সোমবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৪:২৭ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
সোনাইমুড়ি ৩ বছর যৌন নিপীড়নের শিকার শিক্ষার্থী নামাজ পড়ে ফেরার পথে প্রা’ণ গেল বৃদ্ধের আদর্শ জাতি গঠনে যুবকদের এগিয়ে আসতে হবে, জামায়াতের আমির রুহুল আমিন ভূঁইয়া রায়পুর প্রেসক্লাবের সাংবাদিকদের সাথে সাবেক সাংসদ খায়ের ভূঁইয়া’র মতবিনিময় কড়ৈতলি বাজারে নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে চলাচলের সড়কের উপর ভবন নির্মাণের অভিযোগ রায়পুরে পুরান বেড়ী ইসলামী যুব সংঘ’র ফ্রি চিকিৎসা ক্যাম্প অনুষ্ঠিত রায়পুরে কলেজ ছাত্রশিবিরের উদ্যোগে নবীন বরণ অনুষ্ঠিত ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইনসুরেন্স কোম্পানি লিঃ মৃত্যুর ১৩ মাস পর গ্রাহকের স্বাক্ষর জাল করে প্রতারণার অভিযোগ সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে ধানের চারা ও নগদ টাকা পেয়ে খুশি লক্ষ্মীপুরের বন্যার্ত কৃষকেরা চরপাতা ফোরামের নির্বাচন অনুষ্ঠিত

লক্ষ্মীপুরে ভূয়া কাজীর ফাঁদে পড়ে প্রতারিত হচ্ছে হাজারো মানুষ।

আলমগীর হোসেন, লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি :
  • প্রকাশের সময় : শনিবার, ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২২
  • ৭১৯ বার দেখা হয়েছে

ভুয়া বিয়ে ও তালাকে নিঃস্ব হচ্ছেন অনেক নারী-পুরুষ। ঘটছে সম্পত্তি ও পিতৃত্বের অধিকার হারানোর ঘটনাও? কাজি আছে, অফিসও আছে, নিয়মিত বিয়েও পড়াচ্ছেন। আছে বিয়ে ও তালাক রেজিস্ট্রার- সরকার নির্ধারিত বালাম বইও। তবে সেটা ভুয়া। নেই আইনগত কোনো বৈধতাও। সেই সাথে কাজির নেই সরকারি নিবন্ধনও। তবুও কথিত কাজি পরিচয়েই বিয়ে ও তালাক রেজিস্ট্রি করছেন বছরের পর বছর। নিবন্ধন ছাড়াই ভুয়া বিয়ে রেজিস্ট্রি করে হাতিয়ে নিচ্ছেন কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা। এসব নামসর্বস্ব কাজির ফাঁদে পড়ে প্রতারিত হচ্ছেন হাজার হাজার মানুষ।

সম্প্রতি লক্ষ্মীপুরে নিকাহ ও তালাক নিবন্ধনে এক প্রকার বিশৃঙ্খলা চলছে। বেড়েছে ভুয়া কাজির দৌরাত্ম্য। বিয়ে ও তালাক নিবন্ধনেও জালিয়াতি বেড়েছে। কথিত কাজির ফাঁদে পড়ে সর্বস্ব হারাচ্ছেন ভুক্তভোগীরা। ভূয়া বিয়ে ও তালাকে নিঃস্ব হচ্ছে নারী-পুরুষ উভয়েই। গত আগষ্ট মাস থেকে ভুয়াকাজীর বিরুদ্ধে স্থানীয়, জাতীয়, অনলাইনে বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় ভুয়া কাজীর বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশিত হচ্ছে। সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পরও প্রশাসনিকভাবে ভুয়া কাজীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থায় না নেয়ায় গত বৃহস্পতিবার জেলা রেজিস্ট্রার লোকমান হোসেন বরাবর পৌর ৬ নং ওয়াডের স্থায়ী বাসিন্দা ওসমান গনি নামে এক ব্যক্তি ভুয়া কাজী সাকিল, মোশারফ, ঢাকার কাজী সেলিম রেজার বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।

লিখিত অভিযোগ সূত্র থেকে জানা যায়, ২০০২ সাল থেকে জৈনক ব্যক্তি মোশারফ হোসেন নামের একজন ৫ ও ৬ নং ওয়ার্ডের ভুয়া, তঞ্চক বানোয়াট জাল-জালিয়াতি মিথ্যা তথ্য দিয়ে কাগজ পত্র সৃজন করে আইন মন্ত্রণালয় থেকে প্রতারণার করে নিকাহ রেজিস্ট্রার লাইসেন্স
সংগ্রহ করেন । ঢাকা মগবাজার ৩৫ নং ওয়ার্ডের নিকাহ রেজিস্ট্রার সেলিম রেজার সহযোগিতায়। উক্ত ওয়ার্ডে নিকাহ রেজিস্ট্রার হিসেবে কাগজের নাম থাকলেও বাস্তবে কোন অস্তিত্ব নেই।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মোশারফ হোসেন নামে এক ব্যক্তি ৫ ও ৬ নং ওয়ার্ডের স্থায়ীবাসিন্দা হিসেবে এমন কোন ব্যক্তিেকে খোঁজে পাওয়া যায়নি। সেলিম রেজা কর্তৃক মোশারফ স্থলে ছদ্মনাম ব্যবহার করে শামছুদ্দোহা শাকিল নামে এক ব্যক্তি কাজীর পরিচয়ে দিয়ে দীর্ঘ ১৯ বছর যাবত মোশারফ হোসেন কাজী নিকা রেজিস্ট্রার লাইন্সেস এর উপর ভুয়া কাজী শামছুদ্দোহা শাকিল গ্রামগঞ্জে কোর্ট প্রাঙ্গণে বাল্যবিবাহ, বহুবিবাহ, একক বিবাহ অনিয়মতান্ত্রিকভাবে পড়াচ্ছেন। ভুয়া কাজী শাকিল পৌর ৮ নং ওয়ার্ডের লামচরি গ্রামের ডুবাই ওয়ালাগো বাড়ির জাহাঙ্গীর আলমের বড় ছেলে।

