রিপন কান্তি গুণ, নেত্রকোনা জেলা প্রতিনিধি: নেত্রকোনার বারহাট্টায় মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত দিনমজুর রহমত আলী বিচার চেয়ে ঘটনা এক বছর পরও বিচার পাননি। অবশেষ ঘটনার দেড় বছর পর মোটরসাইকেলের চালকের বিরুদ্ধে বারহাট্টা থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন ভূক্তভোগী দিনমজুর।
ন্যায় বিচারের আশায় বৃহস্পতিবার থানায় এসে ভুক্তভোগী লিখিত অভিযোগে পূর্বপরিকল্পিত দুর্ঘটনার বর্ণনা দেন। ভুক্তভোগীর বিস্তারিত দুর্ঘটনার বিবরণ শুনে অভিযোগটি তদন্তসাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান, বারহাট্টা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো: রফিকুল ইসলাম।
অভিযোগে বারহাট্টা উপজেলার সদর ইউনিয়নের অতিথপুর গ্রামের সাইদুর রহমান ছেলে আলমগীর ( ২৫) এর নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
ভুক্তভোগী রহমত আলী জানান, গত বছর (২ এপ্রিল) ২০২২ সালের সন্ধ্যা ৭ টার দিকে অতিথপুর গ্রামের সাইদুর রহমানের ছেলে আলমগীর (মোটরসাইকেল চালক) পূর্ব শুক্রতার জেরে হত্যার উদ্দেশ্যে পরিকল্পিত ভাবে বিরামপুর বাজার থেকে কাজকর্ম শেষে বাড়ি ফেরার পথে গ্রামের মসজিদের পাকা রাস্তার সামনে বেপরোয়া গতিতে ধাক্কা দিয়ে আমাকে গুরুতর আহত করে। প্রথমে সরকারি ও পরবর্তীতে বিভিন্ন প্রাইভেট হাসপাতালে দীর্ঘদিন চিকিৎসা নেন তিনি। চিকিৎসা শেষে বাড়িতে ফেরার পর ভুক্তভোগী পরিবার বিচার ও চিকিৎসার জন্যে গ্রামবাসীর কাছে উক্ত ঘটনা জানায়। এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে সালিশ করে মিমাংসার আশ্বাস দিলেও অভিযুক্ত আলমগীরের পরিবারের পক্ষ থেকে কোন সাড়া মেলেনি।
ভূক্তভোগী আরও জানান, মোটরসাইকেলের ধাক্কায় আহত হওয়ার পর সঠিক চিকিৎসা না হওয়ায় তার ভাঙ্গা পা হারানোর শঙ্কা দেখা দিয়েছে। এখন তিনি বিছানায় শুয়ে দিন কাটছেন। পায়ের চিকিৎসার জন্য দেড় বছরে প্রায় তিন লক্ষ টাকা খরচ করে বর্তমানে বাড়িটা ছাড়া এখন তার নিজের বলতে আর কিছুই নেই। দুই ছেলের মধ্যে আশিক পিতার চিকিৎসার খরচ যোগাড় করতে গিয়ে এ বছর এসএসসি পরীক্ষা দিতে পারেনি। বর্তমানে চট্টগ্রামে ৬ মাস ধরে সে দিনমজুর কাজ করছে। আর ছোট ছেলে সাকিব (১৫) অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করে টাকার অভাবে করতে পারেনি। সেও এলাকাতে ভ্যানগাড়িতে শ্রমিক হিসেবে কাজ করছে। এভাবে কোন মতো তাদের সংসার চলছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ইসলামপুর গ্রামের ইসলামপুর জামে মসজিদের মেইন রোডে পাকা রাস্তার মধ্যে দুর্ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর আশেপাশে লোকজন রক্তমাখা শরীর নিয়ে বারহাট্টা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভর্তি করেন। পরে রোগীর অবস্থার অবনতি দেখে কর্তব্যরত চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য জরুরি ভিত্তিতে ময়মনসিংহ মেডিকেল হাসপাতালে পাঠান।
মোটর বাইক চালক আলমগীর কাছে জানতে চাইলে সে জানায়, তার ডাইভিং লাইসেন্স ও মোটরসাইকেল কোনো কাগজপত্র নেই।