নুরুল আমিন ভূঁইয়া দুলাল, বিশেষ প্রতিনিধি: যোগাযোগ ব্যবস্থা, সড়কবাতি এবং ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়নসহ আধুনিক ও জনবান্ধব পৌরসভা গঠনে কাজ করে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন লক্ষ্মীপুর জেলার রায়পুর পৌরসভার মেয়র গিয়াস উদ্দিন রুবেল ভাট।
রায়পুর পৌরসভা ১৯৯৪ সালের ৪ জানুয়ারি ‘গ’ শ্রেণির পৌরসভা হিসেবে যাত্রা শুরু করে পরবর্তীতে ‘খ’ শ্রেণির পৌরসভায় উন্নীত হয়। বর্তমানে “ক’ শ্রেনীর এ পৌরসভায় এখনো শতভাগ নাগরিক সুবিধা নিশ্চিত হয়নি। রয়েছে যানজট, ড্রেনেজ ব্যবস্থা, সড়কবাতি, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও যোগাযোগ ব্যবস্থাসহ নানা সংকট।
৯.৫০ বর্গকিলোমিটার আয়তনের এ পৌরসভায় মোট জনসংখ্যা প্রায় ৩০৫৫৬ হাজার। মোট ভোটার ২১৬৫১ জন। পৌরসভায় লোকসংখ্যার আনুপাতিক হারে প্রায় ৪০ ভাগ মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করেন।
এ পৌরসভার আওতায় রয়েছে হাটবাজার ৩ টি, কলেজ ১টি, উচ্চ বিদ্যালয় ৩ টি, কামিল মাদ্রাসা ১ টি, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ১১ টি, সরকারি হাসপাতাল ১টি, মসজিদ ৮ টি, মন্দির ৩ টি ।
বর্তমান মেয়র গিয়াস উদ্দিন রুবেল ভাট জনগণের প্রত্যেক্ষ বিপুল ভোটে মেয়র নির্বাচিত হন।
তিনি দায়িত্ব হাতে নিয়ে দেখতে পান বিগত মেয়রের রেখে যাওয়া পৌরসভার কোটি কোটি টাকা দেনা রেখে যান। এসব দেনা পরিশোধ করতে ও কর্মচারীদের বেতন দিতে বর্তমান মেয়র গিয়াস উদ্দিন রুবেল ভাট অক্লান্ত পরিশ্রম করে সকল দেনা থেকে মুক্ত হন। অবশ্যই এই কাজে পৌরসভার সকল কর্মচারীবৃন্দ মেয়রকে সহযোগিতা করেন।
তিনি দায়িত্ব হাতে নিয়েই পৌর নগরবাসীর নাগরিক সকল সুযোগ সুবিধার দিকে মননিবেশন করেন। এবং তিনার অক্লান্ত পরিশ্রমে রায়পুর পৌরসভায় উন্নয়নের ছোঁয়া পরিলক্ষিত হয়।
তিনি চলমান ২০২৪ অর্থবছরে পৌরসভায় নগর উন্নয়নমূলক কাজের জন্য ৬ টি প্যাকেজে ৫ কুটি টাকা ব্যায়ে নগর উন্নয়নের জন্য কাজ করেন।
চলমান কাজে মেয়র আরো আই ইউ জিপি প্রকল্পে দুটি প্যাকেজ চলমান কাজ ২২ কুটি টাকার ২০% সম্পূর্ণ হয়েছে। বাকি কাজ চলমান অবস্থায় আছে।
একান্ত সাক্ষাৎকারে পৌর মেয়র গিয়াস উদ্দিন রুবেল ভাট বলেন, আমি রায়পুর পৌরসভার মেয়র পদে নির্বাচন করে বিপুল ভোটে জয়ী হয়েছি। নির্বাচিত হওয়ার পর পৌর এলাকায় সরকারের উন্নয়নমূলক কাজের প্রতি আন্তিরিক ছিলাম। পরবাসীর উন্নয়নের সকল প্রকল্পসমূহ নিজে সরে জমিনে তদন্ত করে কাজের গতি ত্বরান্বিত করেছি।
তাই সবার নাগরিক অধিকারের প্রতি সম্মান দিয়ে এখানে কাজ করতে হয়। তিনি বলেন, পৌরসভাকে পরিকল্পিত নগরে গড়ে তুলতে সম্মিলিতভাবে সবার সহযোগিতা একান্ত প্রয়োজন। আমি দায়িত্ব গ্রহণ করার পর আমার সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল সড়ক ও ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়ন। বর্তমানে দৈনিক হাজিরা ভিত্তিতে শ্রমিক দিয়ে পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ করানো হচ্ছে।
