বাকি না দেয়ায় এক মনোহারী ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিয়েছে বলে এক ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছেন স্থানীয় শাহীন মিয়া নামে এক ব্যবসায়ী।জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলার ডোয়াইল ইউনিয়নের হাটবাড়ী গ্রামের শাহিন মিয়ার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখেছেন গত ৬ দিন ধরে ২নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মাদক সেবী ও এলাকার ত্রাস রুবেল মিয়া। তার ভয়ে এলাকায় কেউ মুখ খোলার সাহস পাচ্ছে না। এ ঘটনায় স্থানীয় এলাকাবাসীর মাঝে তীব্র ক্ষোভ বিরাজ করছে।
মামলার এজাহার ও ভুক্তভোগী পরিবার সূত্রে জানা গেছে,সরিষাবাড়ী উপজেলার ডোয়াইল ইউনিয়নের হাটবাড়ি মধ্যপাড়া গ্রামের শাহিন মিয়ার মনোহারী দোকান থেকে স্থানীয় ইউপি সদস্য রুবেল মিয়া ১৩ হাজার টাকার বিভিন্ন মনোহারী পণ্য বাকী নেন। ব্যবসায়ী শাহীন তার পাওনাকৃত টাকা দফায় দফায় ইউপি সদস্য রুবেল মিয়ার কাছে চাইলে দেই দিচ্ছি বলে কালক্ষেপণ করেন। এ বিষয় নিয়ে স্থানীয় মাতাব্বরদের নিয়ে বৈঠকে টাকা পরিশোধের আশ্বাস দিলেও টাকা পরিশোধ করেনি।এরপরেও শাহীন মিয়ার দোকানে আবারও বাকিতে পণ্য নেয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করে। দোকানদার শাহীন মিয়া বাকিতে পণ্য দিতে অস্বীকার করলে ডোয়াইল ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ও ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক রুবেল মিয়া দোকান বন্ধ করে দেয়ার হুমকি প্রদান করে চলে যায়। পরে তার লোকজন নিয়ে দোকানে হামলা ও বসত ঘর ভাংচুর এবং লুটপাট করে। ভাংচুর করতে বাধা দিলে শাহীন (৪০),ও তার স্ত্রী রেণু (২৮),দেলোয়ার(৩৫),করুনা(২৯),বৈশাখী (২৬)ও সিজারিয়ান নারী সুবর্ণা(২৮) এবং মজিবর রহমান(৭০)কে মাইরপিট করে। গুরুতর আহত বৈশাখীকে সরিষাবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে এবং সুবর্ণা বেগম কে প্রথমে সরিষাবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয় । তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। সুর্বণা বেগম বর্তমানে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যৃর সাথে পাঞ্জা লড়ছে বলে জানা গেছে।
ব্যবসায়ী শাহিন ও তার পারিবারের লোকজন রুবেল মিয়ার তান্ডবে গত ৬ দিন ধরে দোকান বন্ধ রেখে নিরাপত্তাহীনতায় ও আতঙ্কে দিনাতিপাত করছেন।একই ঘটনার জের ধরে গত বৃহস্পতিবার (১২ আগস্ট) রাতে রুবেল মিয়া ও তার লোকজন নিয়ে শাহিন মিয়ার বাড়িতে হামলা চালায়।এ সময় শাহিন মিয়ার ছোট ভাইয়ের স্ত্রী করুনা বেগম (২০) পাশের বাড়ির জহুরুল ইসলামের ঘরের মাচার নিচে পলায়ন করলে রুবেল মেম্বারের ছোট ভাই উজ্জল মিয়া ঘর থেকে টেনে হেচড়ে বের করে শ্লীলতাহানি করার সময় চিৎকার দিলে স্থানীয়রা এগিয়ে এলে উজ্জল দৌড়ে পালিয়ে যায়।এ ঘটনায় গত শনিবার (১৪ আগস্ট) ভুক্তভোগী করুনা বেগম বাদি হয়ে ইউপি সদস্য ও ইউনিয়ন আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক রুবেল মিয়ার ছোট ভাই উজ্জল ও জহুরুল ইসলামকে আসামি করে সরিষাবাড়ী থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে। এ ছাড়াও মনোহারী ব্যবসায়ী হাটবাড়ী গ্রামের মৃত জামাল উদ্দিন এর ছেলে শাহীন মিয়া বাদী হয়ে একই গ্রামের মৃত হানিফ উদ্দিন এর ছেলে রুবেল মিয়া সহ ৬ জন কে বিবাদী করে গত ১২ আগস্ট আদালতে মামলা দায়ের করলে আদালতের বিচারক মামলাটি এফ আই আর করার জন্য নিদের্শ প্রদান করে।
এ ব্যাপারে দোকানদার শাহিন মিয়া বলেন, বাকী টাকা পাওনা সত্ত্বেও আবারো বাকীতে পণ্য না দেয়ায় ইউপি সদস্য রুবেল মিয়া ও তার লোকজন আমার দোকান বন্ধ করে দিয়েছে ও বাড়ীতে হামলা করে ভাংচুর ও লুঠপাট সহ মাইরপিট করেছে। আমি এর বিচার চাই।
এ ব্যাপারে ডোয়াইল ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি সদস্য রুবেল মিয়া’র কাছে জানতে চাইলে তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ মিথ্যা বলে দাবী করেন।
ডোয়াইল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন বলেন, রুবেল মেম্বার দোকান বন্ধ করে দিয়েছে আমাকে কেউ বলেননি।শিগগিরই দোকান খুলে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মাসুদ রানা বলেন,আসামি গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
সরিষাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর রকিবুল হক বলেন,ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে থানায় মামলা হয়েছে। আসামি গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত আছে।