মঙ্গলবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:২৩ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
বালিথুবা পশ্চিম ইউনিয়নের ১, ২ ও ৩ নং ওয়ার্ড বিএনপির কর্মী সম্মেলন অনুষ্ঠিত সৎ এবং নিষ্ঠার সাথে দেশকে ভালোবাসতে হবে—জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আলমগীর হোসেন যুবদলের সদস্য সচিবকে নিয়ে গুজব রটানোর প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ‎জমিসংক্রান্ত জেরে শিশুকে নির্যাতন করে হত্যা চেষ্টা, থানায় অভিযোগ ‎ নিউজ প্রকাশের পর পরিসংখ্যানের জাকির কর্মকর্তা থেকে কর্মচারী ইতালিতে ৭ই নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি  দিবস পালন করা হয়   ‎যৌন-হয়রানিসহ ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ রায়পুরের পরিসংখ্যান কর্মচারী জাকিরের বিরুদ্ধে ‎ রায়পুরে ৬নং কেরোয়া ইউনিয়নে জামায়াতের কর্মী সম্মেলন অনুষ্ঠিত ইতালি ভিস্নেজা প্রবীনছের কাউন্সিলর এর মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত রায়পুর সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের আলোচিত সেই সোহেলকে অব্যাহতি

মাদুর বিক্রির মাঝে ভাগ্য খুঁজে ফিরছে মহর

নিয়ামুল ইসলাম, ধুনট, বগুড়া :
  • প্রকাশের সময় : রবিবার, ৫ সেপ্টেম্বর, ২০২১
  • ৭৩৬ বার দেখা হয়েছে

মহর হাঁটছে। মহর ঘামছে।’মাদুর আছে মাদুর’ বলে বলে মহর হাঁকছে।তপ্ত দুপুরে মহরের পায়ের নীচে উত্তপ্ত পিচঢালা পথ। মহরের মাথায় একবোঝা মাদুর। মাদুরের উপরে আগুন ঝরাচ্ছে কাঠফাটা রোদ্দুর। মহর হেঁটেই চলেছে। উচ্ছাসে। ভাগ্য খুঁজে পাবার প্রয়াসে। পঞ্চাশোর্ধ মহর ঘুরে বেড়াচ্ছে ফকিরহাট সদর সহ আশপাশের এলাকাগুলোতে। গ্রামে গ্রামে বাড়ী বাড়ী গিয়ে ফেরী করে সে মাদুর বিক্রি করছে।

মহর এসেছে গোপালগঞ্জ থেকে। গোপালগঞ্জের হরিদাসপুর গ্রামে তার দুটো ছেলে আছে। আছে বউ।ছেলে দুটো প্রাথমিকে লেখাপড়া করছে। পেটের ভাত যোগাতে,সংসার চালাতে তাকে মাদুর বিক্রির পেশায় নামতে হয়েছে। দাদনের কষাঘাতও তাকে নিয়মিত বাধ্য করে চলেছে মাদুর বিক্রি করতে।

গোপালগঞ্জ থেকে প্রতিদিনই মহর কিছু বেডশিট, মশারী আর মাদুর নিয়ে বের হয়।শেষ রাতে ঢাকা থেকে ফেরা পরিবহন গুলোকেই সে বেছে নেয় ফকিরহাট আসার বেলায়।ফেরী করে বেচাকেনার বেলায় অন্যসব এলাকার চেয়ে ফকিরহাট সদরের চারপাশ ঘিরে থাকা গ্রামগুলোকেই তার বেশী পছন্দ হয়।সে জানায়, এখানকার মানুষের মনমানসিকতা ভালো। প্রচুর ঘনবসতি ফকিরহাটে।দু’চার পয়সা বাকী পড়লেও তা উঠে আসে। মহর তাই ফকিরহাটের গ্রামে গ্রামে মাদুর বিক্রি করে বেড়ায়। রোদ বৃষ্টি উপেক্ষা করে তাকে সারাদিন চলতে হয়। কোনো কোনো দিন তার যেমন বেশ মাদুর বিক্রি হয়,তেমনি কোনো কোনো দিন আবার তা অবিক্রীত থেকে যায়। বেডশিট, মশারী বা মাদুর বিক্রি হলেই মহর লাভবান হয়ে উঠতে পারেনা।দাদনের খাড়ায় আগেই ‘বলি হওয়া’ মহর লাভ পায় সামান্যই। অভাবের তাড়নায় মহর তার এলাকার এক বড়ো ব্যবসায়ীর কাছ থেকে মাদুরগুলো সাইজ ভেদে একটা নির্দিষ্ট দাম ধরে নিয়ে এসেছে।সেখানে সে দেনা আছে। সেখান থেকে সে দাদন নিয়েছে।

বেডশীট, মশারীরও তাই একটা নির্দিষ্ট দাম ধরা আছে।ওই দামের বাইরে বাড়তি দামে বিক্রি করতে পারলেই কেবল তার পকেটে টাকা ঢুকছে। মহর জানালো, “তার জীবনটা খুব কষ্টে চলছে। পুঁজিপাট্টা নেই বলে লাভের গুড় যাচ্ছে মহাজনের পকেটে। মহাজনের দোষ দিয়ে কি হবে,সে কি একটু বেশি ব্যবসা না রেখে আমাকে এমনি এমনি দিয়ে দেবে”!মহর তার আশার কথা জানালো, দাদন শোধরাতে পারলে এ ব্যাবসা সে নিজেই করবে।ঢাকা থেকে নিজের মালিকানায় মাদুর, মশারী, বেডশিট এনে ফকিরহাট এলাকায় ব্যাবসা বাড়াবে।মহর মনে করে, তখন তার ভাগ্য ফিরবে। মহর বিশ্বাস করে, জীবন মানেই যুদ্ধ। মহর ধরে নিয়েছে, সে যুদ্ধ করছে। ভাগ্য ফেরানোর যুদ্ধের মওকা হিসেবে সে মাদুর বিক্রির পেশাকেই বেছে নিয়েছে।

আপনার মন্তব্য লিখুন

আমাদের YouTube চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব করুন

এ বিভাগের আরো সংবাদ
© All rights reserved © 2021 Desh Jugantor
Design & Developed by RJ Ranzit
themesba-lates1749691102