লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার চর আবাবিল ইউপির কামিদ্দির বাড়ির অটো চালক রমিজের মেয়েকে বিয়ে করবে আশ্বাস দিয়ে অন্য ছেলের সাথে দিন তারিখ ঠিক হওয়া বিয়ে ভেঙ্গে দিল সুমন নামের এক স্বাস্থ্যকর্মী। ১নং চরআবাবিল ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে চেয়ারম্যান জাফর উল্লাহ দুলাল হাওলাদারের উপস্থিতিতে চেয়ারম্যানের ঘনিষ্ঠ নাজিম নামের এক লোকের মধ্যস্থতায় বিষয়টি মীমাংসা করতে গিয়ে সালিসে কিশোরীর পরিবারের লোকজনের অবর্তমানে ইজ্জতের মূল্য ২ লাখ টাকা নির্ধারণ করা হয় বলে কিশোরী ও তার বাবা-মায়ের অভিযোগ।
জানা যায়, সুমন একই ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের হাওলাদার বাড়ির দেলোয়ার হাওলাদের ছেলে ও চরআবাবিল ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের কমিনিউটি ক্লিনিকের স্বাস্থ্যকর্মী।
সরেজমিনে গেলে ভুক্তভোগি কিশোরী জানান, হায়দরগঞ্জ বাজারের নগর ক্লিনিকে চাকুরী করার সুবাধে ৫মাস আগে সুমনের সাথে তার প্রথম পরিচয়। পরিচয় থেকে গড়ে উঠে প্রেমের সম্পর্ক । সুমন আমাকে বিভিন্ন সময় কু-কর্মের প্রস্তাব দেয়। যখন জানতে পারি সুমনের দুই স্ত্রী আছে তখন থেকে সম্পর্ক থেকে এড়িয়ে চলি। সে আমাকে কল দিয়ে বিরক্ত করে। এরি মধ্যে আমার বাবা-মা আমার বিয়ে ঠিক করে। আমিও বিয়েতে মত দেই। সামনের শুক্রবার বিয়ের দিন তারিখ ঠিক হয়। এ কথা সুমন জানতে পেরে যার সাথে বিয়ে ঠিক হয়েছে সেই ছেলেকে বিয়ে না করার জন্য চাপ সৃষ্টি করে এবং বিভিন্ন হুমকি-ধমকি দিতে থাকে। আমাকে মোবাইলে হুমকি দিয়ে বলে তুই যদি ওই ছেলেকে বিয়ে করছ তাহলে তোকে- তোর পরিবারের কাউকে শান্তিতে থাকতে দিবনা। এবং ওই ছেলেকেও খুন করে ফেলবে। আমাকে কল দিয়ে বলে আমার সাথে দেখা করবে। পরে আমাদের বাড়িতে আসলে সবাই তাকে আটক রাখলে সে বিয়ে করতে অস্বীকৃতি জানায়। আমার দূর সম্পর্কের মামা নাজিম এর সমাধান করবে বলে আমার পরিবারকে আশ্বাস দিয়ে নাজিমকে ছাড়িয়ে নেয়। শুনেছি সোমবার সকালে বোর্ড অফিসে আমার পরিবারকে দুই লক্ষ টাকা দিবে বলে চেক নেয় নাজিম মামা। সেখানে আমিসহ আমার পরিবারের কেউ ছিলামনা। কিন্তু আমিতো টাকা চাইনা। আমার ইজ্জত গেছে। আমার ইজ্জত ফিরে চাই, সুমনের বিচার চাই।
এদিকে যুবতির বাবা রমিজের সাথে কথা হলে তিনি টাকার কথা অস্বিকার করে বলেন, আমি কোন টাকা পাইনি। নাজিম বলেছে তাকে নাকি চেক দিছে। সালিসে আমাকে ডাকেনি, আমার মেয়ের ইজ্জত গেছে। আমরা এর বিচার চাই।
অভিযুক্ত সুমনের সাথে কথা বলতে তার মুঠোফোন একাধিকবার কল দিয়েও না পেয়ে এই প্রতিবেদক তার বাড়িতে গিয়ে না পেয়ে তার বাবার সাথে কথা বলে। তার বাবা দেলোয়ার জানান, গতকাল সোমবার দুলাল চেয়ারম্যানের অফিসে এর সমাধান হইছে। নাজিমকে আড়াই লাখ টাকার চেক দেওয়া হয়েছে।
মধ্যস্থতাকারী নাজিম মুঠোফোনে জানান, ভুক্তভোগি কিশোরী সম্পর্কে আমার বাগ্নি হয়। এবিষয় সমাধান করা হয়েছে। সুমনের কাছ থেকে নেওয়া দুই লাখ টাকার চেক আমার কাছে আছে। এ মাসের ২৮ তারিখে টাকা পাবে।
এদিকে ইউনিয়ন চেয়ারম্যান জাফর উল্লাহ দুলাল হাওলাদার বিষয়টি অস্বিকার করে বলেন, আমার অফিসে কোন সালিস হয়নি, আমি এ সম্পর্কে জানিনা। কে যেন আমাকে একটু বলছে। আমি বলছি সুমন খারাপ ছেলে বিয়ে পড়াই দিতে। আর নাজিম নামের কারো সাথে আমার সম্পর্ক নাই।
হায়দরগঞ্জ ফাঁড়ি থানার ইনচার্জ সুরেজিত বড়ুয়া বলেন, আমর কাছে কোন অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নিব।