লক্ষ্মীপুরে সাংবাদিক আলমগীর হোসেনের পরিবারের জমি জবরদখলের অভিযোগ উঠেছে সাবেক অধ্যক্ষ মাইন উদ্দিন পাঠানের বিরুদ্ধে। এর প্রতিবাদে সোমবার দুপুর ১২ টায় লক্ষ্মীপুর প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন করেন ভুক্তভোগী পরিবার। মানববন্ধনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন লক্ষ্মীপুর প্রেস ক্লাবের সদস্য সাংবাদিক আলমগীর হোসেন।

বক্তব্যে তিনি দাবি করেন দখল ঠেকাতে হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা কপিসহ , গত ১৩ মার্চ ২০২২ ইং লক্ষ্মীপুর জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা, লক্ষ্মীপুর প্রেসক্লাবসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেন।

এসময় তিনি তার পরিবারে উপর জোর, জুলুম, অন্যায় আচরণ ও তাদের সম্পত্তি দখলের বিষয় তুলে ধরেন।

মানববন্ধনে ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্য মমিন উল্যা, প্রতিবন্ধী রিকশা চালক সফিক উল্যা , ফারুক, পারভেজ, রুবি আক্তার, আলেয়া বেগম, সহিদা বেগম, আরুফা বেগম, ফাতেমা আক্তার, ছকিনা বেগম, ইব্রাহিমসহ অত্রএলাকার শতাধিক এলাবাসি উপস্থিত ছিলেন।

এসময় লক্ষ্মীপুর পৌর শহরের ৭ নং ওয়ার্ডের আলিমুদ্দিন বেপারী বাড়ির অসহায় মমিন উল্ল্যা (৭৫) বলেন, জমি তো আমার ক্রয়কৃত এবং ওয়ারিশি, ৭০ বছর ধরে ভোগ দখল করে আসছি। ৭৫ নং সমসেরাবাদ মৌজার ১১০৫, ১১০৭ দুই দাগে মোট সাড়ে ১৩ শতাংশ জমি ওয়ারিশ ও ক্রয় সূত্রে মালিক মমিন উল্যা গং তিনি ১৯৭৭ সালের ৫ জানুয়ারি সাবকবলা দলিল মূলে জালাল আহম্মেদ থেকে ৬ দশমিক ৭৫ শতাংশ জমি ক্রয় করেন, যাহার বায়া দলিল ৩১ আগষ্ট ১৯৪২ ইং সনের দলিল নং ৩৫০৫। যাহার সিএস ১১, এসএ ১৫, ডিপি ১৬৭৯ বর্তমান ৫১৭৬ খতিয়ান এলাহি বক্সের মেয়ে সুজিয়া খাতুন, জামাতা জালাল আহম্মেদ থেকে ৬ দশমিক ৭৫ শতাংশ জমি ক্রয় করেন। এ জমি নিয়ে কয়েক বছর বিরোধ চলে আসছে মাঈন উদ্দিন পাঠান এবং আব্দুল লতিফ গংদের সাথে। এ সম্পক্তি নিয়ে মহামান্য হাইকোর্ট রিভিশন নং ৪৫/২০২২ ইং। বিরোধকৃত সম্পক্তিতে ৬ মাসের নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে হাইকোর্ট বিচার বিভাগ। পুলিশের উপস্থিতিতে মাঈন উদ্দিন পাঠান ও আব্দুল লতিফ গং প্রায় কয়েক'শ লাঠিয়াল স্কুল কলেজের ছাত্র নিয়ে অবৈধভাবে আমার জমিতে জোর জবরদস্তি করে ভোগদখলকৃত অবৈধ পন্থায় পুরাতন ঘরবাড়ি ভাংচুর করে লুটে নেয় এবং গাছপালা কেটে, ৬০ বছরের ব্যবহিত পুকুর, পুকুরের ঘাটলা, দখল করে বাউন্ডারি ওয়াল নির্মাণ কাজ করে চলছে। জমি দখল নিতে আসা সন্ত্রাসীরা কয়েকজন নারীকে শ্রীলতাহানি করে এবং মারধর করে। এতে দুই জন আহত হয়েছে।

২০১৬ সালে একই ব্যক্তিরা একে কায়দায় ১১০৬ দাগের ২ শতক জমি দখলে নেয় ভূমি খেকোরা।

মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন ভুক্তভোগী পরিবারের সাংবাদিক রুবি আক্তার, প্রতিবন্ধী রিকশা চালক সফিক উল্যা, সহিদা বেগম, ফাতেমা বেগম, আলেয়া বেগম।
তারা বলেন, আমাদের বাপ দাদার ওয়ারিশি এবং ক্রয়কৃত সম্পক্তি ফিরৎ দেয়ার জন্য সরকার এবং প্রশাসনের প্রতি ন্যায় বিচার ও আমাদের সম্পক্তি বেদখলকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী জানাই। বিচার না পেলে বাংলাদেশ বেতারে, ভূমিমন্ত্রণালয়ে ভূমিখোকোদের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হবে।

তারা আরও বলেন, মাঈন উদ্দিন পাঠান, আব্দুল লতিফ গংরা আমাদেরকে মিথ্যা মামলা জড়ানোর, প্রাণে হত্যার, হয়রানি করার হুমকি ধামকী দিচ্ছে। নিরাপত্তাহীনতা রয়েছেন বলে জানান তারা। আমরা উল্লেখ্যকৃত ঘটনার বিভাগীয় তদন্ত পূর্বক দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে শাস্তির দাবি, দখলকৃত জমি পূর্ণ উদ্ধারের জন্য সরাষ্ট্রমন্ত্রী, ভূমিমন্ত্রীসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কতৃপক্ষের নিকট জোর দাবি জানাচ্ছি।

মানববন্ধনে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে উপস্থিত ছিলেন, লক্ষ্মীপুর প্রেসক্লাবের প্রবীণ সাংবাদিক সাবেক সহকারী অধ্যপক আজিজুর রহমান, সিনিয়র সাংবাদিক আনোয়ার রহমান বাবুল, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান টিপু। নুরুল আমিন সিকদার, দৈনিক করতোয়া লক্ষ্মীপুর জেলা প্রতিনিধি একিউ এম সাহাব উদ্দিন, আনন্দ টিভি জেলা প্রতিনিধি বিএম সাগর, আরিফ খান জয়, বাংলাদেশ কন্ঠের লক্ষ্মীপুর জেলা প্রতিনিধি মমিন উল্যা, জনবাণী ও গ্লোবাল টিভির জেলা প্রতিনিধি অ আবির আকাশ, বিশ্ব মানচিত্র জেলা প্রতিনিধি মোঃ সোহেল, বর্তমান কথা জেলা প্রতিনিধি কাজী ওসমান মোর্শেদ, আমাদের কন্ঠ জেলা প্রতিনিধি কামরুল ইসলামসহ বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক, অনলাইন মিডিয়ার কর্মরত সাংবাদিকেরা।

উল্লেখ্য গত ১৭ মার্চ ২০২২ ইং বৃহস্পতিবার থেকে সোমবার পর্যন্ত ৫ দিন যাবত জবরদস্তি দখল করে নির্মাধীন কাজ চলমান রেখেছে ভূমি দখলবাজ মাঈন উদ্দিন পাঠান এবং আব্দুল লতিফ গংরা।