ঢাকা জেলার সাভারের আশুলিয়ায় চলন্ত বাসে এক তরুণীকে (২২) দল বেঁধে ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় আজ শনিবার সকালে ভুক্তভোগী তরুণী থানায় মামলা করেছেন। এ ঘটনায় ছয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে চালক সুমন ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। বাকী ৫ জনের প্রত্যেকের ৩দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়েছে।
শনিবার (২৯ মে) বিকেলে ঢাকার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোসা. শাহাজাদী তাহমিদার আদালতে (আদালত নং-২) রিমান্ড শুনানি শেষে আসামি ৫ জনকে ৩ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়। এরআগে দুপুরে প্রত্যেকের ৫ দিনের রিমান্ড আবেদন করে পুলিশ ভ্যানে করে ৬ আসামীকে আদালতে পাঠায় পুলিশ।
বিকেলে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন ঢাকা জেলা কোর্ট পরিদর্শক মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, আশুলিয়া থেকে গণধর্ষণের মামলায় গ্রেফতার ৬ আসামিকে ৫ দিনের রিমান্ড আবেদন করে আদালতে পাঠায় পুলিশ। এদের মধ্যে আসামী চালক সুমন ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। শুনানি শেষে অপর ৫ আসামির প্রত্যেককে ৩ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত।
গ্রেফতার আসামিরা হলো-ঢাকার তুরাগ থানার গুলবাগ ইন্দ্রপুর ভাসমান গ্রামের নজরুল ইসলামের ছেলে আরিয়ান (১৮), কুষ্টিয়া জেলার দৌলতপুর থানার তারাগুনা এলাকার মৃত আতিয়ারের ছেলে সাজু (২০), বগুড়া জেলার ধুনট থানার খাটিয়ামারি এলাকার সুলতান মিয়ার ছেলে সুমন (২৪), নারায়ণগঞ্জ জেলার বন্দর থানার ধামঘর এলাকার জহুর উদ্দিনের ছেলে মনোয়ার (২৪), বগুড়া জেলার ধুনট থানার খাটিয়ামারি এলাকার তোফাজ্জল হোসেনের ছেলে সোহাগ (২৫) ও বগুড়া জেলার ধুপচাচিয়া থানার জিয়ানগর গ্রামের সামছুলের ছেলে সাইফুল ইসলাম (৪০)। তারা সবাই তুরাগ থানার কামারপারা ভাসমান এলাকায় ভাড়া থেকে আব্দুল্লাহপুর-বাইপাইল-নবীনগর মহাসড়কে মিনিবাস চালাতো।
ভুক্তভোগী নারী নারায়ণগঞ্জে স্বামী ও সন্তান নিয়ে থাকেন। তিনি সেখানে একটি পোশাক কারখানার শ্রমিক। তাঁর স্বামীর বাড়ি লালমনিরহাটে। এ ঘটনায় শনিবার সকালে ভুক্তভোগী তরুণী বাদী হয়ে ওই ছয়জনকে আসামি করে আশুলিয়া থানায় মামলা করেছেন।
আশুলিয়া থানা-পুলিশ ও মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, ভুক্তভোগী নারীর বোন মানিকগঞ্জে থাকেন। গতকাল শুক্রবার তিনি বোনের বাসায় যান। সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে মানিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড থেকে নারায়ণগঞ্জে নিজের বাসায় ফেরার জন্য তিনি বাসে ওঠেন। রাত আটটার দিকে সাভারের নবীনগর বাসস্ট্যান্ডে তাঁকে নামিয়ে দেওয়া হয়। এ সময় বাসের জন্য তিনি অপেক্ষা করতে থাকেন। রাত নয়টার দিকে নিউ গ্রামবাংলা পরিবহনের একটি মিনিবাসের চালকের সহকারী মনোয়ার ও সুপারভাইজার সাইফুল ইসলাম এসে টঙ্গী স্টেশন রোডের কথা বলে তাঁর কাছে ৩৫ টাকা ভাড়া চান। তিনি মিনিবাসে উঠলে গন্তব্যে যাওয়ার আগেই সব যাত্রীকে নামিয়ে দেওয়া হয়। চালক বাসটি নিয়ে আবার নবীনগরের দিকে রওনা হন। এ সময় বাসের জানালা ও দরজা আটকে বাসের চালক, সহকারীসহ ছয়জন ওই নারীকে ধর্ষণ করেন। টহল পুলিশ বাসটি থামিয়ে ভুক্তভোগীকে উদ্ধার করে। এ সময় ওই ছয়জনকে আটক করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।
প্রসঙ্গত, গত (২৮ মে) মধ্য রাতে আশুলিয়ায় চলন্ত বাসে গণধর্ষণের শিকার হয় এক তরুণী। এ ঘটনায় ৬ জনকে আটক করে ও নিউ গ্রাম বাংলা মিনিবাসটি জব্দ করা হয়। পরে ভুক্তভোগী বাদী হয়ে মামলা দায়ের করলে আসামিদের ওই মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে ৫ দিনের রিমান্ড আবেদন করে আদালতে পাঠানো হয়।
দেশ যুগান্তর/এইতআর