শেরপুরে অভিনব কায়দায় একটি ব্যাটারিচালিত অটোরিক্সা ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার (৮ জুন) রাতে শহরের নওহাটা এলাকায় চালক হামের আলীকে (৫০) নেশা সেবন টালমাটাল করে তাক রিক্সা থক জারপূর্বক রাস্তায় ফল দিয় ওই ঘটনা ঘটায় দুর্বৃত্তরা। সে শহরের তাতালপুর মহল্লার মৃত মকবুল হোসেনের ছেলে। চালক হামের আলী গুরুতর অবস্থায় জেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
বুধবার (৯ জুন) দুপুরে ওই হাসপাতালের নতুন ভবনের ষষ্ঠ তলার বেডে থাকা হামের আলীকে দেখা যায় শরীরে রক্তাক্ত ক্ষত ও চেতনানাশক পানীয় সেবন করার কারণে সে এখনও ঠিকমতো কথা বলতে পারছে না। পাশে থাকা বৃদ্ধা মা হালিমা খাতুন, স্ত্রী হামেদা খাতুন ও প্রথম সন্তান আব্দুল হান্নান ওই ঘটনায় তাদের হতদরিদ্র পরিবারের আয় রোজগারের একমাত্র অবলম্বন অটোরিক্সাটি হারানোর পাশাপাশি হামের আলীর এই দশায় একবার নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন। তারা ওই ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তাতারসহ ছিনতাইকৃত অটোরিক্সাটি উদ্ধারের দাবি জানান।
জানা যায়, পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া দুই শতক জায়গায় বসতভিটা ছাড়া কোন সহায়-সম্পদ না থাকায় হামের আলী ভাড়ায় ইজিবাইক চালিয়ে, আবার কখনও বা দিনমজুরি করে দুই ছেলে ও স্ত্রীসহ চার জনের সংসারের ঘানি টেনে আসছিল। ওই অবস্থায় গত ঈদুল ফিতরের এক সপ্তাহ আগে নিজের পালিত একটি ষাঁড় গরু ১ লাখ ৩০ হাজার টাকায় বিক্রি করে সেই টাকা থেক ১ লাখ টাকায় একটি নতুন ব্যাটারিচালিত ৬ সিটের অটোরিক্সা কিনেন । এরপর থেকে মুটামুটি স্বাচ্ছদ্যই চলছিল তার সংসার। প্রতিদিনের ন্যায় মঙ্গলবার রাত ৮টার দিকে শহরের কলেজমোড় থেকে দুজন অজ্ঞাতনামা যুবক যাত্রীবেশে শীতলপুর এলাকায় যাওয়ার কথা বলে তার গাড়িত ওঠে। এক পর্যায় শীতলপুর এলাকায় পৌঁছার পরে নিজরা কোমল পানীয় সেবনের পাশাপাশি তাকেও ওই পানীয় সেবন করায়। এরপর যাত্রীদের কথামতো রিক্সা নিয়ে দিঘারপাড় হয়ে খোয়ারপাড় মোড়ের দিকে অগ্রসর হতে থাকলে চালক হামের আলী আস্তে আস্তে অস্বস্তিবোধ করতে থাকে। ওই অবস্থায় খোয়ারপাড় থেকে রিক্সাটি নিয়ে তাতালপুরর দিকে রওনা হয়ে নওহাটা পরে কবরস্থান সংলগ্ন রাস্তায় পৌঁছালে হামের আলী টালমাটাল হয়ে রিক্সাটি থামিয়ে দেেয়। আর ওইসময় গাড়িত থাকা যাত্রীবেশী দুই দুর্বৃত্ত ও সেখান অবস্থানকারী আরও এক দুর্বৃত্ত মিলে জোরপূর্বক তাকে অটোরিক্সাটি থেকে রাস্তার পাশে ফেলে দিয়ে গাড়িটি নিয়ে চলে যায়। পরে রাত ৯ টার দিকে গুরুতর অসুস্থ ও আহত হামের আলীকে রাস্তার পাশে অচেতন অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে তাকে চিনতে পেরে উদ্ধার করে তার বাড়িতে পৌঁছে দেয় অপর এক রিক্সাচালক। পরে মাথায়, গাল ও দুই পায়ে আঘাতে তাক অচেতন ও গুরুতর অবস্থায় জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়।
এ ব্যাপারে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, অটোরিক্সাটি উদ্ধার অভিযান চলছে। এই ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
দেশ যুগান্তর/আরজে