জামালপুরের সরিষাবাড়ী পৌরসভার মেয়র মনির উদ্দিনের নির্দেশে যানবাহন থেকে অবৈধ ভাবে টোল আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অমান্য করে পৌরসভার সামনে টোল আদায়ের নামে চলছে চাঁদাবাজি।টোল আদায়কে কেন্দ্র করে একদিকে রাস্তায় লেগে থাকে যানজট অপরদিকে টাকা দিতে না চাইলে চালকদের সঙ্গে আদায়কারীদের ঝগড়া বিবাদ লেগেই থাকে। অনেক সময় টোল না দিলে গাড়ি ভাংচুরসহ চালকদের করা হয় মারধর ।উচ্চ আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে পৌরসভার সামনে টোল/চাঁদা আদায় কার্যক্রম চললেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেই কোন নজরধারী।
জানা গেছে,দিগপাইত-সরিষাবাড়ী-তারাকান্দি মহাসড়কে যানবাহন থামিয়ে টোল আদায় বন্ধ করতে হাইকোর্ট গত ২৫ জুলাই রুল জারি করে। টার্মিনাল ছাড়া টেন্ডার হয়না। আর টেন্ডার ছাড়া টোল আদায় করা যায় না।পৌরসভা বিধানের ৯৮ ধারার ৭ নং অনুচ্ছেদ অনুসারে শুধুমাত্র পৌর মেয়রের নির্মিত টার্মিনাল ছাড়া পার্কিং ফির নামে টোল আদায় সম্পূর্ণ অবৈধ। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে সিটি এলাকা,জেলা, উপজেলা ও পৌর এলাকার সকল প্রশাসনকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। টার্মিনালের বাইরে রাস্তায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে টোল আদায় অবৈধ ঘোষণা করা হয়েছে।কিন্তু আদালতের নিষেধাজ্ঞা মানছে না সরিষাবাড়ী পৌরসভার মেয়র মনির উদ্দিন। এ ব্যাপারে প্রশাসনও নজরদারি করছে না।
দিগপাইত-তারাকান্দি-সরিষাবাড়ী প্রধান সড়কে চলাচলকারী পৌরসভার সামনে থেকে অটোটেম্পু, অটোরিকশা,অটোবাইক. সিএনজি, ট্রলি, জেএসএ, নছিমন, করিমন, প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস, মিনিবাস ও মালবাহী ট্রাক গতিরোধ করে ফির রশিদ দিয়ে ১০ টাকা, ২০টাকা ও ৫০টাকা টোলের নামে প্রতি মাসে প্রায় ৪/৫ লাখ টাকা চাঁদা আদায় করা হচ্ছে। এছাড়াও উল্লেখ্য যে, উপজেলায় একটি পৌরসভা ও ৮টি ইউনিয়ন সহ প্রায় ৭/৮ হাজার অটোবাইক আছে বলে জানা যায়।বিভিন্ন জায়গা থেকে অটোরিক্সা,অটোবাইক ও অটোভ্যান আসলেই তাদের কাছ থেকে লাইসেন্স বাবদ ২ হাজার ৫০ শ টাকা ও অটো ভ্যান থেকে লাইসেন্সের নামে ১১শ টাকা করে নিচ্ছে পৌর কর্তৃপক্ষ। পৌর এলাকার অটো রিক্সা চালক মো: রনি বলেন, এক বছরের জন্য লাইসেন্স
বাবদ ২ হাজার ৫০ টাকা করে নিচ্ছেন পৌর কর্তৃপক্ষ।হাজীপুর গ্রামের নছিমন ড্রাইভার সুমন ও মাদারগঞ্জের মালবাহী ট্রাক ড্রাইভার রফিকুল , জামালপুরের টেম্পু চালক জামাল,তারাকান্দির ট্রাক চালক বাবুসহ আরোও
অনেকে জানান, বিভিন্ন যানবাহন থেকে সরিষাবাড়ী পৌরসভার সামনে টোলের নামে পৌর এলাকা দিয়ে চলাচল কারী ছোট-বড় সকল যানবাহন হতে টোল আদায় করা হচ্ছে। আর এখানে কোন যানবাহন পার্কিং করে না। তারপরও সরিষাবাড়ী পৌরসভার সামনে থেকে টোল আদায় করা হচ্ছে। প্রকাশ্যে যানবাহন দাঁড় করিয়ে রশিদের মাধ্যমে টোল নেওয়ার নামে চাঁদা আদায় করা হচ্ছে। টাকা না দিলে প্রতি নিয়ত ড্রাইভার ও সাধারণ যাত্রীদের সাথে দূর্ব্যবহার করছে এমনকি যাত্রীদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। চাঁদা আদায়ের জন্য স্টীলের লাঠি নিয়ে বেশ কয়েক জন লোক সড়কের পাশে দাঁড়িয়ে থাকে।
বাংলাদেশ অটোবাইক শ্রমিক কল্যাণ সোসাইটির সরিষাবাড়ী শাখার সাধারণ সম্পাদক বেলাল হোসেন বলেন,পৌরসভার সামনে থেকে অটোবাইক থামিয়ে চাঁদা আদায় করছে বলে অটোবাইক ড্রাইভারেরা আমাদের কাছে অভিযোগ করেছে ।
পৌরসভার প্যানেল মেয়র হক তরফদার বলেন, মেয়রের নির্দেশে বিভিন্ন যানবাহন থেকে টোল আদায় করছে ।
সরিষাবাড়ী পৌরসভার পিয়ন সুরুজ ও রফিকুল ইসলাম বলেন,মেয়রের নির্দেশে আমরা টোল আদায় করতাছি।
সরিষাবাড়ী পৌর মেয়র মনির উদ্দিন এর সাথে সাক্ষাতের জন্য তার ব্যবহৃত মুঠোফোনে একাধিক বার যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও তার ফোনটা বন্ধ পাওয়া যায় ।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার উপমা ফারিসা বলেন, এ বিষয়টি জেনে আমি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।