নুরুল আমিন ভূইয়া দুলাল, নিজস্ব প্রতিবেদক: লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে ৩ নং চরমোনাই ইউনিয়নে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে ফল ফলাদি গাছ কর্তন ও বাড়ির রাস্তার পাশে দেওয়া বেড়া ভেঙ্গে ফেলে প্রতিপক্ষরা।
গত ২২ সেপ্টেম্বর রবিবার সকাল দশটার সময় রায়পুরের ৩ নং ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডের রাবণ গো বাড়িতে এই ঘটনা ঘটে। প্রতিপক্ষরা পিনু আক্তার (৪০) নামে অসহায় বিধবার দখলীয় সম্পত্তি বেদখল করার জন্য হাজেরা বেগম (৫০) ও তার মেয়ে বিউটি আক্তার (২৫) সহ ভাড়াটিয়া লোক দ্বারা বিভিন্ন ফলের গাছ ও সুপারি গাছ কেটে ফেলে। এবং বাড়ির নিরাপত্তার জন্য বাড়ির পাশে দেয়া টিনের বেড়া ভেঙে ফেলে।
এদিকে এ নিয়ে ৩ নং ইউপি চেয়ারম্যান শফিক পাঠানের কাছে এই বিরোধ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এদের এই সমস্যা নিয়ে আমি কাগজপত্র পর্যালোচনা করে সালিশের মাধ্যমে সীমানা চিহ্নিত করে দিয়ে আসি।
এরপর গাছ কর্তন জোরপূর্বক বাড়ির নিরাপত্তার জন্য টিনের বেড়া ভেঙ্গে ফেলার সম্পর্কে আমি জানতে পারি।
এদিকে ভুক্তভোগী পিনু আক্তার এই ঘটনায় আকস্মিকতায় হতবিহবল হয়ে রায়পুর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন ২২ শে সেপ্টেম্বর। এই অভিযোগের ভিত্তিতে রায়পুর থানার এসআই শফিক ঘটনাস্থলে তদন্তে জান, এসময় এলাকার স্থানীয় প্রতিনিধি ৮ নং ওয়ার্ডের মেম্বার মুরাদ ও উপস্থিত ছিলেন। রায়পুর থানার তদন্তকারী কর্মকর্তা শান্তির স্বার্থে এলাকার সাধারণ মানুষের উপস্থিতিতে বাড়ির নিরাপত্তা জন্য দেয়া টিনের বেড়াটি পুনঃ স্থাপন করে দেন। এবং উভয় পক্ষকে তাদের মালিকানা ভূমির দলিলাদি সংগ্রহ করে থানাকে অবহিত করার জন্য বলা হয়। পরে নোটিশের মাধ্যমে উভয় পক্ষকে ভূমির দলিলের প্রমাণাদি সহ থানায় হাজির হওয়ার জন্য তারিখ দিবেন বলে জানিয়ে যান।
রায়পুর থানার তদন্তকারী কর্মকর্তা ঘটনাস্থল থেকে রায়পুরে ফিরে আসলে প্রতিপক্ষ হাজরা বেগম ও তার মেয়ে বিউটি আক্তার পুনরায় ওই টিনের বেড়া ভেঙ্গে ফেলার উদ্যোগ নিলে ওই সময় পিনু আক্তার বাধা প্রদান করিলে তাকে বেদম লাঠিপেটা করে মাটিতে ফেলে দেয়। ওই সময় তার সৌর চিৎকারে প্রতিবেশীরা আসলে হামলাকারিয়া উভয় চলে যায়।
পরে পিনু আক্তার কে স্থানীয়রা আহত অবস্থায় উদ্ধার করে রায়পুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এ ভর্তি করায়।
উল্লেখিত ঘটনার সম্পর্কে জানতে চাইলে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া পিনু আক্তার বলেন, গত চার বছর পূর্বে আমার স্বামীর মৃত্যুর পর অভিযুক্ত হাজরা বেগম প্রতার লোকজন আমাদের উপর অত্যাচার নির্যাতন করে আসছে প্রতিনিয়তই। তাহারা জোরপূর্বক আমাদের সম্প্রতি বোগদখল করিয়া আসিতেছে। ঘটনার দিন তাহারা আমাদের ২০ কলাগাছ সুপারি গাছ ও বিভিন্ন ফলাদি গাছ জোরপূর্বক কেটে ফেলে। আমি বাধা দিতে গেলে আমাকে ছেনি নিয়ে তেড়ে আসে তাই আমি প্রাণ বয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে দৌড়ে গিয়ে ঘরে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দেই। পরে আমি রায়পুর থানা গিয়ে একটি তাদের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ দায়ের করিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে তদন্ত করে চলে যাওয়ার পর তারা অতর্কিতভাবে আমার উপর হামলা শুরু করে আমাকে বেধড়ক লাঠিপেটা করে, এতে আমি জ্ঞান হারিয়ে ফেলি। এরপর আমার আত্মীয়-স্বজনরা খবর পেয়ে এসে আমাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে। আমি হাসপাতালে ভর্তি থাকা অবস্থায় অভিযুক্তরা চার পাঁচ জন রাত আনুমানিক সাড়ে আটটার দিকে রায়পুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আমাকে খুঁজতে যায়। এবং আমাকে পুনরায় হামলার উদ্দেশ্যে সুযোগ খুঁজতে থাকে। ওই সময় আমি মুঠো ফোনে আমার আত্মীয়-স্বজনদেরকে খবর দিলে তাহারা দ্রুত হাসপাতালে আসলে তারা পালিয়ে যায়। তিনি আরো বলেন আমি অসহায় বিধবা একজন মহিলা তিন সন্তানের জননী আমি এলাকার জনপ্রতিনিধি প্রশাসন এর নিকট সুবিচার প্রার্থনা করি।
দেশ যুগান্তর/আরজে