বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:৪২ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
রায়পুরে পুরান বেড়ী ইসলামী যুব সংঘ’র ফ্রি চিকিৎসা ক্যাম্প অনুষ্ঠিত রায়পুরে কলেজ ছাত্রশিবিরের উদ্যোগে নবীন বরণ অনুষ্ঠিত সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে ধানের চারা ও নগদ টাকা পেয়ে খুশি লক্ষ্মীপুরের বন্যার্ত কৃষকেরা চরপাতা ফোরামের নির্বাচন অনুষ্ঠিত রায়পুরে চরমোহনা ইউনিয়ন জামায়াতের ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্পিং ও ঔষধ বিতরণ রায়পুরে ইসলামী ব্যাংকের গ্রাহক সমাবেশ ও মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত যুবদল নেতার কাছে অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাওয়ায় সাংবাদিককে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ, থানায় অভিযোগ যুবদল নেতা ইকবালের নেতৃত্বে সৌদি প্রবাসীর জমি দখল করে দেওয়ার অভিযোগ রায়পুরে বন্যায় পান চাষীদের ব্যাপক ক্ষতি, দিশেহারা পান চাষী  মধ্য সাগরদী ইসলামী সমাজ কল্যাণ পরিষদ এর উদ্যোগে মা-মনি হাসপাতালের সহযোগিতায় ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প অনুষ্ঠিত

সংস্কারের অভাবে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে শত বছরের মধ্য সাগরদী তিনগুম্বুজ মসজিদ

রায়পুর (লক্ষ্মীপুর) প্রতিনিধি :
  • প্রকাশের সময় : সোমবার, ৩ মে, ২০২১
  • ৭২০ বার দেখা হয়েছে

ইতিহাস আর ঐতিহ্যে ভরা মেঘনা, ডাকাতিয়া নদী উপকুলীয় লক্ষ্মীপুর জেলা। এই জেলার ৫টি উপজেলাতেই রয়েছে কোন না কোন সময়ের ঐতিহ্য। আর সেই সব ঐতিহ্য ও নিদর্শনগুলো দীর্ঘদিন মেরামত কিংবা সংস্কার না করায় বর্তমানে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে এসে দাঁড়িয়েছে। তারই একটি নির্দশন মোগল স্থাপত্য রীতিতে তৈরি রায়পুর উপজেলার বামনী ইউনিয়নের মধ্য সাগরদী তিন গুম্বুজ বিশিষ্ট জামে মসজিদ। যা বর্তমানে মেরামত ও সংস্কারের অভাবে বিলুপ্তির দ্বার প্রান্তে।

পুরোনো এই মসজিদ স্থাপত্যরীতিতে মোগল ভাবধারার ছাপ সুস্পষ্ট। সৃষ্টি আর ধ্বংসে এগিয়ে চলছে পৃথিবী। কেউ সৃষ্টিতে আবার কেউ ধ্বংসের খেলায় মাতিয়ে উঠেছে। আবার কারোর দায়িত্ব হীনতার কারণে কালের গহব্বরে সমাহিত হচ্ছে ঐতিহাসিক অতীত। আমরা বাঙালী, আমাদের রয়েছে সোনালী ঐতিহাসিক অতীত। বাংলার বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে ইতিহাসের স্মৃতি চিহ্ন। এসব ছড়িয়ে থাকা ঐতিহাসিক স্মৃতি বিজরিত স্থানসমূহ আমাদের স্বত্তাতে আলোড়ন জাগায়। তেমনি আলোড়ন জাগানো ঐতিহাসিক অতীত বহুল স্থান রায়পুর উপজেলার মধ্য সাগরদী তিন গুম্বুজ বিশিষ্ট জামে মসজিদ।

লক্ষ্মীর জেলা শহর থেকে ১১ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিম আর রায়পুর উপজেলা থেকে প্রায় ৫কিলোমিটার পূর্বদিকে ঐতিহাসিক সাগরদী গ্রামটি অবস্থিত। ৭নং নং বামনী ইউনিয়নের জনসংখ্যার দিক দিয়ে একটি বড় গ্রাম এটি। এ গ্রামেই দৃশ্যমান শত বছর পূর্বের স্থাপনা কারুকার্য্য খচিত তিন গুম্বুজ বিশিষ্ট এই মসজিদ। আজও কালের স্বাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে মোঘল সম্রাটের শাসনামলের ভাবধারায় নির্মিত এ কীর্তি।

