নুরুল আমিন ভূঁইয়া দুলাল, নিজস্ব প্রতিবেদক: লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসা সেবার কার্যক্রম পূর্বের চেয়ে অনেক উন্নত। তবে বেড সংকটের কারণে দূর-দূরান্ত থেকে সেবা নিতে আসা রোগীদের পোহাতে হচ্ছে চরম দুর্ভোগ। রোগীদের সেবা নিতে হচ্ছে বারান্দায় ও চলাচলের পথে।
বেড সংকটের কারণে ৫০ শয্যা বিশিষ্ট এ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি চিকিৎসা সেবা দেয়ার ক্ষেত্রে চরম অসুবিধার সম্মুখীন হচ্ছেন প্রতিনিয়।
প্রাপ্ত তথ্য অনুসন্ধানে জানা যায়, রায়পুর উপজেলার প্রায় সাড়ে তিন লাখ মানুষের চিকিৎসা একমাত্র ভরসাস্থল এই রায়পুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। ২০০৮ সালে রায়পুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সকে উন্নত চিকিৎসা সেবা প্রদানের লক্ষ্যে ৩১ শয্যা থেকে ৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে উন্নীত করা হয়। এই ৩১ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে বর্তমানে চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছেন একজন উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ও ১৬ জন চিকিৎসক এবং ২১ জন নার্স।
রায়পুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হওয়া কয়েকজন রোগী ও স্বজনদের সাথে আলাপকালে তারা জানান, হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা খুবই ভাল। তবে পর্যাপ্ত পরিমাণ বেড না থাকায় অধিকাংশ রোগীকেই বারান্দায় শুয়ে চিকিৎসা নিতে হয়।
এই সরকারি এ হাসপাতালে আমরা অত্যান্ত কম মূল্যে ইসিজ, এক্সরে,আলট্রাসনোগ্রাফ, রক্তের বিভিন্ন টেস্ট ও প্রসূতি মায়েদের সিজার করার অত্যান্ত সু বন্দোবস্ত আছে।
হাসপাতালটিতে গাইনি, অর্থপেডিক, মেডিসিন ও সার্জারিসহ বিভিন্ন বিশেষজ্ঞ ডাক্তার বর্তমানের চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছেন।
রায়পুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এর অধীনে উপজেলা ব্যাপী ৩৪ টি কমিউনিটি ক্লিনিকে স্বাস্থ্যসেবা দিয়ে যাচ্ছেন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত স্বাস্থ্য কর্মীরা।
রায়পুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বহির্বিভাগে চিকিৎসা নিতে আসা পৌর ৫ নং ওয়ার্ডের রহিমা আক্তার, ও জ্যোস্না বেগম , নার্গিস আক্তার বলেন এই হাসপাতালের ডাক্তার এবং নার্সগণ রোগীদের অত্যন্ত আন্তরিকতার সহিত সেবা দিয়ে থাকেন।
তারা আরো বলেন আমরা প্রাইভেট হাসপাতালে বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা পূর্বে করেছিলাম, এতে আমাদের অনেক অর্থ ব্যয় হতো এখন সরকারি হাসপাতালেই আমরা সকল পরীক্ষাগুলি অত্যন্ত কম মূল্যে করে থাকি।
রায়পুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সেবিকাদের সাথে আলাপকালে তারা বলেন, বেড সংকটের কারণে ওয়ার্ডে রোগীদের সেবাদানে অনেক সময় সমস্যা সৃষ্টি হয। এই হাসপাতালটিতে প্রতিদিন ৬০ থেকে ৭০ জন রোগী সব সময় ভর্তি ভর্তি অবস্থায় আছেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. বাহারুল আলম জানান, চিকিৎসা সেবার ক্ষেত্রে রোগীদের মান-সম্মত উন্নত চিকিৎসা দেয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছ। এই চিকিৎসা সেবায়দানে আমি এবং হাসপাতালে কর্মরত ডাক্তার এবং নার্স সকলে আন্তরিকতার সহিত স্বাস্থ্য সেবা দিয়ে যাচ্ছে। বেড সংকট নিয়ে হাসপাতালে রোগীদের চিকিৎসা দিতে একটু সমস্যা হচ্ছে, তবুও আমরা আন্তরিকতার সহিিত স্বাস্থ্য সেবা দিয়ে যাচ্ছি।
হাসপাতলে বেড সংকট সমাধানের জন্য ১০০ শয্যা বিশিষ্ট করার বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে একাধিকবার জানানো হলেও এখনো কোনো সমাধান পাওয়া যায়নি। তবে আশা করি অচিরেই এই সমস্যারও সমাধান হয়ে যাবে।
তিনি আরো বলেন রায়পুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এ এক্সরে ৬০/৭০ টাকা নেয়া হয়, বাহিরে প্রাইভেট হাসপাতালে ৭০০ টাকা নেয়া হয়। তেমনি ৩০০ টাকার ইসিজি মাত্র ৮০ টাকায় করানো হয়। বিগত দিনে করনাকালিন সময়ে ও বর্তমানে ডেঙ্গু মোকাবিলায় আমরা রোগীদের স্বাস্থ্য সেবার দিকে অত্যধিক নজর রাখছি।
দেশ যুগান্তর/আরজে