্তু চাষ করার পর বাড়িতে আনতে অসুবিধার কারণে সে সব জমি বিক্রি করে দিয়েছেন। নদীর পশ্চিমপাশে মাত্র চার থেকে পাঁচ কিলামিটার দুরে রুলি মাধ্যমিক স্কুল ও শহিদুল ইসলাম কলেজ এবং ফাজিল মাদরাসা রয়েছে। যেখানে আমাদের এলাকার ছেলে মেয়েরা লেখাপড়া করে। বর্ষার মৌসুম এলেই তাদের প্রায় ১২ কিলামিটার ঘুরে স্কুল কলেজে যেতে হয়। এছাড়া এই নদীটি দু’পাশে এখন নদী খকারা দখল করে নিছে। ফলে মরে যেতে বসেছে নদীটি।

ব্রীজের পশ্চিম পাশের গ্রাম মকরধজপুর গ্রামের বাসিন্দা খেলাফত মন্ডল, দেলোয়ার হোসেন ও হবিবুর রহমান জানান, ব্রীজটি করা একান্ত প্রয়োজন। বর্ষার মৌসুমে দু’পাশের মানুষের কোন যোগাযোগ থাকে না। ফলে লেখাপড়া, কৃষি ও ব্যবসা বাণিজ্যসহ সকল কাজ বন্ধ হয়ে যায়। তারা আরো জানান, এখানে ব্রীজ না থাকায় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সদস্যদের টহল কাজে বিঘ্ন ঘট। এ সুযাগ কাজে লাগিয়ে চোরাকারবারীরা কোদলা নদী রুট ধরেই গরু, মাদক ও মানব পাচার করে থাকে।

ভারতীয় সীমান্ত ঘেষা যাদবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এবিএম শাহীদুল ইসলাম নদী পাড়ের মানুষের দূর্ভোগের কথা স্বীকার করে জানান, ব্রীজটি করার জন্য প্রকল্প পাঠানো হয়েছে। প্রকল্প পাশ হলেই নির্মাণ কাজ শুরু হবে। মহশপুর ৫৮বিজিবি’র মাটিলা ক্যাম্পের নায়ক সুবেদার সোহরাব হাসন জানান, কোদলা নদীর প্রস্তাবিত এই ব্রীজটির পূর্ব পাশে অবস্থিত মাটিলা বিজিবি ক্যাম্প। নদীর পার হয়ে ও পাশ (পশ্চিম) আমাদের আরো তিন কিলোমিটার পর্যন্ত মাটিলা বিওপির আওতায় রয়েছে। যখন নদীতে পানি থাকে, তখন নদীর পশ্চিম পাশে কোন সমস্য হলে প্রায় ২০ কিলামিটার ঘুরে ঘটনাস্থলে যেতে হয়। অথচ ব্রীজটি নির্মিত হলে আধা কিলামিটারের কম পথ পাড়ি দিলে নদীর অপর প্রান্ত পৌঁছানো যাবে। ব্রীজটির কারণে আমাদের সীমান্ত টহল যেমন সমস্যা হচ্ছে, ঠিক তেমনি স্থানীয় বসবাসকারীদের যাতায়াত ও কৃষি কাজে সমস্যা হচ্ছে বলেও জানান এই বিজিবি’র বিওপি ক্যাম্প নায়ক।

ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলা এলজিইডি’র প্রৌকশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, ব্রীজটি না হওয়ায় কয়েক গ্রামের মানুষের যাতায়াত সমস্যা হচ্ছে। বিশেষ করে বর্ষা মৌসুম এলেই তাদের দূর্ভোগ বেড়ে যায়। ইতোমধ্যে আমরা ব্রীজটি তৈরির প্রাথমিক পর্যায়ের যাবতীয় কাজ সম্পন্ন করে প্রস্তাবনা পাঠিয়েছি। পাশ হলে তৈরির কাজ শুরু হবে বলে জানান তিনি।

দেশ যুগান্তর/আরজে

আপনার মন্তব্য লিখুন

আমাদের YouTube চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব করুন

এ বিভাগের আরো সংবাদ
Don`t copy text!
© All rights reserved © 2021 Desh Jugantor
Design & Developed by RJ Ranzit
themesba-lates1749691102
Don`t copy text!