লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে টিআর ও কাবিখার চাল প্রকল্প সভাপতিদের (মেম্বার) কাছ থেকে ব্যাবসায়ীরা ৩০ টাকায় কিনে ৪০ টাকায় বিক্রি করার অভিযোগ উঠেছে।
রোববার (১০ ডিসেম্বর) দুপুরে উপজেলা পরিষদের পিছনে টিসি সড়কের হারুন নামের ব্যবসায়ীর গুদামে চালের বস্তা দেখতে পাওয়া যায়। খবর পেয়ে সংবাকর্মী তথ্য সংগ্রহে গিয়ে জানতে চায় টিআর-কাবিখার চাল এখানে কেন-? তখন ওই ব্যবসায়ী বলে এই চাল আমি কিনে নিছি। এগুলো বিক্রি করা তো সমস্যার কিছু দেখছিনা।
চাল ব্যবসায়ী ডিলার হারুনুর রশীদ বলেন, ‘রায়পুরে গোডাউন থেকে ৯ মেট্রিক টন চাল কিনেছি আমি। বাকি চাল ও গম টিআর-কাবিখার চাল। আমি ছাড়াও ব্যাবসায়ী ওসমান, কাসেম হাজারি, মোঃ মফিজ, শাকিল চৌধুরী ও ফারুখ হোসেন প্রকল্পের সভাপতিদের (মেম্বার) কাছ থেকে চালগুলো ৩০ টাকায় কিনে ৪০ টাকা ধরে বিক্রি করছেন। আমি চালগুলো দুই টাকা লাভে বিক্রি করছি। এভাবে আমি দীর্ঘদিন ধরেই ব্যবসা করছি। আমার সব কাগজপত্র ঠিক আছে। তাই খাদ্য বিভাগের কর্মকর্তারা কাগজপত্র যাচাই করে আমাকে বিক্রির অনুমতি দিয়েছেন।
ব্যবসায়ীরা জানান, ভিজিএফ বা ১৫ টাকা কেজি দরে সরকারিভাবে বিক্রি হওয়া চালের অনেক কার্ডধারী ব্যক্তিই এসব চাল নিজেরাই কিনেন। পরে ছোট ব্যবসায়ীরা সেসব চাল আবার বড় ব্যবসায়ী বা ডিলারদের কাছে বিক্রি করেন। এ ছাড়া টিআর ও কাবিখার চাল যারা বরাদ্দ পান তারা অনেক সময় ডিলারদের কাছে বিক্রি করে নগদ টাকা নিয়ে নেন।
রায়পুরের চরবংশী ও চরআবাবিল ইউপির কয়েকজন শ্রমিক জানান, মেম্বাররা কখনই আমাদেরকে চালের কথা বলেননা। আবার আমাদের ছাড়াই ভেকু মেশিনে মাটি কাটার কাজ করছেন। শুনেছি মেম্বার ও চেয়ারম্যানরা শহরের কয়কজন ডিলারের কাছে কম দামে বিক্রি করছেন। তা কিনে ডিলাররা বেশি দামে মিল মালিক ও অন্যদের কাছে বিক্রি করছেন। আমরা জানতে চাইলে ক্ষতি করবে বলে হুমকি দেন।
রায়পুর উপজেলা খাদ্যগুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অসিম চন্র বর্ধন বলেন, ‘ টিআর, জিআর ও কাবিখার চাল খোলা বাজারে বিক্রির বিষয়ে জানিনা। গত মে মাসের আগে টিআর- কাবিখার ১৬’শ ৪৭৭ টন চাল ও ১৪ শ ১৪৬ টন গম ডিও দেয়া হয়েছে। ‘আমাদের গুদাম থেকে কোনো চাল বেরিয়ে গেলে আমাদের আর কোনো দায়-দায়িত্ব থাকে না। কোনো গুদামে সরকারি বস্তায় চাল পাওয়া গেলেও আমাদের দেখার কোনো বিষয় নেই। চাইলেই যে কেউ সরকারি চাল কিনে বিক্রি করে থাকেন। মেম্বার ও চেয়ারম্যান তা করেন।’
রায়পুরে প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আশিকুর রহমান এবিষয়ে কথা বলতে রাজি হননি। তবে খাদ্য কর্মকর্তা মাইনুল হোসেন বলেন, ডিলাররা আগে এসব চাল কিনতে পারতেন না। এখন সরকার অনুমতি দেয়ায় তা প্রকল্পের সভাপতিদের (মেম্বার) কাছ থেকে কিনছেন।