গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার মৌচাক এলাকায় সাদমা গ্রুপের শাখা মৌচাক নীট কম্পোজিট লিমিটেড কারখানায় দ্বিতীয় ডোজ টিকা দেওয়ার পাঁচ মিনিট পর কারখানায় দেড় শতাধিক শ্রমিক অসুস্থ হয়ে পড়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে শ্রমিকরা কারখানায় ঢুকার পর করোনা ভ্যাকসিন দেওয়া শুরু করে কারখানার কতৃপক্ষ। টিকা গ্রহণের পর পরই প্রায় দেড় শতাধিক শ্রমিক অসুস্থ্য হয়ে পড়েছে।
শ্রমিক ও কারখানার কতৃপক্ষ সূত্রে জানা যায়, গত জুলাই মাসের ১৭-১৮ তারিখ দুই ধাপে গাজীপুরের ৯টি কারখানায় শ্রমিকদের মাঝে করোনার ভাইরাসের টিকা প্রদান করা হয়। ৯টি কারখানার মধ্যে সাদমা গ্রুপের একটি প্রতিষ্ঠান নীট কম্পোজিট কারখানায় প্রথম বারের মতো ১৮’শত ১০ জন শ্রমিকের মাঝে প্রথম ডোজ প্রদান করা হয়। প্রথম ডোজ টিকা গ্রহণ করার পর কোন শ্রমিক অসুস্থ্য হয়নি। পরে চলতি মাসের ২৬ তারিখ সকাল থেকে পূনরায় দ্বিতীয় ডোজ প্রদান করার কার্যক্রম শুরু করে। স্বাস্থবিধি মেনে পর্যায়ক্রমে শ্রমিকদের মাঝে টিকা দেওয়া শুরু হয়। চীন থেকে আমদানীকৃত ভেরোসিল সিনোফার্মা টিকা গ্রহণের পাঁচ মিনিট পর শ্রমিকরা কারখানার ভেতরে অসুস্থ হয়ে পড়ে। অসুস্থ্যতার খবর শুনে পরিবারের লোকজন কারখানায় ছুঁটে আসে। কারখানার মূল ফটকে আসলে সিকিউরিটি গার্ড কারখানায় ঢুকতে না দিয়ে তাদের সাথে র্দুব্যবহার করে। এরই মধ্যে কারখানার ভেতর ও বাহিরের বিভিন্ন স্থানে শ্রমিকরা অসুস্থ হয়ে পড়ে থাকে। টিকা গ্রহণের পর শ্রমিকদের এমন অবস্থা দেখে কারখানার কতৃপক্ষ গাজীপুর সিভিল সার্জনকে অবহিত করে। খবর শুনে গাজীপুর সিভিল সার্জনের পক্ষ থেকে মেডিকেল অফিসারকে ওই কারখানায় পাঠানো হয়। ইতিমধ্যে অসুস্থ্য হয়ে পড়া প্রায় ৫৪ জন শ্রমিক স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছে। বাকি শ্রমিকদের চিকিৎসা দিয়ে বাড়ি পাঠানো হয়েছে। টিকাদান কর্মসূচি দুই ঘন্টা বন্ধ থাকলেও বিকেলে আবার টিকা কার্যক্রম শুরু করা হয়।
শ্রমিকরা জানায়, প্রথমবার আমরা যে টিকা নিয়েছি আজ সেই টিকাই বলে দেয়া হয়েছে। আগের বার কোন রকম লাগেনি। দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার পাঁচ মিনিটি পর বমি আর শরীর অবস ও মাথা জিম জিম করছে।
সাদমা গ্রুমের পরিচালক সোহেল রানা জানান, প্রথম ডোজে কোন সমস্যা হয়নি । দ্বিতীয় ডোজ গ্রহণ করার সময় কিছু শ্রমিক অসুস্থ্য হয়ে পড়েছে । তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে।
গাজীপুর সিভিল সার্জন অফিসের মেডিকেল অফিসার ডা. এফ এম আহসান উল্লাহ জানান, শ্রমিকদের ভয়ের কোন কারণ নেই এটা মূলত সাইকোজেনিক ইলনেস এর কারণে এ ধরণের সমস্যা হয়েছে । প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাদের বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়া হয়।