বিধি অনুযায়ী ৫ ও ৬ নং ওয়ার্ডের নিকাহ রেজিস্ট্রার প্রতি বছর লাইসেন্স ফি ও জেলা রেজিস্ট্রারের মাধ্যমে কোন ইনডেন্ট এবং অফিসিয়াল ভাবে বালাম বইসহ অন্যান্য মালামাল সংগ্রহ করেন না। জেলা রেজিস্ট্রারের বাৎসরিক কোন অডিটে অংশ গ্রহন করেন না। যাহা মুসলিম বিবাহ ও তালাক( নিবন্ধন) বিধিমালা ২০০৯ এর বিধি ১১ পরিপন্থী অসদাচরনের শামিল।

আইন অনুযায়ী নিকাহ রেজিস্ট্রার পেতে হলে স্থানীয় বাসিন্দা হইতে হয়। নিকাহ রেজিস্ট্রার মোশারফ হোসেন অত্র এলাকায় বসবাস করে না। তাকে কেউ চেননা। এমনই অভিযোগ এলাকাবাসীর।

নিকাহ রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে গত ২০ জুলাই ২০২২ ইং সদ্য বিদায়ী লক্ষ্মীপুর জেলা রেজিস্ট্রার মিশন চাকমা ভুয়া কাজীদের বিরুদ্ধে আইনমন্ত্রালয়ে একটি চিটি প্রেরন করেন যাহার স্মারক নং ২১৫।

২০০২ সালে কাজী মোশারফ হোসেন ৫,৬ নং ওয়ার্ডের স্থায়ী বাসিন্দা ও ভুয়া হোল্ডিং দেখিয়ে নিকাহ রেজিস্ট্রার লাইন্সস আনেন।

২০১৩ সালে পৌর মেয়র কর্তৃক সাটিফাই করে দেখে যে মোশারফ হোসেন নামের কোন হোল্ডিং নেই উক্ত হোল্ডিং এর মালিক আঃ রহিম।

২০১৬ সালে স্মারক নং জে: লি: এ : ক: লক্ষ্মীপুর / ১- ২০১৭-১৮৯ এর জেলা লিগ্যাল এইড অফিসার সিনিয়র সহকারী জজ নুরু মিয়া ৫ ও ৬ নং ওয়ার্ডে সরেজমিনে তদন্ত পূর্বক কাজী মোশারফ হোসেনকে সমন জারি করলে তিনি উপস্থিত হননি।

মোশারফ নামে কাজী রেজিস্ট্রার লাইসেন্স এনে ঢাকার কাজী সেলিম রেজা লক্ষ্মীপুরে নামে বেনামে পৌর শহরে বিভিন্ন জায়গায় সাইনবোর্ড এবং ভাড়া অফিস নিয়ে তার ব্যবহৃত মোবাইল নং ভিজিটিং কার্ড ব্যবহার করে আসছে।

৬ মার্চ ২০১৬ সালে জেলা রেজিস্ট্রার শাহজাহান সর্দার ৮ ও ১০ নং ওয়ার্ডের সেলিম রেজা তদারকিতে কাজি পরিচালিত বিষয়ে একটি তদন্ত প্রতিবেদন প্রমাণিত হয়েছে। প্রতিবেদনটি আইন মন্ত্রণালয়ে প্রেরন করা হয়েছে।

২০১৬ সালে ভুয়া কাজী সাকিলকে বাল্যবিবাহ পড়ার অপরাধে ৩-৬ নং ওয়ার্ডের ২ টি বালাম বই সহ লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার নির্বাহি অফিসার নুরুজ্জামান ভ্রাম্যমান আদালতের বসিয়ে ৫ হাজার টাকা জরিমানা ও মুছলেখা নিয়ে ভুয়া কাজী শাকিলকে সাজা দেন।

সঠিক নিকাহ রেজিস্ট্রার না থাকায় ভিন্ন ভিন্ন স্বাক্ষরে নিকাহ রেজিস্ট্রার স্বাক্ষরিত কাগজে, নিকাহ নামা ও তালাক নামা সরবরাহ করা হয়। স্বাক্ষরিত কপি গুলোর সাথে অন্য কপির কোন মিল খোঁজে পাওয়া যায়নি।

কাজির তালিকা ও ভুয়া কাজির শাস্তি না হওয়ার ভুয়া কাজীরদের নাম উল্লেখ করে অভিযোগ করেন, মো: ওসমান গণি বলেন, এটা মন্ত্রণালয়ের দুর্বলতা ও ব্যর্থতা।

নিকাহ রেজিস্ট্রার এর স্থলে বিবাহ রেজিস্ট্রেশনের সকল কাজ করেন শামছুল হুদা শাকিল, সেলিম রেজা কর্তৃক।

উল্লেখিত বিষয়ে জেলা রেজিস্ট্রার লোকমান হোসেন জানিয়েছেন ভূয়া কাজীদের বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে ভুয়াকাজীদের বিরুদ্ধে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।

আপনার মন্তব্য লিখুন

আমাদের YouTube চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব করুন

এ বিভাগের আরো সংবাদ
Don`t copy text!
© All rights reserved © 2021 Desh Jugantor
Design & Developed by RJ Ranzit
themesba-lates1749691102
Don`t copy text!