যৌন হয়রানি সহ বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগে লক্ষ্মীপুের চন্দ্রগঞ্জ কফিলউদ্দিন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ এর উপাধ্যক্ষ মোঃ মুজাহিদের স্বেচ্ছায় পদত্যাগ ও বহিষ্কারের দাবিতে মানববন্ধন করেছে কলেজ শিক্ষার্থীরা।
গতকাল (১৩ই আগস্ট) মঙ্গলবার বেলা ১১ টার দিকে কফিল উদ্দিন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ প্রাঙ্গণে শিক্ষার্থীদের এই মানববন্ধ অনুষ্ঠিত হয়।
এ সময় শিক্ষার্থীরা কলেজ প্রাঙ্গনে অবস্থান করলে সাংবাদিকগণ আসছে শুনে অধ্যক্ষ প্রিয়ব্রত চৌধুরী শিক্ষার্থীদের সাথে মিটিং করার জন্য নতুন ভবনের চার তলায় সকলকে নিয়ে যান। পরবর্তীতে কয়েক দফায় মিটিং চলে সেখানে। ১১টা থেকে ২ টা পর্যন্ত চলে এই মিটিং।
মিটিং চলাকালীন অবস্থায় ৩০ জনের বেশি ভুক্তভোগী তাদের অভিযোগগুলো জানান। উপাধ্যক্ষ মোঃ মুজাহিদের যৌন হয়রানি থেকে বাঁচতে পারেননি অসংখ্য মেয়ে। এছাড়াও প্রশ্ন ফাঁসের সাথে জড়িত বলেও অভিযোগ করেছেন বেশ কিছু শিক্ষার্থী। এর আগে অনেকবারই শিক্ষকদের কাছে বিচার দেয়া হলেও কোন পদক্ষে নেননি তারা।
দ্বাদশ শ্রেণির এক ছাত্রী বলেন, আমার কলেজ আইডি কার্ডে সমস্যা ছিল। স্যার কে জানালে স্যার আমার হোয়াটসঅ্যাপ নাম্বার নিয়ে যান।পরবর্তীতে তিনি স্বামী-স্ত্রীদের মত অনেক বাজে বাজে কথা বলে। তারপর একদিন কলেজে আসলে। আইডি কার্ডের কথা বলে অফিস রুমে নিয়ে যান। এবং আমার শরীরে খারাপ ভাবে হাত দেয়। তারপর বলেন তাকে খুশি করতে। বিষয়টি অধ্যক্ষ কে জানালে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি।
ভুক্তভোগী আরেক শিক্ষার্থী জানান, পরীক্ষা চলাকালীন স্যার আমাকে মুখে না বলে শরীরের দুহাত দিয়ে মাঝখানে নিয়ে জান। আমি চিৎকার দিলে সবাই তাকিয়ে থাকে। তখন উনি বলেন তোরা তো আমার মা।
ডিগ্রি দ্বিতীয় বর্ষের এক শিক্ষার্থী জানান, স্যার সব সময় বলেন তার সাথে লেনদেন ক্লিয়ার রাখলে বাসায় প্রশ্ন চলে যাবে। আমাদের বাসায় যদি প্রশ্ন চলে যায় তাহলে আমরা পড়াশোনা করছি কেন? তাহলে এই পড়াশোনার মূল্য কি?
অভিযুক্ত উপাধ্যক্ষের মুঠোফোনে বার বার কল দিয়ে না পাওয়ায় তার বক্তব্য নেওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে অধ্যক্ষের সাথে কথা বলতে চাইলে তিনি এই বিষয়ে কথা বলতে ইচ্ছুক হননি।
উল্লেখ্য, আগের দিন রাত ১১ টায় কফিল উদ্দিন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের সমন্বয়ক মারুকে হুমকি দিয়ে আসেন কফিলউদ্দিন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের শিক্ষক আলতাফ হোসেন সহ কয়েকজন লোক। এ সময় বিভিন্ন স্লোগানে স্লোগানে ভরে যায় ক্যাম্পাস। পরবর্তীতে আলোচনা শেষে শিক্ষার্থীরা ২৪ ঘন্টা আল্টিমেটাম দিয়েছেন। শিক্ষার্থীরা বলছেন আমাদের অধ্যক্ষ তার সাফাই গাইছে। তার পক্ষে কথা বলছে পরবর্তীতে আমরা কঠোর অবস্থানে যাবো।
দেশ যুগান্তর/আরজে