উন্নয়ন প্রশ্নে মেয়র আরো বলেন, আমি পৌরসভার দায়িত্বভার যখন গ্রহণ করি, তখন পৌরসভার ছিল বিধ্বস্ত অবস্থা, ছিল আর্থিক সংকটও। তবে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেশব্যাপী যে উন্নয়ন চলছে, রায়পুর পৌরসভায়ও সেই উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে মনে প্রাণে কাজ করে যাচ্ছি। সরকারের সার্বিক সহযোগিতায় রায়পুর পৌরসভা একটি মডেল ও জনবান্ধব উন্নয়নশীল পৌরসভায় রূপান্তরিত হচ্ছে। আগে পৌরসভার যে নাজুক অবস্থা ছিল গত কয়েক বছরে তার আমূল পরিবর্তন হয়েছে। দৃশ্যমান উন্নয়ন কর্মকাণ্ড আমার দায়িত্বকাল সময়ে সম্পাদিত হচ্ছে একের পর এক। চলমান উন্নয়নের মধ্যে বর্তমানেও আই ইউ জিপি প্রকল্পের ২২ কুটি টাকার মধ্যে ২০% সম্পন্ন হয়েছে বাকি কাজ চলমান অবস্থায় রয়েছে।
এছাড়াও নগর উন্নয়নের ৬ টি প্যাকেজে ৫ কুটি টাকার কাজ হয়েছে।
মেয়র রুবেল ভাট বলেন, আমি বাস্তবে এবং কর্মে বিশ্বাসী। অবস্থা ও সার্বিক বিবেচনায় যেটা বেশি গুরুত্বপূর্ণ সেটাকে আমি প্রাধান্য দিয়ে থাকি। যে কারণে কতিপয় লোকের ব্যাঘাত সৃষ্টি হওয়ায় তারা বিভিন্ন সময় আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচার করে আসছে। আমি শত বাধা-বিপত্তির মধ্যেও মানুষের ভালোবাসা নিয়ে আমি কাজ করে যাচ্ছি। কতিপয় সার্তান্বেষী মহল সাংবাদিকদের ভুল তথ্য দিয়ে আমার বিরুদ্ধে ইতিপূর্বে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও ইউটিউবে অপপ্রচার চালায় যাহা নিন্দনীয় ও অগ্রহণযোগ্য। জনস্বার্থে জনসেবায় আমি নিজেকে বিলীন করে দিয়েছি। আমার নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি আমি রক্ষা করব বলে দিনরাত নগর উন্নয়নে জনসেবায় নিজেকে সম্পৃক্ত করেছি।
মেয়র আরো বলেন, জনগণের মাঝে যাবতীয় পদক্ষেপ এবং সরকারি সামাজিক বেষ্টনীর আওতায় গৃহীত কর্মসূচি সফলতার সঙ্গে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। পৌর এলাকায় এমন কোনো ওয়ার্ড নেই, যেখানে ড্রেন ও আরসিসি ওয়াল ও রাস্তার কাজ করা হয়নি। প্রতিটি ওয়ার্ডে সমহারে উন্নয়ন কর্মকাণ্ড পরিচালিত হচ্ছে। ইতোমধ্যে ৮০ শতাংশ সমস্যা সমাধান করতে পেরেছি। অল্প কিছু কাজ আমার এখনো বাকি আছে।
এছাড়া জনকল্যাণমূলক কাজ যেমন- মসজিদ, মন্দির, গির্জাসহ সব ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে সম-উন্নয়নে সবসময় নিয়োজিত আছি। প্রতিটি ওয়ার্ডে মশক নিধন কার্যক্রম চালু রয়েছে। ওয়ার্ড কাউন্সিলরদের তত্ত্বাবধানে পৌরসভা এলাকার সব বিধবা, স্বামী পরিত্যক্ত ও বয়স্কদের শতভাগ সরকারি ভাতা প্রাপ্তি নিশ্চিত করেছি।
আগামীর উন্নয়ন পরিকল্পনা সম্পর্কে জানতে চাইলে পৌর মেয়র রুবেল ভাট বলেন, পৌরবাসী সুযোগ দিলে আগামীতে এই পৌরসভায় ব্যাপক উন্নয়ন সহ একটি শিশু পার্কউপহার দিব। যদিও শিশু পার্ক আপনার কাজ অনুমতি প্রায় সম্পন্ন করেছি, এখন বাকি শুধু কাজে হাত দেওয়া। নিরাপদ পানি সরবরাহের লক্ষ্যে পৌরবাসীর জন্য ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান স্থাপন চালু করেছি।
দেশ যুগান্তর/আরজে