এলাকাবাসী বলেন, এই এলাকার বিশিষ্ট আলেম মৌলবী দুলা মিয়া সাহেব, হাজী কালা মিয়া চৌধুরী, ছৈয়দল হক চৌধুরী, ইউছুফ মিয়া পাটওয়ারী ও ফয়েজ বক্স পাটওয়ারীর প্রচেষ্টায় গড়ে উঠে এ মসজিদটি।

জানা যায়, ওই গ্রাম এক সময় নিভৃত পল্লীর একটি জনবসতি ছিল। এক সময় নৌকার বিকল্প ছাড়া কোন যোগাযোগ ব্যবস্থা ছিল না। ছিল নাকি সাগর, আর সাগর থেকেই সাগরদী গ্রামের রুপায়ন হয়েছে বলেও অনেকের ধারণা। আশে পাশের ৪গ্রামে কোন মসজিদ ছিল না। সাগরদী এলাকার নামেই তৎকালীন সময়ে এই মসজিদটির নামকরণ করা হয় মধ্য সাগরদী জামে মসজিদ।

এই মসজিদকে ঘিরেই ১৯৯৬ সনে মাওলানা নজির আহম্মেদ এখানে প্রতিষ্ঠিা করেন নূরানী ও এতিমখানা মাদ্রাসা। তার কয়েক বছর পর ২০০৬ সনে খাদিজাতুল কোবরা (রাঃ) দাখিল মাদ্রাসাও প্রতিষ্ঠা করেন। এর আগে ১৯৭২ সনে এখানে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে হাফেজীয়া মাদ্রাসা। বর্তমান এই সব প্রতিষ্ঠান মিলে প্রায় ৫’শতাধিক ছাত্র/ছাত্রী অধ্যায়ন করে।

এদিকে এ মসজিদ  কত সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে তা এলাকার কেউই সঠিক ভাবে বলতে পারছেন না। তবে কেউ কেউ বলেছেন ১৯০৫ সালে আবের কেউ বলেছে ১৯শতকের প্রথম দিকে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।

ওই গ্রামের আলী হায়দার পাটওয়ারী (৯০) ও হবি উল্লাহ বলেন, আমাদের জন্মের পূর্বে এই মসজিদ স্থাপিত হয়েছে।

৭৯ শতক জমির উপর কালের স্বাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে এই স্থাপনা। প্রয়োজনীয় রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে সৌন্দর্য হারিয়ে ফেলতে বসেছে। ইতোমধ্যেই গম্বুজের চার পাশ দিয়ে ঘামতে শুরু করেছে পানি। বৃষ্টি আসলেই পানিতে ভরে যায় পুরো মসজিদ। খোদাইকৃত অনেক কারুকাজ নষ্টের পথে। এদিকে মসজিদ সম্প্রসারণের জন্য এটি ভেঙ্গে ফেলার উদ্যোগ নিয়েছেন মহল্লার একটি পক্ষ। আরেক পক্ষ না ভেঙ্গে তা দর্শনীয় হিসেবে রেখে দিয়ে মসজিদটি পূণরায় সংস্কার করার উদ্যোগ ইতোমধ্যে নিয়েছে। এর জন্য প্রয়োজন ২০-২৫ লক্ষেরও বেশি অর্থ। যা এলাকাবাসীর একার পক্ষে যোগান দেয়া সম্ভব না।  ঐতিহাসিক এই মসজিদটির সংস্কার করা হলে এই এ স্থাপনাটি ঘিরে গড়ে উঠতে পারে আকর্ষণীয় একটি জংসন এলাকা।

এই ঐতিহাসিক নির্দশন, এলাকার তথা বাংলার গৌরব উজ্জল ইতিহাসের সাক্ষী মধ্য সাগরদীর তিন গুম্বুজ মসজিদ সংস্কারে এগিয়ে আসার আহবান জানান মসজিদ কমিটির সভাপতি আলী আহম্মেদ চৌধুরী ও সেক্রেটারী বাহারুল আলম। কেউ অনুদান পাঠাতে চাইলে খতিব-মাওলানা ইমরান বিন নাজির এর ০১৭১৫২১৫২৪৪ নাম্বারে যোগাযোগ করুন।

আপনার মন্তব্য লিখুন

আমাদের YouTube চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব করুন

এ বিভাগের আরো সংবাদ
Don`t copy text!
© All rights reserved © 2021 Desh Jugantor
Design & Developed by RJ Ranzit
themesba-lates1749691102
Don`t copy text!