জয়পুরহাট জেলার পাঁচবিবি উপজেলার বালিয়াঘাটা ইউনিয়নের ফিচকাঘাট বাজারের পশ্চিম পার্শ্বে বেবখন্ডা এলাকায় কুশুম্বা ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান মোঃ জিহাদ হোসেন মন্ডলের চাতালে পুরাতন ব্যাটারী আগুনে জ্বালিয়ে সিসা তৈরীর কারখানা চলছে।
সিসা তৈরীর কারখানার দূষিত ধোঁয়ায় আশেপাশের গ্রামের মানুষের জীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে।
ধ্বংসের মুখে প্রাকৃতিক পরিবেশ জীব ও বৈচিত্র।
কারখানাটির মূল মালিক গাইবান্ধা জেলার সাঘাটা উপজেলার চাকুলি গ্রামের নাদু মীরের ছেলে মোঃ রুবেল হোসেন ও একই গ্রামের মোঃ সাজাহান আলী মীর।
এই অবৈধ কারখানার ব্যাপারে কুসুম্বা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ জিহাদ মন্ডল এর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করে ইউনিয়ন পরিষদ কর্তৃক কারখানাটির ট্রেড লাইসেন্স আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি গণমাধ্যম কর্মীদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন।
গত (৯ সেপ্টেম্বর) শনিবার এই অবৈধ কারখানার মালিক রুবেল হোসেন মীর ও সাজাহান মীর এর নিকট গণমাধ্যম কর্মীরা প্রশ্ন করলে আপনাদের কারখানার পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র অথবা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কর্তৃক কোন ট্রেড লাইসেন্স আছে কিনা।
তারা উত্তরে বলেন আমাদের কোন কাগজপত্র নেই কারখানার মাসিক কন্ট্রাক্ট দেড় লক্ষ টাকা যা দিয়ে অনেককেই ম্যানেজ করে কারখানা চালানো হয়।
আপনারা নিউজ করলে করেন সমস্যা নাই আমরা সবাইকে ম্যানেজ করেই চলি,নিউজ করলে পরিবেশ অধিদপ্তরের লোক, ইউএনও, এসিল্যান্ড এনারাইতো আসবে দেখা যাবে নিউজ করে কি করতে পারেন।
কারখানা শ্রমিকদের কাছে প্রশ্ন করলে ব্যাটারির প্লেটে আগুন জ্বালিয়ে সিসা তৈরি করার সময় যে দূষিত ধোঁয়া ৪০/৫০ ফুট উপরে ওঠে ও এসিডের প্রচুর ঝাঁজালো গন্ধ বের হয় এতে আপনাদের কোন সমস্যা হয়কিনা।
প্রশ্নের জবাবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কারখানার একজন শ্রমিক বলেন এটা তেমন কোন ক্ষতি হয় না ,একটু হালকা-পাতলা গন্ধ হয় কিন্তু আমরা বাতাসের উল্টোদিকে থাকি।
এ ব্যাপারে বেবখন্ড,মহীপুর,বেতগাড়ি,বীরনগর গ্রামেরনাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ১৫/২০ জন লোক অভিযোগ করে বলেন।
প্রতিদিন রাত্রি ০৯:০০ ঘটিকা হইতে ভোর ০৪:০০ঘটিকা পর্যন্ত যখন ব্যাটারির প্লেট চুল্লিতে কয়লার আগুনে জ্বালিয়ে সিসা তৈরি করে।
তখন আশেপাশের দুই তিন কিলোমিটার এলাকা জুড়ে দূষিত কালো ধোঁয়া ও এসিডের গন্ধে বাড়ির ভিতরে থাকা কষ্টসাধ্য হয়ে যায় নাক চোখ মুখ জ্বালা করে।
এলাকার বৃদ্ধ ও শিশুরা প্রতিনিয়ত আক্রান্ত হচ্ছে বিভিন্ন রোগে।
এই কারখানার এসিডের পানি ও দুষিত ধোঁয়ায় নষ্ট হয়ে যাচ্ছে মাঠের ধান।
আমাদের এলাকায় এই প্রথম পুরাতন ব্যাটারি আগুনে জ্বালিয়ে সিসা তৈরীর চালু করেছে, পত্র-পত্রিকায় আমরা দেখেছি যে এলাকাগুলোতে পুরাতন ব্যাটারির কারখানা হয় আশেপাশের গ্রামের মানুষের গরু মারা যায় ।
তাই গবাদি পশু মৃত্যুর ভয়ে আমরা মাঠের ঘাস কেটে গরুকে খাওয়াতে পারছি না।
কিন্তু এদের বিরুদ্ধে কেউ কখনো কোনো ব্যবস্থা নেয় না যারা আসে টাকা খেয়ে মনের সুখে গান গাইতে গাইতে চলে যায় ,আমরা এদের কাছে অসহায় কখনো জোর করে কাউকে কিছু বলতে পারি না প্রাণভয়ে কারণ এদের অনেক মাস্তান ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী আছে।
এসময় এলাকাবাসী অতি দ্রুত পুরাতন ব্যাটারি আগুনে জ্বালিয়ে সিসা তৈরির কারখানাটি ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে উচ্ছেদ করার জন্য জয়পুরহাট জেলা প্রশাসক,জয়পুরহাট জেলা পুলিশ সুপার ,পাঁচবিবি উপজেলা প্রশাসন,পাঁচবিবি থানা পুলিশ,রাজশাহী বিভাগীয় পরিবেশ অধিদপ্তর ও জয়পুরহাট জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরের সুদৃষ্টি কামনা করেন।
জয়পুরহাট জেলা প্রশাসক সালেহীন তানভীর গাজী কে সিসা তৈরীর কারখানার বিষয়ে মুঠোফোনে জানালে তিনি বলেন অতি দ্রুত অবৈধ কারখানাটি ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে উচ্ছেদ করা হবে।
এই অবৈধ কারখানাটির ব্যাপারে পাঁচবিবি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আরিফা সুলতানা এর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন , অবৈধ কারখানাটির বিষয়ে আমার জানা ছিলনা,আপনাদের মাধ্যমে জানলাম তদন্ত সাপেক্ষে অতি দ্রুত এই অবৈধ কারখানাটি ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে গুঁড়িয়ে দেওয়া হবে।
এ ব্যাপারে পাঁচবিবি উপজেলার সহকারী কমিশনার ভূমি মারুফ আফজাল রাজন এর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন আপনাদের মাধ্যমে এই প্রথম অবৈধ কারখানা বিষয়ে জানলাম অতি দ্রুত অবৈধ কারখানাটি বন্ধ করে দেওয়া হবে।
পরিবেশ অধিদপ্তর জয়পুরহাট জেলার সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ ফারুক হোসেন কে এই পুরাতন ব্যাটারি আগুনে জ্বালিয়ে সিসা তৈরির কারখানার বিষয়ে মুঠোফোনে জানালে তিনি বলেন।
পরিবেশ দূষণকারী যেকোনো কারখানার বিরুদ্ধে আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করি, অতি দ্রুত ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে এই অবৈধ সিসা তৈরীর কারখানাটি উচ্ছেদ করা হবে#
মাহিদুল হাসান (জয়পুরহাট)