করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউয়ের সংক্রমণ ঠেকাতে প্রায় দেড় মাস পর অভ্যন্তরীণ ও দূরপাল্লার যাত্রীবাহী লঞ্চ চালু হওয়ার খবরে বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলে নৌশ্রমিক ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের মধ্যে স্বস্তি ফিরেছে। কাল সোমবার থেকে সব নৌবন্দর ও লঞ্চঘাট থেকে ঢাকার সঙ্গে ও অভ্যন্তরীণ পথে নৌযান চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
নৌপথে স্বাস্থ্যবিধি মেনে লঞ্চ চলাচলের ঘোষণা দেওয়ার পর আজ রোববার থেকেই নৌবন্দরে অবস্থানরত নৌযানগুলো ধোয়ামোছার কাজ শুরু করে দিয়েছেন শ্রমিকেরা। লঞ্চ চলাচলের ঘোষণা আসার খবরে ছুটিতে থাকা নৌশ্রমিকদেরও দ্রুত কর্মস্থলে আসার জন্য বলা হয়েছে। বরিশালের সচেতন নাগরিকেরা বলছেন, লঞ্চ ও গণপরিবহন চলাচলে সরকারি নিষেধাজ্ঞা তুলে দেওয়ায় আপাতত এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের মধ্যে স্বস্তি ফিরেছে ঠিকই। তবে এতে করোনা সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কাও রয়েছে।
বরিশাল সচেতন নাগরিক কমিটির (সনাক) সভাপতি অধ্যাপক শাহ সাজেদা বলেন, লঞ্চ চালুর খবর নিঃসন্দেহে স্বস্তির। তবে মালিক-শ্রমিক এবং বিআইডব্লিউটিএ সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে মেনে চলতে হবে।
আজ রোববার দুপুরে বেশ কয়েকজন নৌশ্রমিক জানালেন, লঞ্চ বন্ধ থাকায় গত ৪৬ দিন তাঁদের পরিবার-পরিজন নিয়ে মানবেতর দিন কাটাতে হয়েছে। ঈদের সময় বউ-বাচ্চাদের সঙ্গে ভালো করে ঈদ উদযাপন করতে পারেননি তাঁরা।
বরিশাল বিভাগীয় নৌযান শ্রমিক ফেডারেশন বরিশালের সভাপতি আবুল হাসেম বলেন, সরকার তাঁদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে লঞ্চ চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এতে দেড় মাস ধরে দুর্দশায় থাকা লাখো শ্রমিক অন্তত খেয়ে–পরে বাঁচতে পারবেন।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) বরিশালের উপপরিচালক ও নদীবন্দর কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, কাল থেকে যাত্রীবাহী নৌযান চালুর সরকারি সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে অবশ্যই সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী, পুরোপুরি স্বাস্থ্যবিধি মেনে লঞ্চগুলোকে যাত্রী পরিবহন করতে হবে। এটা নিশ্চিত করার জন্য বিআইডব্লিউটিএ সার্বক্ষণিক নজরদারি করবে।
করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে গত ৫ এপ্রিল থেকে সরকার সারা দেশে যাত্রীবাহী লঞ্চ চলাচল বন্ধ ঘোষণা করে। ৬ এপ্রিল থেকে সারা দেশে যাত্রীবাহী লঞ্চ চলাচল বন্ধ ছিল।