ঝিনাইদহের হরিণাকুন্ডু উপজেলাতে মাত্র এক সপ্তাহে’র ব্যবধানে সাতজন করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করায় জনমনে ভীতিকর শঙ্কা ঘিরে ধরেছে। প্রসঙ্গত সাতজনের ছয়জনই করোনা আক্রান্ত হওয়ার রেজাল্ট পজেটিভ জেনেও তারা হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা গ্রহণ না করে বাড়িতে ফিরে আসে। ফলে তারা নিজের মৃত্যু নিশ্চিত করার পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট মহল্লাবাসিকে একটি মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দিচ্ছে বলে এলাকাবাসি অভিমত ব্যক্ত করে।
হরিনাকুন্ডু উপজেলায় করোনা সনাক্তের পরও হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা না নিয়ে বাড়িতে অবস্থান করায় এক সপ্তাহ’র ব্যবধানে ৭জন মৃত্যুবরণ করেছে বলে জানা গেছে। বুধবার রাত নটায় উপজেলার ভায়না ইউনিয়নের রহিমপুর স্কুল পাড়ার মৃত আনসার আলী মন্ডলের পুত্র আব্দুস সাত্তার (৭২) করোনা আক্রান্ত হয়ে নিজ বাড়িতে মৃত্যুবরণ করে। মৃতের লাশের পাশে সারা রাত ধরে করোনা আক্রান্ত অসহায় স্ত্রী ছাড়া আর কেউ অবস্থান করেনি বলে অসুস্থ স্ত্রী জানায়। প্রতিবেশী কিংবা অন্য কেউ মৃতের বাড়িতে এসে সামান্যতম সহানুভূতি টুকুও প্রকাশ করেনি। প্রত্যুষে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের দাফন কমিটি মৃতের বাড়ি পৌঁছে মরদেহের গোসল, কাফন, কবর খনন, বাঁশ কাটা, জানাজা ও দাফনসহ যাবতীয় কাজের ব্যবস্থা করেন বলে উপজেলা ইমাম সমিতির সভাপতি মাওলানা মঈন উদ্দীন আহমেদ জানান। এসময় উপজেলা নির্বাহী অফিসার সৈয়দা নাফিস সুলতানা ও থানা অফিসার ইনচার্জ আব্দুর রহিম মোল্লা আব্দুস সাত্তারের মরদেহের দাফনের প্রয়োজনীয় সহযোগিতা প্রদান করেন।
এদিকে রঘুনাথপুর ইউনিয়নের নারায়নপুর গ্রামের মৃত মনজুদ মিয়ার পুত্র হাজী মনিরুজ্জামান মিয়া (৯২) করোনা আক্রান্ত হয়ে দুপুর দুইটায় নিজ বাড়িতে মৃত্যুবরন করেন। সন্ধ্যা ৬টায় উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশ বিভাগের সার্বিক সহযোগিতার ইসলামিক ফাউন্ডশন উপজেলা দাফন কমিটি জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে মরদেহে দাফন সম্পন্ন করে।
এদিকে রাত দশটার দিকে ফলসী ইউনিয়নের কুলবাড়িয়া গ্রামের শুকুর আলী মালিতার পুত্র আনোয়ার মালিতা (৬৫) করোনা আক্রান্ত হয়ে নিজ বাড়িতে মৃত্যবরণ করেছে। উপজেলা ইসলামিক ফাউন্ডশন রাতেই মরেদহ দাফন করেছে ।
এ ব্যাপারে উপজেলাতে কোভিড নিয়ন্ত্রণে করোনা আক্রান্ত ব্যক্তির বাধ্যতা মূলক চিকিৎসা সেবা গ্রহণ নিশ্চিত করতে উপজেলা প্রশাসন, পুলিশ বিভাগসহ জনপ্রতিনিধিবৃন্দ কার্যকর ভূমিকা রাখা জরুরী বলে সচেতন নাগরিক মহল প্রত্যাশা ব্যক্ত করছে।
দেশ যুগান্তর/আরজে