প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের কারণে সারাবিশ্বের মতো যুক্তরাজ্যেও বেকারত্ব বেড়েছে। গত বছরের শেষ তিন মাসে দেশটিতে বেকারত্বের হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫ দশমিক ১ শতাংশ, যা গত পাঁচ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। কারণ যুক্তরাজ্যের অর্থনীতিতে ধস নেমে এসেছে।
শুধু সেখানেই নয়, বিশ্বের বেশিরভাগ দেশেই করোনা মহামারির কারণে অর্থনীতির গতি কমে গেছে। লাখ লাখ মানুষ বেকার হয়ে পড়েছে। ছোট-মাঝারি বিভিন্ন ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে সব প্রতিষ্ঠানে কাজ করা মানুষ অসহায় হয়ে পড়েছে।
যুক্তরাজ্যের জাতীয় পরিসংখ্যান দফতরের তথ্যমতে, দেশটিতে গত অক্টোবরের শুরু থেকে ডিসেম্বরের শেষ নাগাদ চাকরিচ্যুত মানুষের হার০.৪ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।করোনা মহামারি শুরুর পর থেকেই লকডাউন জারি করে যুক্তরাজ্য। করোনার বিস্তার ঠেকাতে জারি করা হয় কঠোর বিধি-নিষেধ। মহামারির কারণে গত ৩০০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বড় আর্থিক সঙ্কটে পড়েছে দেশটি।
মহামারির মধ্যে যুক্তরাজ্যে বেকারত্ব কমাতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার পরও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়নি। বেকারত্বের হার লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছেই।
২০১৯ সালের ডিসেম্বরের তুলনায় গত বছরের ডিসেম্বরে বেকারত্বের হার ১ দশমিক ৩ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি এবং ২০২১ সালের জানুয়ারির মধ্যে বেতনভুক্ত কর্মীর সংখ্যা ৭ লাখ ২৬ হাজারের মতো কমে গেছে।
ব্রিটিশ অর্থমন্ত্রী রিশি সুনাক জানিয়েছেন, আগামী চার মাস অর্থনীতির গতি বৃদ্ধিতে কয়েক বিলিয়ন পাউন্ড ব্যয়ের প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। এছাড়া জুনের শেষ নাগাদ ধীরে ধীরে লকডাউন শিথিল করার পরিকল্পনা নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন।
আগামী ১২ এপ্রিলের আগে অনাবশ্যক ব্যবসা-বাণিজ্য ফের চালু করার অনুমতি দেয়া হচ্ছে না। প্রধানমন্ত্রী জনসনের চার ধাপের কৌশল অনুযায়ী, কিছু ব্যবসা-বাণিজ্য কমপক্ষে ২১ জুন পর্যন্ত বন্ধই থাকছে।
ওয়ার্ল্ডো মিটারের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, যুক্তরাজ্যে এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৪১ লাখ ২৬ হাজার ১৫০ জন। এদের মধ্যে মারা গেছেন ১ লাখ ২০ হাজার ৭৫৭ জন।
ইতোমধ্যেই দেশটিতে করোনা থেকে সুস্থ হয়ে উঠেছেন ২৫ লাখ ৪৮ হাজার ৬২১ জন। সেখানে বর্তমানে সক্রিয় রোগীর সংখ্যা ১৪ লাখ ৫৬ হাজার ৭৭২ জন। এছাড়া আশঙ্কাজনক অবস্থায় রয়েছেন ২ হাজার ৪৬৯ জন।