ছাতকের দড়ারপাড় গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া নোয়া নদীর উপর গ্রামবাসীর দেয়া বাঁধ ভেঙ্গে দিয়ে নদীর পানি গতিপথ স্বাভাবিক করে দেয়া হয়েছে। গ্রামবাসীর এক আবেদনের প্রেক্ষিতে গতকাল সোমবার দুপুরে গ্রামের লোকজনের সহায়তায় বাঁধ কেটে পানি চলাচল স্বাভাবিক করে দেন সহকারী কমিশনার (ভুমি) ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট ইসলাম উদ্দিন। দীর্ঘদিন আগে দু’পারের সহজ যাতায়াতের সুবিধার জন্য দড়ারপাড় গ্রাম সংলগ্ন নোয়া নদীর উপর বাঁধ নির্মাণ করে গ্রামের লোকজন। বাঁধ নির্মাণের ফলে ফসলী জমিতে পানি সেচ সহ বিভিন্ন সমস্যা সৃষ্টি হয় এখানে। প্রশাসনের উদ্যোগে বাঁধ কেটে নদীর গতিপথ স্বাভাবিক করায় স্বস্তি ফিরে আসে গ্রামের সাধারন মানুষের মাঝে।
স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, উপজেলার দক্ষিণ খুরমা ইউনিয়নের দড়ারপাড় গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে গেছে নোয়া নদী। প্রায় ৮কিমি দীর্ঘ ও প্রায় দেড় শ’ ফুট প্রশস্থ এ ছোট নদীকে ঘিরে দড়ারপাড় সহ আশপাশের বেশ কয়েকটি গ্রামের মানুষের সুখ-দুঃখ জড়িয়ে আছে। যুগ-যুগ ধরে এখানের চাষাবাদ ও মৎস্য আহরনে নদীর পানি ব্যবহৃত হয়ে আসছে। কালের প্রভাবে কতিপয় প্রভাবশালী নদী দখলের কারনে এর নাব্যতা ও প্রশস্থতা কমতে-কমতে প্রায় খালে পরিনত হয়েছে এ নদী। শুষ্ক মৌসুমে পানি শুকিয়ে নদীটি মৃত প্রায় হয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে নদীর প্রশস্থতা কমে গেলে গ্রামের মানুষ দু’পাড়ে সহজ যাতায়াতের জন্য নদীর এপাড়-ওপাড় বরাবর মাটি ভরাট করে বাঁধ নির্মাণ করে নদীর স্বাভাবিক গতিপথ বন্ধ করে দেয়। এর ফলে বাঁধের এক দিকে সৃষ্টি হয় জলাবদ্ধতা এবং ওপর দিকে সৃষ্টি হয় পানি শুন্যতা। বাঁধ নির্মাণের ফলে গ্রামের মানুষ দীর্ঘদিন ধরে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছিল।
সম্প্রতি বাঁধ কেটে নদীর পানির স্বাভাবিক গতিপথ সৃষ্টির জন্য গ্রামবাসী সহকারী কমিশনার(ভুমি) বরাবরে একটি লিখিত আবেদন করলে বিষয়টি প্রশাসনের নজরে আসে। আবেদনের প্রেক্ষিতে সোমবার প্রশাসনের লোকজন ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে নোয়া নদীর এ বাঁধ কেটে নদীর পানির গতিপথ স্বাভাবিক করে দিলে গ্রামবাসীর মধ্যে স্বস্তি ফিরে আসে। বাঁধ কাটতে গ্রামবাসী সার্বিক সহযোগিতা করে প্রশাসনকে। এসময় দু’পাড়ে সহজ যাতায়াতের জন্য বাঁধে অংশে নদীর উপর একটি কালভার্ট নির্মাণের দাবীও জানায় গ্রামবাসী। সহকারী কমিশনার(ভুমি) ইসলাম উদ্দিনের সাথে সার্ভেয়ার এডিএম রুহুল আমিন, পীরপুর ইউনিয়ন ভুমি সহকারী কর্মকর্তা কাজী রফিকুজ্জামান, উচ্চমান সহকারী সত্যন্দ্র লাল রায় সহ থানা পুলিশ উপস্থিত ছিলেন।
সহকারী কমিশনার(ভুমি) ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট ইসলাম উদ্দিন এ ব্যাপারে জানান, বাঁধ দিয়ে নদীর গতিপথ রোধ করা আইনত দন্ডনীয় অপরাধ। বিষয়টি বুজতে পেরে কোন ধরনের আপত্তি না করে বাঁধ কাটতে গ্রামবাসী সর্বাত্মক সহযোগিতা করেছে।