নুরুল আমিন ভূইয়া দুলাল, নিজস্ব প্রতিবেদক: লক্ষ্মীপুরের রায়পুর-রামগঞ্জ-চাটখিলের আঞ্চলিক মহাসড়কে প্রতিনিয়ত কর্মচারী দিয়ে চেকিংয়ের নামে যানবাহন থেকে চাঁদা উত্তোলনের অভিযোগ উঠেছে খোদ রামগঞ্জ উপজেলা বন কর্মকর্তা মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে।
তথ্যসূত্রে জানা গেছে, তার নির্দেশে পদ্মা বাজার এলাকার সামনে কর্মচারী সাইফুল ইসলাম প্রতিদিন ২৩ থেকে ২৪ টি গাছ বহনকারী ট্রলি ও ট্রাক থেকে ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা করে চাঁদা আদায় করছেন । এ চাঁদা আদায় কে কেন্দ্র করে রায়পুর ও রামগঞ্জের করাতকল মালিক ও লাকড়ি ব্যবসায়ীদের মধ্যে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে।
এদিকে রামগঞ্জ উপজেলা রেঞ্জের আওতায় প্রায় ১৫ কিলোমিটার সড়কের পাশে সরকারি বনভূমি রয়েছে। তার আশেপাশে রয়েছে প্রায়৪০/ ৫০টি করাত কল ও ১২ জন লাকড়ি ব্যবসায়ী।
তথ্য অনুসন্ধানে জানা যায় লাইসেন্স না করায় গত তিন মাস ধরে হুমকি দিয়ে লাকড়ি ব্যবসায়ী মনির ও জসিমের কাছ থেকে ৩ হাজার টাকা ও ৮ হাজার টাকা আদায় করেন উক্ত বন কর্মকর্তা। গত প্রায় ২৫ দিন আগে কাটাখালি এলাকার একজন করাতকল মালিকের কাছ থেকে এই বন কর্মকর্তা আদায় করেন ২০ হাজার টাকা। দিঘিরপাড় এলাকার করাতকল মালিক সেলিমের কাছ থেকে আদায় করেন ১০ হাজার টাকা।
চাঁদা সংক্রান্ত বিষয়ে জানতে চাইলে এদিকে ট্রাকচালক আবদুর রহমান জানান, প্রতিদিন ব্যবসায়ীদের গাছ নিয়ে রায়পুর থেকে রামগঞ্জ শহর দিয়ে চাটখিল ও হাজিগঞ্জ যাওয়ার সময় পদ্মা বাজার এলাকায় বন বিভাগের এক কর্মচারীকে ৫০০ টাকা করে দিতে হয়। টাকা না দিলে মামলার ভয় দেখানো হয়।
বিষয়টি নিয়ে সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, সাইফুল ইসলাম নামের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী যানবাহন থামিয়ে টাকা নিচ্ছেন। টাকা নেওয়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি জানান, বন কর্মকর্তা মিজানুর রহমানের নির্দেশে গত তিন মাস ধরে সকাল থেকে বিকাল পাঁচটা পর্যন্ত সড়কের পাশে বসে থেকে ৫০ থেকে ৫০০ টাকা করে তুলছেন তিনি।
চাদা উত্তোলনের অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে মিজানুর রহমান বলেন, আমি কর্মচারী দিয়ে কোনো চাঁদাবাজি করছি না। গাছ ও পাচারকারীদের ধরতে সাইফুল ইসলামকে পাহারায় রাখা হয়। করাতকল মালিক ও লাকড়ি ব্যবসায়ীরা আমার নামে মিথ্যা বলছে। কয়েকদিন আগে অবৈধ করাতকলে অভিযান চালিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতে জরিমানা করায় তারা আমার ওপর ক্ষিপ্ত।
চাঁদা সংক্রান্ত বিষয়ে জানতে চাইলে লক্ষ্মীপুর জেলা বন কর্মকর্তা শাহিন আলম জানান, রামগঞ্জে পদ্দা বাজারের সামনে কোনো চেকপোস্ট রয়েছে কি না তার জানা নেই। খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
চাঁদা উত্তলনের অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে নোয়াখালী বিভাগীয় বন কর্মকর্তা আবু ইউসুফ জানান, রামগঞ্জ উপজেলা বন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগের সত্যতা পেলে অবশ্যই বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
দেশ যুগান্তর/আরজে